ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

৬৩ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারাক্রান্ত ঢাকা

শরীফুল আলম সুমন
শরীফুল আলম সুমন
শেয়ার
৬৩ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারাক্রান্ত ঢাকা

রাজধানী ঢাকার আয়তন মাত্র এক হাজার ৪৬৩ বর্গকিলোমিটার। ছোট্ট আয়তনের এই শহরে ৬৩টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি আটটি এবং বেসরকারি ৫৫টি বিশ্ববিদ্যালয়। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, রাজধানীতে অবস্থিত শতাধিক সরকারি-বেসরকারি কলেজেও যত্রতত্র অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়েছে।

অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে আরো একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীতে অনেক বেশি স্কুল-কলেজ চোখে পড়ে। এখন এর সঙ্গে আরেকটি প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে, সেটি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়।

মূল সড়কের একটি মোড় ঘুরলেই কোনো না কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চোখে পড়বে। রাজধানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও ক্রমশ উচ্চশিক্ষার মান কমছে। ফলে দেশে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকা মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৭০।

এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ৫৫টি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ১১৫টি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অর্ধেকেরও বেশি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে। ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, এই দেড় দশকে মোট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ৮৭টি। এর মধ্যে ২৬টি পাবলিক ও ৬১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

জানা যায়, রাজধানীর বড় সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে তাদের অধিভুক্তি বাতিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আরেকটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। তবে এর মধ্যে আবার সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় চান। ফলে শিগগিরই রাজধানীতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা আরো বাড়ছে। 

সূত্র জানায়, ঢাকায় ৫৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও এর মধ্যে মানসম্পন্ন রয়েছে মাত্র ১০ থেকে ১৫টি। বাকিগুলো মানহীন গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছে। ফলে এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা চাকরির বাজারেও জায়গা করে নিতে পারছেন না। এর পরও প্রায় প্রতিবছরই রাজনৈতিক বিবেচনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। ইউজিসিতে এখনো শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আবেদন জমা রয়েছে। আবার নতুন নতুন আবেদনও জমা পড়ছে। ফলে রাজধানীতে নতুন আরো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চলে তাহলে অসুবিধা নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি মান বজায় রেখে না চলে তাহলে আমরা তদারকি করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। 

বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণবিষয়ক টাস্কফোর্স গত ২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন হস্তান্তর করে। প্রতিবেদনের শিক্ষাবিষয়ক সুপারিশে একীভূতকরণের মাধ্যমে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কমানোর কথা বলা হয়েছে। সীমিত শিক্ষা বাজেটের সঠিক ব্যবহার ও আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভালো অবস্থান নিশ্চিতে এ কৌশল নেওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন টাস্কফোর্সের সদস্যরা।

টাস্কফোর্সের সুপরিশের উদ্ধৃতি দিয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি একনেক সভা শেষে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সেখানে সরকারি খাতের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এটা সত্য। সরকারি খাতে দেশে ৫৫টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে গত সাত বছরে অর্ধেক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। এত দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির রেকর্ড বাংলাদেশ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে সাত-আট বছরে পরিকল্পনা এবং কয়েকটি কমিশন করা হয়েছিল।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশের অনুমোদন হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অন্তত ২০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো ভাড়া বাড়িতে চলছে। সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও খুব কম। এসবের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০০ থেকে এক হাজার। ফলে স্বাভাবিকভাবেই টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করা যেতে পারে। আর দেশের অর্ধেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থাই ভয়াবহ। তাদের শিক্ষার্থী নেই, ক্লাসরুম নেই, গবেষণাগার নেই, শিক্ষক নেই। একটি স্কুলে যে সুবিধা আছে সেটাও তাদের নেই। ফলে সহজেই কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করা যেতে পারে। তবে এ জন্য প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ন্যূনতম মানদণ্ড নির্ধারণ করা যেতে পারে। যারা তা পূরণ করতে পারবে না, তাদের ব্যাপারে একীভূতকরণের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

জানা যায়, গত ১৫ বছরে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বেড়েছে। এর সঙ্গে বেড়েছে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে ছয় বছরের ব্যবধানে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৩-এ উঠে আসা এ তথ্য অনুযায়ী, দেশে উচ্চশিক্ষিত অর্থাৎ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা ৯ লাখ ছয় হাজার। এর আগে ২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপে চার লাখ পাঁচ হাজার জন উচ্চশিক্ষিত বেকারের তথ্য উঠে এসেছিল। সে হিসাবে ছয় বছরের ব্যবধানে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় পাঁচ লাখ চার হাজার।

শিক্ষা কার্যক্রম শুরু না হওয়া আট সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ও ভিসি নিয়োগের বিষয়টি আপাতত স্থগিত রাখতে চিঠি দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। গত ১২ ডিসেম্বর ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো চিঠিতে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী কম, সেখানে আপাতত নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন, বিগত সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন জেলায় অনেক নতুন বিশ্ববিদ্যালয় (সাধারণ ও বিশেষায়িত) স্থাপন করা হয়েছিল। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভবিষ্যতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দাঁড়াতে পারবে কি না তা পরিষ্কার নয়। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি, সেগুলো নিয়ে পরবর্তী সময়ে যেকোনো পদক্ষেপ স্থগিত রাখাই বাঞ্ছনীয় বলে মনে করি। এ ছাড়া যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন, সেগুলোতেও নতুন শিক্ষক বা কর্মকর্তার পদ সৃষ্টি জরুরি প্রয়োজন না হলে এখন স্থগিত রাখাই ভালো। এসব বিষয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নীতিগতভাবে পরবর্তী সরকারের ওপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার রেখে যাওয়া সমীচীন মনে করে।

তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতিষ্ঠিত হয় উদ্যোক্তা বা ট্রাস্টিদের অর্থে। ফলে সেখানে যেহেতু সরকারের আর্থিক সংশ্লেষ নেই, তাই নতুন অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় মানহীন ও নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে পারছে না, তাদের ব্যাপারে সরকার কঠোর হবে বলে ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, একটা বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য যথাযথ পরিকল্পনা থাকতে হয়। কিন্তু নতুন যেসব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে আমরা তা দেখিনি। শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় উদ্দেশ্যহীনভাবে এসব বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের মতো দেশে এত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রয়োজন মানসম্পন্ন কারিগরি ও ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান। যাতে জনসংখ্যাকে জনশক্তিকে রূপান্তর করা যায়।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