ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি

জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণ

  • জুলাইয়ের বড় অংশজুড়ে সারা দেশের মতো রাজধানীর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো ছিল কোটাবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি এতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এর অন্যতম
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণ
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে ‘জুলাই ২০২৪ বিপ্লব : শোক ও স্মরণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আলোর মিছিল করেন। গতকাল এনএসইউ ৮ নম্বর গেটে। ছবি : লুৎফর রহমান

‘বসুন্ধরা গেট দিয়ে কাউকে বের হতে দিচ্ছিল না। কম শিক্ষার্থী দেখলেই গুলি ছু্্ড়ছিল। আমাদের এখান থেকে (নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি) কয়েকজন ভাই বসুন্ধরা গেটে আহত হওয়া কয়েকজনকে চিকিৎসা দিতে যান। কিছুক্ষণ পর আমরা শুনতে পাই সেনা সদস্যরা এসে পুলিশদের সরে যেতে বলেছেন।

তখন বসুন্ধরা গেট খালি হয়ে যায়।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চূড়ান্ত দিন গত ৫ আগস্টের ঘটনার এমন রুদ্ধশ্বাস বর্ণনা দিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মেহনাজ আশরাফী। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জুলাই বিপ্লব ২০২৪-এর সব শহীদ ও আহতদের স্মরণে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাংস্কৃতিক সংগঠন (এনএসইউএসএস) আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণা করছিলেন তিনি।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ৮ নম্বর গেটে স্মৃতিচারণার পাশাপাশি শোকসভা ও আলোর মিছিলের আয়োজন করে সংগঠনটি।

অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি আর্ট অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাব।

অনুষ্ঠানের শুরুতে এনএসইউয়ের শহীদ মিনার থেকে শোকযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মেহনাজ আশরাফী বলেন, ‘৫ আগস্ট সকাল ৯টায় আমাদের ইউনিভার্সিটির ৮ নম্বর গেটে জড়ো হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু সেখানে পুলিশ ও আনসার থাকায় আমরা ১ নম্বর গেটে জড়ো হতে শুরু করি। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী একত্র হই। এরপর কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে আরো ছাত্র মিছিলসহকারে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। এরপর ইআইইউ, এআইইউবি, আইইউবিসহ আশপাশের ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়। তারপর আমরা সেখানে স্লোগান দিতে থাকি।

মেহনাজ আশরাফী বলেন, ‘হঠাৎ করে কোনো কথাবার্তা ছাড়াই আমাদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করা হয়। তারপর পুলিশের গাড়ি থেকে পাঞ্জাবি পরা একজন নেমে গুলি করতে বলে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও আনসাররা টিয়ার গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়তে শুরু করে। দৌড়াদৌড়ি করে ছোট গেট দিয়ে ঢুকতে গিয়ে আহত হয় অনেক শিক্ষার্থী। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মীদের অনেকে গুলি খায়। একজন ভাইয়ের চোখে রাবার বুলেট লেগেছিল। আরেকজনের পিঠে অনেক রাবার বুলেট লাগে। এমন অবস্থায় পুলিশ ও আনসাররা ক্যাম্পাসের ভেতরেও গুলি ছুড়তে থাকে।’

মেহনাজ আশরাফী বলেন, ‘অবস্থা এমন ছিল যে আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে কল করে অ্যাম্বুল্যান্স আনার ব্যবস্থা করে অনেককে হাসপাতালে পাঠানো হয়।’ তিনি বলেন, ‘এক পর্যায়ে আমরা জানতে পারি সেনাপ্রধান দুপুর ২টার সময় বক্তব্য দেবেন। তখন আমরা উনার বক্তব্যের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। সেনাপ্রধানের বক্তব্য পরে বিলম্বিত করা হয়। মাঝের সময়টিতে আমরা আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছিলাম।’

আশরাফী জানান, বিকেল ৩টার পর তাঁরা বিজয় মিছিল নিয়ে শাহবাগের উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে তখন মানুষ আর মানুষ। ‘আমার জীবনে সেখানে এমন জনসমুদ্র দেখি নাই’, স্মৃতিচারণা করে বলেন মেহনাজ।

