<p>নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন কিংবা সহিংস ঘটনা ঘটালে প্রার্থিতা বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভোট প্রতিহত করার অধিকার কারো নেই। কেউ প্রতিহতের চেষ্টা করলে সাত বছরের জেল হবে। এদিকে ইসির সিদ্ধান্তে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ঝিনাইদহের দুই থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।</p> <p>ইসি সূত্র জানায়, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার নির্বাচন ভবনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ঝিনাইদহের দুই ওসিকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ছাড়াও নির্বাচনী মাঠে বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ভোট প্রতিহত করার ঘোষণার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়।</p> <p>বৈঠক শেষে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, কোনো শঙ্কা, ভয়-ভীতি বা আনুকূল্য নেই। নির্বাচনীবিধি লঙ্ঘন করলে প্রার্থিতা বাতিল হবে, কোনো না কোনো জায়গায় কারো না কারো, এইটুকু আভাস আমি দিয়ে রাখলাম। এ ক্ষেত্রে হেভিওয়েট বলে কিছু নেই, যার বিরুদ্ধে অভিযোগের স্বপক্ষে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p> <p>স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠে দাঁড়াতে পারছে না, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের কেন আচরণবিধি মানাতে পারছেন না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আনিছুর রহমান বলেন, আমরা যে তথ্য পাচ্ছি, তাতে একমত হতে পারছি না। এরই মধ্যে বিভিন্ন জেলা ঘুরে আসছি। আচরণবিধি বাস্তবায়ন হচ্ছে। আজও কিছু কঠোর সিদ্ধান্তের আলোচনা করেছি। আরো কিছু তথ্য চেয়েছি। তথ্য পেলে কিছু কঠোর সিদ্ধান্তে চলে যাব।</p> <p>তিনি বলেন, একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক মারা গেছে। কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না। বড়-ছোট সবাইকে আমরা একইভাবে দেখছি। এ ক্ষেত্রে আমরা নিরপে অবস্থান নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মাঠে আমাদের নিরপেক্ষ অবস্থান আছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপে নির্বাচনের জন্য যা করার দরকার করে যাব।</p> <p>পুলিশ কেন অবেহলা করছে, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, যেই ঘটনা শুনলাম, এটা কিন্তু সকালে তিনি তার বাড়ি থেকে কোনো একটা জায়গায় যাচ্ছিলেন, পথিমধ্যে তাকে আক্রমণ করা হয়েছে। তারা উভয়েই একই বংশের, তাদের মধ্যে আত্মীয়তা রয়েছে। কিছুদিন আগেও তাদের মধ্যে একটা ঘটনা ঘটেছিল, সে কারণেই হয়েছে, নাকি নির্বাচনের কারণে হয়েছে এ বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। নির্বাচনের কারণে অনেকে ব্যক্তিগত শত্রুতার বিষয়টিও সামনে আনছে। তবে আমরা নিরপেতার সঙ্গেই দেখব। এখানে যে কারো মৃত্যুই অনাকাঙ্ক্ষিত। এজন্য যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছি। একটু সময় দেন। বাকিটা আপনারা দেখবেন।</p> <p>এক প্রশ্নের জবাবে মো. আনিছুর রহমান বলেন, ভোট প্রতিহত করার অধিকার কারো নেই। কেউ প্রতিহত করার চেষ্টা করলে সাত বছরের জেল হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেটকে যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য লিফলেট বিতরণ হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p> <p>তিনি বলেন, মাঠেও একই কথা বলেছি। কেউ ভোটে নাও আসতে পারেন, ভোট দিতেও নাও পারেন। ভোট প্রতিহত করার অধিকার কারো নেই। কিন্তু অন্যকে প্রতিহত করলে আমরা এবার সংশোধনী এনেছি, সাত বছর পর্যন্ত জেল বা অর্থদণ্ড করা হবে।</p>