<p style="text-align: justify;">আজানের আওয়াজ প্রত্যেক মুমিনের হৃদয়কে জাগিয়ে তোলে। প্রতিদিন পাঁচবার মুয়াজ্জিনের সুমধুর কণ্ঠে আমাদের মধ্যে বার্তা দিয়ে যায় মহান প্রভুর। আজান ইসলামের নিদর্শন। আল্লাহর কাছে মহান ইবাদত। যখন মুয়াজ্জিন আজান দেন তখন আমরা অনেক সময় বেখবর থাকি। অথচ আজান শোনার সঙ্গে কিছু সুন্নত আছে, যা সহজ আমল এবং এগুলোর সওয়াব অনেক। আমলগুলো হলো—</p> <p style="text-align: justify;"><strong>এক. আজানের জবাব দেওয়া</strong></p> <p style="text-align: justify;">মুয়াজ্জিনের আজানের সঙ্গে সঙ্গে আজানের জবাব দেওয়া। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমরা আজান শুনতে পাও তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তোমরাও তার অনুরূপ বলবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৮৪)</p> <p style="text-align: justify;"><strong>দুই. দরুদ পাঠ করা</strong></p> <p style="text-align: justify;">রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করা। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, তোমরা যখন মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে শুনবে, তখন সে যা বলে তাই বলবে। তারপর আমার ওপর দরুদ পাঠ করবে। কারণ যে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার বিনিময়ে তার ওপর ১০ বার রহমত নাজিল করেন। পরে আল্লাহর কাছে আমার জন্য অসিলার দোয়া করবে। অসিলা হলো জান্নাতের একটি বিশেষ স্থান, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কোনো এক বান্দাকে দেওয়া হবে। আমি আশা করি যে আমিই হবো সেই বান্দা। যে আমার জন্য অসিলার দোয়া করবে, তার জন্য আমার শাফাআত ওয়াজিব হয়ে যাবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৩৫)</p> <p style="text-align: justify;"><strong>তিন. সুপারিশের জন্য দোয়া</strong></p> <p style="text-align: justify;">অসিলার জন্য দোয়া করা। নবী করিম (সা.) বলেছেন, আজানের পর আল্লাহর কাছে আমার জন্য অসিলার দোয়া করবে। অসিলা হলো জান্নাতের একটি বিশেষ স্থান, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কোনো এক বান্দাকে দেওয়া হবে। আমি আশা করি যে আমিই হব সেই বান্দা। যে আমার জন্য অসিলার দোয়া করবে, তার জন্য আমার শাফাআত ওয়াজিব হয়ে যাবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৩৫)</p> <p style="text-align: justify;"><strong>চার. আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেওয়া</strong></p> <p style="text-align: justify;">তাওহিদের সাক্ষ্য দেওয়া। সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের আজান শুনে নিম্নের দোয়া পাঠ করে তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়—</p> <p style="text-align: justify;">উচ্চারণ : ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু; রাদিতু বিল্লাহ রাব্বাউ ওয়া বিল ইসলামী দ্বিনাউ ওয়া বিমুহাম্মাদিন রাসুলাও ওয়া বিল ইসলামে দ্বিনা।’</p> <p style="text-align: justify;">অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনো শরিক নেই এবং মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসুল। আমি সন্তুষ্ট আল্লাহকে রব হিসেবে পেয়ে, মুহাম্মাদ (সা.)-কে রাসুল হিসেবে পেয়ে এবং ইসলামকে দ্বিন হিসেবে পেয়ে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭৩৭)</p> <p style="text-align: justify;"><strong>পাঁচ. আল্লাহর কাছে দোয়া করা </strong></p> <p style="text-align: justify;">সর্বশেষ নিজের জন্য কল্যাণের দোয়া করা। আজানের পরবর্তী সময় দোয়া কবুলের সময়। তাই দোয়া করার জন্য এই সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি বলেন, হে আল্লাহ! মুয়াজ্জিনরা তো আমাদের ওপর ফজিলতপ্রাপ্ত হচ্ছে। আমরা কিভাবে তাদের সমান সওয়াব পাব? তিনি বলেন, মুয়াজ্জিনরা যেরূপ বলে তুমিও তদ্রূপ বলবে। অতঃপর যখন আজান শেয করবে, তখন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলে তুমিও তদ্রূপ সওয়াবপ্রাপ্ত হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৫২৪)</p> <p style="text-align: justify;">অন্য হাদিসে এসেছে, আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে কৃত দোয়া কখনোই প্রত্যাখ্যাত হয় না। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৫২১)</p> <p> </p>