ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫
৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ মহররম ১৪৪৭
ডেঙ্গু পরিস্থিতি

বেসরকারি আইসিইউতে খরচ চার-পাঁচ গুণ বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বেসরকারি আইসিইউতে খরচ চার-পাঁচ গুণ বেশি
শিশুর শরীরে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে থাকতে থাকতে শিশুটি বিষণ্ন হয়ে পড়েছে। তাই অভিভাবক তাঁকে নিয়ে হাঁটছেন। গতকাল রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে। ছবি : কালের কণ্ঠ

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছয় দিন ভর্তি ছিলেন গ্রিসপ্রবাসী পারভেজ খান। এতে তাঁর খরচ হয়েছে এক লাখ ৭৭ হাজার টাকা।

পারভেজ খানের ভাষ্য, মূল খরচ হয়েছে কেবিনের ভাড়া ও আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র)। ওই হাসপাতাল আইসিইউ শয্যার তিন দিনের ভাড়া নিয়েছে ৫৪ হাজার টাকা।

কেবিন ভাড়া ২১ হাজার টাকা। প্লাটিলেট নেওয়ার প্রক্রিয়ায় লেগেছে ২৪ হাজার টাকা। কনসালটেশন বাবদ ১৭ হাজার টাকা। পর্যবেক্ষণে ১৩ হাজার টাকা।
অন্যান্য পরীক্ষা ও ওষুধ কেনায় আরো বেশ কিছু টাকা খরচ হয়েছে। পারভেজ খানের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের চন্দনপুর এলাকায়। গত জুনে তিনি দেশে ছুটি কাটাতে আসেন। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এক দিন পর কোনো কারণ না জানিয়ে বলা হলো, আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে।
কিন্তু তখন আমার আইসিইউতে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি। তবু গেলাম। সেখানে কোনো চিকিৎসা নয়, শুধু বিছানায় শুইয়ে রেখে স্যালাইন দেওয়া হলো। এভাবে তিন দিন থাকার পর বলা হলো, এখন অবস্থা ভালো। আপনি কেবিনে যেতে পারেন।

পারভেজ খানের মতো অনেক ডেঙ্গু রোগীকে বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে এমন বিপুল ব্যয়ের ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে। রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোগের মাত্রাভেদে এসব রোগীর খরচ ৩০ হাজার থেকে চার লাখ টাকা। আইসিইউ সুবিধা নেওয়া রোগীদের খরচ বেড়েছে চার-পাঁচ গুণ।

ধানমণ্ডির আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে দুই দিন ভর্তি থাকার পর মারা যান জয়মিতা দাস (২৫)। রাজাবাজার এলাকার এই বাসিন্দার এক স্বজন জানায়, এক দিন আইসিইউতে থাকা ও প্লাটিলেট পরীক্ষার জন্য তাদের খরচ হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার টাকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায়ও একই চিত্র দেখা যায়। ২০১৯ সালে বিভাগটির অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ ও তাঁর সহকর্মীদের পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে একজন ডেঙ্গু রোগীর গড় খরচ ১১ হাজার টাকা। আর ঢাকার বাইরে থেকে আসা রোগীর সরকারি হাসপাতালে খরচ ২০ হাজার টাকা।

এ ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালকে গবেষকরা তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেন। ক শ্রেণির হাসপাতালে একজন রোগীর গড় খরচ ছিল দুই লাখ টাকা। খ শ্রেণির হাসপাতালে গড় খরচ ৪১ হাজার টাকা। সর্বশেষ গ শ্রেণির হাসপাতালে খরচ ছিল ২৫-২৬ হাজার টাকা। এসব খরচ রোগীর ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, শয্যার ভাড়া, চিকিৎসকের ফি, যাতায়াত ভাড়া বাবদ হিসাব করা হয়েছিল। বর্তমান বাস্তবতায় এটা কয়েক গুণ বেড়েছে।

অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, রোগীর আইসিইউ খরচ হাসপাতালের মান অনুযায়ী সরকার থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে তদারকিও করা দরকার, যাতে কেউ অযথা আইসিইউতে রোগী ভর্তি করে বাড়তি খরচ না নিতে পারে।

সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক আলোচনাসভায় বলেছেন, প্রত্যেক ডেঙ্গু রোগীর পেছনে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে খরচ হচ্ছে সরকারের। তিনি জানান, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা বাবদ এরই মধ্যে সরকারের খরচ হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টসের ২০২০ সালে পরিচালিত গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, মোট চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৮.৫ শতাংশ ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যয়ের মাধ্যমে বা আউট অব পকেট খরচ হয়েছে। বর্তমানে ডেঙ্গু চিকিৎসার ক্ষেত্রেও একই ধরনের চিত্র দেখা যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রমণ রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ঢাকার উচ্চবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্ত মানুষ পারতপক্ষে সরকারি হাসপাতালে যায় না। মধ্যবিত্তরা সামর্থ্য অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালে যায়। এরপর নিম্নবিত্তের একটি অংশ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়।

তিনি বলেন, ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যেসব এলাকায় রোগী বেশি, সেখানকার সরকারি হাসপাতালে জায়গা নেই। এসব এলাকার রোগীরা তখন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুর চিকিৎসায় প্যারাসিটামল আর স্যালাইনের ব্যবহার বেশি হওয়ায় খরচ নিতান্তই কম। কিছু ক্ষেত্রে রোগীর শারীরিক অবস্থার নিবিড় পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন হলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের ব্যয় লাখ টাকা ছাড়ানো কোনোভাবেই যৌক্তিক নয় বলে মনে করেন তাঁরা।

