<p>ফরিদপুরে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে বেশ কয়েকটি গ্রামের দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে পড়েছে গাছ। অনেক জায়গায় বিদ্যুতের পিলার ভেঙে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শুরু হয়ে ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালায় এই ঝড়। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টার সময়ও বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গার প্রায় ৩০টি গ্রাম বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন ছিল বলে জানা গেছে। তবে ঝড়ে কোনো এলাকায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।</p> <p>ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শেখর ইউনিয়নের সহস্রাইল বাজারের ১২টি ঘর ঝড়ে উড়ে গেছে। এ ছাড়া দরিসহস্রাইল, ভুলবাড়িয়া ও মাইটকুমরা গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রূপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড় গ্রাম, কুমরাইল, কলিমাঝি; পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ময়েনদিয়া, জয়পাশা, তামারহাজি; চতুল ইউনিয়নের বড়গা বাজারের কয়েকটি ঘর এবং আলফাডাঙ্গা উপজেলার টাবনি, ফলিয়া, বারাংকুলা ও চরডাঙ্গা এলাকায় ঘরবাড়িসহ গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।</p> <p>আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের টিম লিডার ওবায়দুর রহমান জানান, সন্ধ্যার কালবৈশাখীতে বোয়ালমারীর সহস্রাইল বাজার থেকে আলফাডাঙ্গা সড়কে বড় কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে ছোট-বড় যান চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে গাছপালা অপসারণ করা হয়। সহস্রাইল বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, বাজারের ১০ থেকে ১২টি ঘর একেবারেই ভেঙে গেছে। ব্যবসায়ীদের পাট ও পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।</p> <p>ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোর্শেদুর রহিম জানান, কালবৈশাখীতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কানাইপুরে মেইন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে অনেক জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা রাত থেকেই মাঠে কাজ করছেন। বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলমান।</p> <p>অন্যদিকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে শুরু হওয়া এ ঝড়ে মানিকগঞ্জ বাজারের অন্তত ২০টি  দোকানের চাল উড়ে গেছে। এ ছাড়া নোয়াগ্রাম, আড়পাড়া, বাহিরপাড়া, শরশুনা, গণ্ডব এলাকার অন্তত ২০০ বাড়িঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে। এলাকার বিভিন্ন অংশে প্রায় এক হাজার গাছ ঝড়ে উপড়ে গেছে। অসহায় হয়ে পড়েছে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে।</p> <p>শরশুনা গ্রামের সাহেব আলীর বসতঘরের ওপর ভেঙে পড়ে বিশাল একটি আকাশমণি গাছ। ভয়ে তাঁরা ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। ঝড়ে তাঁর বাড়ির রান্নাঘরসহ বাকি দুটি ঘরের চালা উড়ে গেছে। খোলা আকাশের নিচে পরিবারসহ বসবাস করছেন তাঁরা। লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহরুল ইসলাম বলেন, এলাকায় ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের চেষ্টা চলছে।</p>