<p>আগস্টের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে সহায়তার দ্বিতীয় ধাপ চালু করেছে। এই সহায়তার মাধ্যমে ২২০০-এর বেশি নারী এবং তাদের পরিবার একটি মোবাইল ফিন্যান্সিং অ্যাপের মাধ্যমে ৬,০০০ টাকা নগদ পেয়েছেন।</p> <p>কুমিল্লা, ফেনী, মৌলভীবাজার, নোয়াখালী এবং লক্ষ্মীপুর জেলার প্রায় ৪৭,০০০ পরিবার বা প্রায় ২৩৫,০০০ মানুষকে তাদের খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সরাসরি বিকাশের মাধ্যমে ৬,০০০ করে টাকা পাচ্ছেন।</p> <p>সরকারি সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা- মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি (MCBP) এবং ভালনারেবল-উইমেন-বেনিফিট কর্মসূচির (VWBP) মাধ্যমে ডব্লিউএফপি অরক্ষিত নারীদের সহায়তা দিচ্ছে, যাদের পরিবার আগস্টের বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং মৌলভীবাজারে ১০৬,০০০ পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্য ডব্লিউএফপির। অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহ করতে পারলে শিগগির আরো ১২০,০০০ পরিবারকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত ডব্লিউএফপি।</p> <p>কয়েক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিশেষ করে চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের প্রায় ৬ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন এবং এখনো পানিবন্দি, তাদের জরুরি খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে ডব্লিউএফপি। তাৎক্ষণিক খাদ্য চাহিদা মেটাতে কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, লক্ষ্মীপুর এবং কক্সবাজার জেলায় ১,২০,০০০ পরিবারের প্রায় ৬,০০,০০০ মানুষকে ডব্লিউএফপি তাদের ফোর্টিফাইড বিস্কুট এককালীন বিতরণ করেছে।</p> <p>বন্যাকবলিত জনগোষ্ঠীকে পুনরুদ্ধার এবং পুনর্নির্মাণের প্রচেষ্টাকে সাহায্য করার জন্য ডাব্লিউএফপি বিভিন্ন নগদ প্রকল্পের মাধ্যমে আরো অব্যাহত সহায়তা প্রদান করবে।<br /> বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া প্রায় ৯০,০০০ পরিবারকে আবাদি জমি পুনর্বাসন বা পুনরুদ্ধারে সহায়তা দেওয়া হবে। প্রত্যেক পরিবার থেকে একজন সক্ষম ব্যক্তি ১৫ দিনের কাজে যুক্ত হবেন এবং দৈনিক ৫০০ টাকা করে পাবেন। এ ছাড়া যাদের পরিবারে একজনও সক্ষম সদস্য নেই- এমন ১৫,০০০ পরিবারকে তাদের প্রয়োজন অনুসারে আয়-উৎপাদনমূলক কর্মকাণ্ডে ইনকাম-জেনেরেটিং অ্যাক্টিভিটিজ-এ যুক্ত করা হবে।</p> <p>ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্কালপেলি বলেন, ‘বন্যার পানি কমতে শুরু করায়, পরিবারগুলো আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তাদের বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকেই তাদের সব কিছু হারিয়েছেন। বাজারগুলো ধীরে ধীরে পুনরায় চালু হচ্ছে। তাদের খাদ্য সহায়তা এখনো প্রয়োজন। ডব্লিউএফপির সহায়তা কার্যক্রম মূলত তাদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনাকে কেন্দ্র করে। পাশাপাশি জীবিকার সুযোগ তৈরি করে সেখানকার মানুষকে আরো শক্তিশালী, সহিষ্ণু করে তুলতে এবং পুনর্গঠনের জন্য ডব্লিউএফপি কাজ করছে।’</p> <p>সহায়তা অব্যাহত রাখতে ডব্লিউএফপির ৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এর মধ্যে এখনো ৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করা বাকি। ডব্লিউএফপি আন্তরিকভাবে কানাডা, সুইডেন এবং এর ব্যক্তিগত দাতাদের (ShareTheMeal অ্যাপের মাধ্যমে) অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।</p>