জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বহির্ভূত আয়ের ক্ষেত্রে তিন অর্থবছর ধরে বাড়তি লক্ষ্যমাত্রা দিলেও তা বাস্তবায়নে প্রবৃদ্ধি হয়নি। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের দুর্বল অবস্থার কারণে তা অনেকটা লক্ষ্যমাত্রানির্ভর রয়েছে। বাস্তবে একাধিক বছর ধরেই এনবিআরবহির্ভূত কর আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্ধেকের কম অর্জিত হচ্ছে। করবহির্ভূত রাজস্ব আয়ও বেশ পিছিয়ে আছে।
আয় বাড়াতে জোর দেবে সরকার
মিরাজ শামস

দেশে চলমান অর্থনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতির কারণে সরকারের রাজস্ব আয় চাপে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে আগামী অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরবহির্ভূত কর আয় ও করবহির্ভূত রাজস্ব আয়ে লক্ষ্যমাত্রার তেমন হেরফের হচ্ছে না।
তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব বোর্ডের কর আয় বাড়াতে শক্ত অবস্থান নিতে যাচ্ছে সরকার। এমনকি এনবিআর কর আহরণে অনেক পিছিয়ে থাকার পরও চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি বাড়িয়ে আগামী দিনে রাজস্ব আয় করার পরিকল্পনা দেওয়া হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, আগামী অর্থবছরে সরকার মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ লাখ কোটি টাকা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে।
তবে এর আগের অর্থবছরে ৬৩ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৪৬ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা।
এদিকে শুধু এনবিআরবহির্ভূত কর আয় লক্ষ্যমাত্রা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছিল। ধারাবাহিকভাবে এই লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে চলতি অর্থবছরে তা ২০ হাজার কোটি টাকা করা হয়। কিন্তু বাস্তবে গত পাঁচ অর্থবছর ধরে এই আয় বার্ষিক ছয় হাজার কোটি থেকে আট হাজার কোটি টাকার মধ্যে হয়েছে। করবহির্ভূত আয়ের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে গত অর্থবছরে ১৬ হাজার কোটি টাকা এবং এর আগের অর্থবছরে ১৭ হাজার ২২০ কোটি টাকা পিছিয়ে ছিল। বর্তমানে দেশে করবহির্ভূত রাজস্ব আয় প্রায় ১১ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ভ্যাট থেকে এক লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, আয়কর এক লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং শুল্ক এক লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়োছিল চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। পরে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় চার লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে এনবিআরের রাজস্ব ঘাটতি ২৬ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। এই সময়ে আয় হয়েছে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে দুই মাসে আয় করতে হবে এক লাখ ২২ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা।
রাজস্ব বোর্ডের কার্যক্রমের ওপর এক উপস্থাপনায় এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, উন্নত দেশ হতে হলে নিজস্ব রাজস্ব অর্থায়ন বাড়াতে হবে। এখন মোট রাজস্ব আয়ের ৮৬ শতাংশ এনবিআর আয় করছে। এনবিআরবার্হিভূত কর থেকে আয় মাত্র ৪ শতাংশ। বাকি ১০ শতাংশ আসছে করবহির্ভূত আয় থেকে। তাঁর মতে, এনবিআরের রাজস্ব বাড়ানোর পাশাপাশি এনবিআরবহির্ভূত রাজস্ব বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাজেটে যখন রাজস্ব আদায়ের টার্গেট দেওয়া হয়, তখন অসহায় এনবিআর। মন্ত্রণালয় আগের বছরের অর্জন হিসাবের ওপর ভিত্তি না করে কেবল লক্ষ্যমাত্রা থেকে পরের বছরে নতুন লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে রাজস্ব বাড়াতে অন্য উদ্ভাবনী পরিকল্পনা বা চিন্তার সুযোগ থাকে না।
তিনি বলেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে অটোমেশন করতে হবে। এ জন্য বেশ কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সম্পূর্ণ ব্যবস্থা ডিজিটাইজেশনের পরিকল্পনা এনবিআরের আছে। পাশাপাশি অন্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় হলে দেশের রাজস্ব আয় বাড়বে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র ফেলো মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজস্ব বাজেটে কোনো উদ্বৃত্ত নেই। এর ফলে দিন যত যাবে, আমাদের পরনির্ভরশীলতা তত বাড়বে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হলে ঋণের সুদহার অনেক বেড়ে যাবে। এ অবস্থায় রাজস্ব-জিডিপির অনুপাত না বাড়ালে বড় রকমের সমস্যা সৃষ্টি হবে।
মোস্তাফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, এনবিআরবহির্ভূত আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে ডিজিটাইজেশনের কোনো বিকল্প নেই। এই প্রক্রিয়া এনবিআরের সঙ্গে সমন্বয় করে করলে আরো জোরদার হবে। অটোমেশন হলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চত হলে অনেক আয় বাড়বে।
ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই নিয়ে উদ্যোক্তা ইমরানের সঙ্গে কথা বলছেন লেখক
সম্পর্কিত খবর

