<p>পৃথিবী সময়ের দাবি মেনে চলে। সেই দাবি মানতে গিয়েই নানা প্রযুক্তি আবিষ্কার হয়েছে। সভ্যতার শুরুর দিকে মানুষ যখন সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস শুরু করেছে। তখন থেকে শুরু হয়ে জীবন সহজ করার নানা পদ্ধতির আবিষ্কার। তারই ধারাবাহিকতায় একসময় চাকা আবিষ্কার হয়, তৈরি হয় গাড়ি। নানা ছিরিছাঁদে। আধুনিক মোটর ইঞ্জিন আসার আগে সবচেয়ে আধুনিক গাড়ি ছিল ঘোড়ার গাড়ি। বাংলাদেশে ঘোড়ার গাড়ির চেয়েও বেশি জনপ্রিয় ছিল গরুর গাড়ি। এই দুই গাড়ি গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক পর্যন্তও চালু ছিল গ্রামবাংলায়। গরুর গাড়ি এখনো আছে। তবে ধুঁকছে। এখন আর সওয়ারি বয় না গরুর গাড়ি। শুধু মাল বওয়ার কাজেই ব্যবহার হয়। রাজ-রাজড়াদের ছিল হাতিতে চড়ার শখ। তবে সে শখ বিলুপ্ত হয়েছে শত বছর আগেই।</p> <p>মোটরগাড়ির চল যখন শুরু হয়নি, সারা দুনিয়ায় তখন কোচোয়ান, মাহুতের পোয়াবারো। কোচোয়ান হলো ঘোড়ার গাড়ির চালক, মাহুতরা চালায় হাতি। বাংলাদেশে বা ভারতে এর সঙ্গে ছিল গাড়োয়ান। মোটরগাড়ি আসার পরও এ দেশে গরুর গাড়ি চলত, এখনো চলে। তবে আগের সেই গরুর গাড়ি নেই। গরুর গাড়ি কিংবা ঘোড়ার গাড়িতে ছই থাকত। নারী যাত্রীরা বাপের বা দূর গাঁয়ে কুটুম্বিতা করতে গেলে গাড়োয়ান আর কোচোয়ানরাই ছিলেন ভরসা।</p> <p>কোচোয়ানরা নিজেদের গাড়ি ভাড়ায় খাটাতেন, এখনকার উবার কিংবা পাঠাওয়ের মতো। চালাতেন নিজেরাই।</p> <p>গরুর গাড়ি ছিল গৃহস্থদের নিজস্ব সম্পত্তি। অবশ্য সব গৃহস্থ নিজেরা গাড়ি চালাতেন না, মাস বা দিন চুক্তিতে গাড়োয়ান রাখতেন। গত শতাব্দীর আশি আর নব্বইয়ের দশকেও গাড়োয়ান বা কোচোয়ানি পেশাটা ছিল। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও পাকা সড়ক চালু হওয়ার পর গাড়োয়ান-কোচোয়ানের পেশা বিলুপ্ত হয়েছে এ দেশ থেকে। যদিও পুরান ঢাকায় কিছু ঘোড়ার টমটম দেখা যায়। মাহুতও আছে হাতে গোনা। ঢাকার রাস্তায় মাঝে মাঝে হাতি আর মাহুতের দেখা মেলে।</p>