বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ গবেষণা। উচ্চশিক্ষার মান বাড়াতেও গবেষণা অন্যতম পূর্বশর্ত। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা খাতে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে যেন ঠিক উল্টো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪ বছর
গবেষণায় পিছিয়ে বরাদ্দও অপ্রতুল
শরীফুল আলম সুমন ও মানজুর হোছাঈন মাহি

এ অবস্থায় আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পালন করা হচ্ছে ১০৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
তাঁরা বলছেন, বিশ্বের নামি-দামি যত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তারা প্রত্যেক বছর গবেষণার পেছনে শত শত, এমনকি কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে। তবে এই ফান্ড সরকার থেকে দেওয়া হয় না। তারা একাডেমিক-ইন্ডাস্ট্রিজ সহযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন বেসরকারি ইন্ডাস্ট্রি থেকে তা জোগাড় করে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গবেষণায় সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। ওই বছর তাদের গবেষণা ব্যয় ছিল ৫৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে ওই বছর ৩৬ হাজার শিক্ষার্থী ও দুই হাজার ২৯৯ জন শিক্ষকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় ব্যয় ছিল মাত্র ১৫ কোটি টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের যত কিছু শুভ, যত কিছু কল্যাণকর, সব কিছুর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব জড়িত। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার বিষয়ে বলা হচ্ছে। গবেষণার জন্য ফান্ডিংয়ের একটা বিষয় আছে। সরকার যদি ফান্ডিং না দেয় তাহলে কিভাবে গবেষণা হবে? সরকারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সাফল্য ও সক্ষমতা সেটার সদ্ব্যবহার করা উচিত৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনভেস্টমেন্ট বাড়ালে জাতি উপকৃত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভালো থাকলে বাংলাদেশ ভালো থাকবে।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ এশিয়া ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং-২০২৪ প্রকাশ করেছে। ওই তালিকার সেরা ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান পায়নি বাংলাদেশের কোনো সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকি শতবর্ষ পেরোনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও নেই, যা ভাবিয়ে তুলেছে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
র্যাংকিংয়ের তালিকা অনুযায়ী, এশিয়া র্যাংকিংয়ে ৩০১ থেকে ৩৫০-এর মধ্যে যৌথভাবে রয়েছে বাংলাদেশের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। তালিকার ৩৫১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। ৪০১ থেকে ৫০০-এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। আর ৫০১ থেকে ৬০০-এর মধ্যে আছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিংয়ে বেশ কিছু বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়; যেমন—প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম, চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সুনাম, ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত, শিক্ষকপ্রতি সাইটেশনের সংখ্যা, আন্তর্জাতিক শিক্ষকের সংখ্যা, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ইত্যাদি। প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম মূলত গবেষণার ওপর নির্ভর করে। অথচ যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ১০৪ বছর তারা কেন এখনো গবেষণা ও সুনামে পিছিয়ে থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত গবেষণার প্রবণতা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকদের ৫৮৬টি গবেষণা-প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল, যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৪০০। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমের এ অগ্রগতি বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ে ক্রমাগত উন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ বছর ‘কিউএস র্যাংকিংয়ে’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো বিশ্বে ৫৫৪তম অবস্থান অর্জন করেছে। র্যাংকিংয়ের কিছু কিছু সূচক উন্নয়নশীল দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অর্জন করা দুরূহ।
অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল আরো বলেন, ‘আমাদের গবেষণা ও উদ্ভাবনে আরো ভালো করা সম্ভব। মানসম্মত গবেষণার জন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক মানের বাজেট, সমৃদ্ধ ল্যাবসহ সার্বিক সুযোগ-সুবিধা। এ ক্ষেত্রে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সবার সম্মিলিত সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। র্যাংকিংয়ে আরো উন্নতি করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য একটি সেল গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রি-ইউনিভার্সিটি কোলাবরেশন জোরদার করা এবং কনসালটেনসি ও গবেষণার ক্ষেত্রে আর্থিক ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’
সম্পর্কিত খবর