স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে

ক্রিকেট ম্যাচ, তার ওপর রবিবার। গতকাল তাই উদ্দাম পার্টির প্রস্তুতি ছিল রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উপড়ে পড়া গ্যালারির। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকে ডিজের মিউজিক, দর্শকদের ড্রাম পেটানো আর ট্রাম্পেটের চড়া সুরে কান পাতা দায়। সেই পার্টিই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যায় দারুণ ক্ষিপ্রতায় কুশল মেন্ডিসকে শামীম হোসেন রান আউট করতেই।
বিশ ওভারের ক্রিকেটে ছন্দ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুতলয়ের ক্রিকেটে ছন্দের সেই গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে পেয়ে আর পেছনে তাকায়নি বাংলাদেশ দল।
অবশ্য ম্যাচজুড়েই শামীমের প্রতিপত্তি দেখা গেছে।
কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন লিটন ও শামীম। অধিনায়কের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে তাওহিদ ফেরেন, একই ওভারে তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুমে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ধাক্কায় অবশ্য কাবু হওয়ার অবস্থায় নেই শামীম। আগের ম্যাচে ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকা এই বাঁহাতি শুরু থেকে চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। ওদিকে অধিনায়কও থিতু হয়ে গেছেন উইকেটে। তাঁরা জুটি বেঁধে ছোটান রানের গতি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে লিটন ও শামীম মিলে তোলেন ৭৭ রান, তা-ও মাত্র ২১ বলে! ১৩ ম্যাচ পর ফিফটির দেখা পান লিটন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বাদশ পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস। এক বাউন্ডারি আর পাঁচ ছক্কায় ৫০ বলে ৭৬ রান করে যখন আউট হন অধিনায়ক, ততক্ষণে লড়াইয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক পূঁজি এক রকম হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে স্ট্রাইক পেতে মরণপণ দৌড়েও ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি শামীম। তাতে ২৭ বলে তাঁর ৪৮ রানের ইনিংস পঞ্চাশ ছুঁতে না পারার আক্ষেপে শেষ হয়েছে। অবশ্য তাঁর মনে কোনো আক্ষেপ নেই, ‘দল জিতেছে। তাতে অবদান রাখতে পেরেছি। এতেই আমি খুশি।’ শামীম আরো খুশি ১৬ জুলাই কলম্বোয় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা নয়, জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
ম্যাচ শুরুর আগের রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের চালচিত্র না বললেই নয়। হাজার তিরিশেক দর্শকের ঠাঁই হয় এ মাঠে। তবে দুই দিন ধরে টিকিটের জন্য আহাজারি শোনা যাচ্ছিল, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল যে পর্যাপ্ত আসন নেই। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে গ্যালারি ভরে গেছে। বরাবরের মতো গ্যালারি লাগোয়া গাছেও চড়ে বসেন বিনা টিকিটের দর্শক। তাই বলে সিঁধ কেটে বিনা টিকিটের দর্শক ঢোকে ডাম্বুলায়, সেটি অজানা ছিল। গতকাল সেটিও দেখা হলো, বাংলাদেশ ইনিংসের ব্যাটিং পাওয়ার প্লে চলাকালে ভিআইপি স্ট্যান্ডের দিককার কাঁটাতারের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে অন্তত শ খানেক টিকিটহীন দর্শক ঢুকে পড়লেন স্টেডিয়াম চত্বরে। বিনা বাধায় যোগ দিলেন গ্যালারির উৎসবে। নিজ দলের ব্যাটিং ভরাডুবিতে ক্ষণে ক্ষণে লাউড স্পিকার থেমেছিল বটে। তবে পুরোপুরি থামেনি। পুরস্কার বিতরণীর পরও কিছু দর্শককে দেখা গেছে হাসিমুখে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তো বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেও গেলেন, ‘ওয়েল প্লেইড বাংলাদেশ!’

অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ব্যাটারির রিকশার দাপট বেড়েছে। সেগুলো জব্দে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল মালিবাগে অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দ করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি : ফোকাস বাংলা
।
মানবতাবিরোধী অপরাধ
বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ পলাতক ২৪ আসামিকে আত্মসমর্পণের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে বাংলা-ইংরেজি দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে। আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল রবিবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এর আগে ১০ জুলাই এই মামলার ২৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২২ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন। যে দুজন আসামি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তাঁরা হলেন রাফিউল হাসান রাসেল ও মো. আনোয়ার পারভেজ।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে চারজনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই মামলার শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। শুনানিতে তিনি বলেন, পলাতক আট আসামির গ্রেপ্তার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় প্রয়োজন। তখন ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। আদেশের সময় মামলার ১৬ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

হত্যা মামলায় জামিন
আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানার এনামুল হক নামের এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস জামিন পেয়েছেন। গতকাল রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনয়শিল্পী। এটাই আমার পেশা।
এদিন অপু বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি মুখে কালো মাস্ক, মাথায় সাদা ওড়না ও বোরকা পরেছিলেন। তাঁর আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
এরপর অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না।’ এ সময় আইনজীবীরা আহা আহা সাধু বলতে থাকেন। অনেক আইনজীবী উত্তেজিত হয়ে বলেন, অপু বিশ্বাস এমপি হতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার দোসর তিনি। এ সময় অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে।’ এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করতে দেখা যায়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে অপু বিশ্বাস গত ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। পরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিননামা দাখিল করেন তিনি।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার শ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন তিনি। মামলায় অপু বিশ্বাস, আশ্না হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকেও আসামি করা হয়। মামলায় এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে এই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার হন আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ মে জামিন পান তিনি।