তরুণ শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে দিয়ে মেহনাজ বলেন, ‘আমাদের বিজয় এসেছে ঠিকই। দেশ গড়াটা এখনো বাকি। আমাদেরই সেটা করতে হবে। এখনো আমরা অনেক ধরনের সংবাদ শুনতে পাই। রাতে কেউ ঘুমাতে পারি না। তবে এসবের বেশির ভাগই গুজব। গুজবে কান না দিয়ে আমাদের উচিত আগে ঘটনা সত্য কি না সেটা যাচাই করা।’

স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে মিজানুর রহমান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আগস্টের ১৯ তারিখে নদ্দা এলাকায় আমাদের এনএসইউয়ের কর্মী আবির ভাই নিহত হয়েছেন। আমি তাঁর এবং এই আন্দোলনে নিহত সব শহীদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এনএসইউয়ের কোষাধ্যক্ষ ও উপ-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক আবদুর রব খান। তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কারের সূত্র ধরে ছাত্রসমাজ একটি অরাজনৈতিক আন্দোলন থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে বিশাল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। আন্দোলনের শুরু থেকে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। তাই স্বৈরাচারী সরকার পতনের এই বিজয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় এনএসইউ শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি এই বিপ্লবের সব শহীদকে।’

স্মৃতিচারণার পর রবীন্দ্রনাথের ‘আগুনের পরশমণি’সহ আরো কয়েকটি উদ্দীপনামূলক গান ও কবিতার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা স্মরণ করেন তাঁদের হারানো সহপাঠী, রাজপথের সহযোদ্ধাদের। আলোক প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই আয়োজন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এনএসইউএসএসের ফ্যাকাল্টি অ্যাডভাইজার মুশাররাত হোসেন।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তৃতীয় জয়

শেয়ার
তৃতীয় জয়

শান্তি মার্দির (জার্সি নং-২০) হ্যাটট্রিকে গতকাল অনূর্ধ্ব-২০ সাফে ভুটানকে ৪-১ গোলে হারিয়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। আসরে স্বাগতিকদের এটি টানা তৃতীয় জয়। ছবি : বাফুফে

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বদলির আদেশ ছিঁড়ে ফেলায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন আয়কর ও পাঁচজন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা। এনবিআরের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে পৃথক আদেশ জারি করেন।

আদেশে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।

বিষয়টি তদন্ত করে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সময়ে তাঁরা বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আয়কর কর্মকর্তারা হলেন মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৮, ঢাকা; মাসুমা খাতুন, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-২; মুরাদ আহমেদ, যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫; মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার, কুষ্টিয়া; মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, যুগ্ম কর কমিশনার, নোয়াখালী; আশরাফুল আলম প্রধান, যুগ্ম কর কমিশনার, কক্সবাজার; শিহাবুল ইসলাম, উপকর কমিশনার, খুলনা; নুশরাত জাহান, উপকর কমিশনার, রংপুর এবং ইমাম তৌহিদ হাসান, উপকর কমিশনার, কুমিল্লা।

কাস্টমস বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর; সিফাত-ই-মরিয়ম, অতিরিক্ত কমিশনার; মো. শাহাদাত জামিল, দ্বিতীয় সচিব, এনবিআর; শফিউল বশর, রাজস্ব কর্মকর্তা এবং সবুজ মিয়া, রাজস্ব কর্মকর্তা।

গত জুন মাসে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন তাঁরা সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করেন। পরে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলনের পর শুরু হয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

এরই মধ্যে তিনজন এনবিআর সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এনবিআরের আরো দুই সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে।

দুদক সূত্র জানায়, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।

মন্তব্য
ছাত্রদলের আলোচনাসভায় বক্তারা

গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান খাটো করার চেষ্টা হচ্ছে

ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটরিয়ামে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে গণ-অভ্যুত্থানের বাঁক বদলের দিন শীর্ষক এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের স্পষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে খাটো করার অপচেষ্টা চলছে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ছাত্রদল, ডান-বাম ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আলোচনাসভার প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আন্দোলনের মূলে ছিল ছাত্রসমাজের চেতনা।