স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে

ক্রিকেট ম্যাচ, তার ওপর রবিবার। গতকাল তাই উদ্দাম পার্টির প্রস্তুতি ছিল রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উপড়ে পড়া গ্যালারির। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকে ডিজের মিউজিক, দর্শকদের ড্রাম পেটানো আর ট্রাম্পেটের চড়া সুরে কান পাতা দায়। সেই পার্টিই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যায় দারুণ ক্ষিপ্রতায় কুশল মেন্ডিসকে শামীম হোসেন রান আউট করতেই।
বিশ ওভারের ক্রিকেটে ছন্দ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুতলয়ের ক্রিকেটে ছন্দের সেই গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে পেয়ে আর পেছনে তাকায়নি বাংলাদেশ দল।
অবশ্য ম্যাচজুড়েই শামীমের প্রতিপত্তি দেখা গেছে।
কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন লিটন ও শামীম। অধিনায়কের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে তাওহিদ ফেরেন, একই ওভারে তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুমে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ধাক্কায় অবশ্য কাবু হওয়ার অবস্থায় নেই শামীম। আগের ম্যাচে ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকা এই বাঁহাতি শুরু থেকে চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। ওদিকে অধিনায়কও থিতু হয়ে গেছেন উইকেটে। তাঁরা জুটি বেঁধে ছোটান রানের গতি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে লিটন ও শামীম মিলে তোলেন ৭৭ রান, তা-ও মাত্র ২১ বলে! ১৩ ম্যাচ পর ফিফটির দেখা পান লিটন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বাদশ পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস। এক বাউন্ডারি আর পাঁচ ছক্কায় ৫০ বলে ৭৬ রান করে যখন আউট হন অধিনায়ক, ততক্ষণে লড়াইয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক পূঁজি এক রকম হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে স্ট্রাইক পেতে মরণপণ দৌড়েও ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি শামীম। তাতে ২৭ বলে তাঁর ৪৮ রানের ইনিংস পঞ্চাশ ছুঁতে না পারার আক্ষেপে শেষ হয়েছে। অবশ্য তাঁর মনে কোনো আক্ষেপ নেই, ‘দল জিতেছে। তাতে অবদান রাখতে পেরেছি। এতেই আমি খুশি।’ শামীম আরো খুশি ১৬ জুলাই কলম্বোয় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা নয়, জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
ম্যাচ শুরুর আগের রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের চালচিত্র না বললেই নয়। হাজার তিরিশেক দর্শকের ঠাঁই হয় এ মাঠে। তবে দুই দিন ধরে টিকিটের জন্য আহাজারি শোনা যাচ্ছিল, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল যে পর্যাপ্ত আসন নেই। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে গ্যালারি ভরে গেছে। বরাবরের মতো গ্যালারি লাগোয়া গাছেও চড়ে বসেন বিনা টিকিটের দর্শক। তাই বলে সিঁধ কেটে বিনা টিকিটের দর্শক ঢোকে ডাম্বুলায়, সেটি অজানা ছিল। গতকাল সেটিও দেখা হলো, বাংলাদেশ ইনিংসের ব্যাটিং পাওয়ার প্লে চলাকালে ভিআইপি স্ট্যান্ডের দিককার কাঁটাতারের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে অন্তত শ খানেক টিকিটহীন দর্শক ঢুকে পড়লেন স্টেডিয়াম চত্বরে। বিনা বাধায় যোগ দিলেন গ্যালারির উৎসবে। নিজ দলের ব্যাটিং ভরাডুবিতে ক্ষণে ক্ষণে লাউড স্পিকার থেমেছিল বটে। তবে পুরোপুরি থামেনি। পুরস্কার বিতরণীর পরও কিছু দর্শককে দেখা গেছে হাসিমুখে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তো বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেও গেলেন, ‘ওয়েল প্লেইড বাংলাদেশ!’

অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ব্যাটারির রিকশার দাপট বেড়েছে। সেগুলো জব্দে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল মালিবাগে অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দ করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি : ফোকাস বাংলা
।
মানবতাবিরোধী অপরাধ
বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ পলাতক ২৪ আসামিকে আত্মসমর্পণের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে বাংলা-ইংরেজি দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে। আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল রবিবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এর আগে ১০ জুলাই এই মামলার ২৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২২ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন। যে দুজন আসামি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তাঁরা হলেন রাফিউল হাসান রাসেল ও মো. আনোয়ার পারভেজ।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে চারজনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই মামলার শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। শুনানিতে তিনি বলেন, পলাতক আট আসামির গ্রেপ্তার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় প্রয়োজন। তখন ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। আদেশের সময় মামলার ১৬ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

হত্যা মামলায় জামিন
আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানার এনামুল হক নামের এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস জামিন পেয়েছেন। গতকাল রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনয়শিল্পী। এটাই আমার পেশা।
এদিন অপু বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি মুখে কালো মাস্ক, মাথায় সাদা ওড়না ও বোরকা পরেছিলেন। তাঁর আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
এরপর অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না।’ এ সময় আইনজীবীরা আহা আহা সাধু বলতে থাকেন। অনেক আইনজীবী উত্তেজিত হয়ে বলেন, অপু বিশ্বাস এমপি হতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার দোসর তিনি। এ সময় অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে।’ এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করতে দেখা যায়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে অপু বিশ্বাস গত ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। পরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিননামা দাখিল করেন তিনি।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার শ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন তিনি। মামলায় অপু বিশ্বাস, আশ্না হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকেও আসামি করা হয়। মামলায় এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে এই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার হন আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ মে জামিন পান তিনি।