আজ সেই চেতনাকে বিকৃত করার চেষ্টা হচ্ছে, যা আত্মত্যাগের অবমূল্যায়ন। তিনি আরো বলেন, যে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য ১৯৭১ সালে লাখো শহীদ জীবন দিয়েছিলেন, তা ভুলে গিয়ে শেখ মুজিব চার বছরের মাথায় গণতন্ত্রকেই ভ্যানিশ করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বলেন, তাঁর কন্যা (শেখ হাসিনা) তো ডাবল ফ্যাসিস্ট হয়েছেন। তিনি মন্তব্য করেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কখনো প্রত্যাবর্তন করুক, তা বাংলাদেশের মানুষ চায় না।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো উল্লেখ করেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনকারীদের রক্তদানকে যারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরাতে চাইছে এবং বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতৃস্থানীয় নেতাদের নামে কুৎসা রটানোর চেষ্টা করছে, তারা ফ্যাসিবাদের আগমনকে স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, কেননা মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনার জেরে একটি গুপ্ত সংগঠন রাজনৈতিক ইন্ধন দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বুয়েট ও চুয়েটে আমাদের সর্বোচ্চ নেতাদের নিয়ে নোংরা স্লোগান দিয়েছে।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, জামায়াতের এক নায়েবে আমিরের ভাগ্নি জামাইয়ের নেতৃত্বে তারেক রহমানবিরোধী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা সমালোচনা গ্রহণ করি, তবে মনে রাখা উচিতআমাদেরও সহ্যের সীমা আছে। একাত্তর ও চব্বিশের পরাজিত শক্তি ছাড়া বাকি সবার সঙ্গে আমাদের ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা রয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার নিয়ে শহীদ পরিবারের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে। অথচ আমরা বিচার নিশ্চিত না করে বিভাজনের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছি।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেত্রী মুক্তা বাড়ই বলেন, আজ রাজাকারদের পুনর্বাসন ও নরমালাইজেশন শুরু হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে গোটা দেশে মবতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ছাত্রদলের সহযোদ্ধারা প্রথম দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিলেন। ১৫ জুলাই একাত্তর হলে প্রথম হামলায়ও ছাত্রদলের ভাইয়েরা আহত হয়েছিলেন। এখানে এককভাবে কোনো সংগঠনের কৃতিত্ব দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, এই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব শহীদদের, কোনো রাজনৈতিক দলের নয়। আমাদের গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচনাসভায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান, ইসলামী ছাত্র মজলিসের দপ্তর সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুভাশিষ চাকমা, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি সাইদুল হক নিশান, ছাত্র ইউনিয়নের মেঘমল্লার বসু ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহবায়ক আবু বাকের মজুমদারসবাই ছাত্ররাজনীতির মধ্যে বিভাজন অপপ্রচারের রাজনীতি বন্ধ করার আহবান জানান।

মন্তব্য

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯৬ জন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ১৩১ জনকে আটকে দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। মূলত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কারণ দেখিয়ে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।

দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার জানিয়েছে, ওই ১৩১ জনকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯৬ জন বাংলাদেশের নাগরিক।

গত শুক্রবার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালে মালয়েশিয়ার বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির অভিযানে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়।

দ্য স্টারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৩০০ জনের বেশি যাত্রীর কাগজপত্র যাচাই করে ১৩১ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ৯৬ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ৩০ জন পাকিস্তানি পুরুষ ও পাঁচজন ইন্দোনেশীয় নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্ত পূরণে ঘাটতি পাওয়া গেছে।

শর্ত পূরণ না হওয়া বলতে সন্দেহজনক হোটেল বুকিং, ইমিগ্রেশন কাউন্টারে হাজির না হওয়া এবং পর্যাপ্ত অর্থ সঙ্গে না রাখার মতো কারণ দেখানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সাধারণত ভ্রমণকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি করে। কেউ যদি বলে যে সে এক মাস থাকবে, কিন্তু সঙ্গে মাত্র ৫০০ রিঙ্গিত আনে, তাহলে তার বক্তব্যে সন্দেহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে, সেগুলো পূরণ করেই যেন আগ্রহীরা ভ্রমণের প্রস্তুতি নেয়, বিবৃতিতে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সি বলছে, মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তিকে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা, আর্থিক সামর্থ্য এবং থাকা-খাওয়ার নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।

এদিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, যাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, নিশ্চয়ই তাঁদের ট্যুরিস্ট হিসেবে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণে ব্যর্থ মনে করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