সোসাইটি অব মেডিসিনের সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এইচ এ এম নাজমুল আহসান বলেন, রোগীর প্রথম দিকে খুব বেশি চিকিৎসা লাগে না। প্যারাসিটামল, ওরাল স্যালাইন, এর সঙ্গে রোগীর জন্য তরল খাবার লাগে। এর বাইরে প্রতিদিন একটি করে সিবিসি পরীক্ষা করাতে হয়।

তিনি বলেন, কর্তব্যরত চিকিৎসক কোন কোন পরীক্ষা করাবেন, কোনটি করাবেন না, এগুলোর ওপর খরচ নির্ভর করে। বেসরকারিতে চিকিৎসকরা এসব খরচের দিকে নজর দিলে ব্যয় আরো কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এক দিনে মৃত্যু ১০, হাসপাতালে ভর্তি ২,৭৪৮

দেশে গত এক দিনে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ৭৪৮ জন। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির এমন তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত এক দিনে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে এক হাজার ৫১ জন ঢাকার, ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলার এক হাজার ৬৯৭ জন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের পাঁচজন ঢাকার হাসপাতালে এবং পাঁচজন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় মারা গেছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৩৫, মৃতের সংখ্যা ৭১৬।

 

৪৫ শতাংশ রোগী ঢাকা মহানগরের

দেশে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর ৪৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরের। এসব রোগীর মধ্যে ৫৮.৩২ শতাংশ চিকিৎসা নিয়েছে সরকারি হাসপাতালে। ৪১.৬৮ শতাংশ চিকিৎসা নিয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে।

চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া রোগীর ৭২ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। এর মধ্যে ৭৩ শতাংশ মারা গেছে সরকারি হাসপাতালে। ২৭ শতাংশের মৃত্যু বেসরকারি হাসপাতালে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণে এই উপাত্ত পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত আগস্টে ৩১ দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩৪২ জন। হাসপাতালে ভর্তি হয় ৭১ হাজার ৯৭৬ জন। চলতি সেপ্টেম্বরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২১ হাজার ৫২৭ জন, মারা গেছে ১২৩ জন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বান্দরবানে সারজিস অবাঞ্ছিত ও এনসিপির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান ও রাঙামাটি প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান ও রাঙামাটি প্রতিনিধি
শেয়ার
বান্দরবানে সারজিস অবাঞ্ছিত ও এনসিপির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

পার্বত্য বান্দরবানের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য করায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে জেলার ছাত্রসমাজ। একই সঙ্গে বান্দরবানে এনসিপির সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা এসেছে ছাত্রনেতাদের পক্ষ থেকে।

গতকাল রবিবার দুপুরে বান্দরবান প্রেস ক্লাবে ছাত্রসমাজের ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় ছাত্রনেতারা বলেন, গত ৩ জুলাই পঞ্চগড়ে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার এক সমাবেশে বান্দরবানকে শাস্তিস্বরূপ চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বদলির জায়গা বলে মন্তব্য করেন সারজিস আলম।

এই বক্তব্যকে তাঁরা চরম অবমাননাকর ও জাতিগত বৈষম্যপূর্ণ বলে আখ্যা দেন।

ছাত্রনেতারা জানান, ওই মন্তব্যের পর তাঁরা এনসিপির স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সারজিস আলমকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার অনুরোধ করেন। তাঁরা আশ্বাসও পান, ১৯ জুলাই বান্দরবানের পদযাত্রা কর্মসূচিতে সারজিস আলম ক্ষমা চাইবেন। কিন্তু ওই কর্মসূচিতে তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং এনসিপির কেন্দ্রীয় কোনো নেতা বিষয়টি নিয়ে মুখও খোলেননি।

বান্দরবান ছাত্রসমাজের নেতা আসিফ ইসলাম বলেন, সারজিস আলম ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত বান্দরবানে তাঁর উপস্থিতি এবং এনসিপির সব কার্যক্রম অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। পার্বত্যাঞ্চলকে শাস্তির জায়গা বলা মানে আমাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি আসিফ ইকবাল, সহসভাপতি মাহির ইফতেখার, আমিনুল ইসলাম, খালিদ বিন নজরুল, হাবিব আল মাহমুদ প্রমুখ।

রাঙামাটিতে এনসিপির পদযাত্রায় পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

এদিকে গতকাল শনিবার রাঙামাটি শহরে এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে নেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থায় শহরের একমাত্র গণপরিবহন অটোরিকশা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এতে উচ্চ মাধ্যমিক, অনার্স ও পাস কোর্সের শত শত পরীক্ষার্থী চরম দুর্ভোগে পড়েন। পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছতে অনেককেই রোদে হেঁটে যেতে দেখা যায়।

রাঙামাটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবু সাইয়েদ আহমেদ বলেন, গাড়ি বন্ধ থাকায় সকালে প্রশ্নপত্র আনতেও সমস্যায় পড়ি। ৮৩৪ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা ছিল, অনেকে কেন্দ্রে পৌঁছতে দেরি করে।

এনসিপির পদযাত্রা দুপুরে শিল্পকলা একাডেমি থেকে শুরু হয়ে বনরূপা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

পদযাত্রার পর অনুষ্ঠিত সমাবেশে এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে গঠিত ১৯৭২ সালের সংবিধান বিভেদের সৃষ্টি করেছে। আমরা চাই সব জাতিগোষ্ঠীর অধিকার সমুন্নত রেখে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান রচনা করতে।

সমাবেশে এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, আমরা যদি ভুল করি, সেটা সংশোধন করব। তবে কথার প্রতিবাদে সহিংসতা কিংবা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হতে পারে না।

তবে সমাবেশের কারণে পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগের ঘটনায় ছাত্রদল ও সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে। ছাত্রদলের জেলা সভাপতি ফারুক আহমেদ সাব্বির বলেন, একটা রাজনৈতিক দল কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হলে পরীক্ষার দিন রাস্তায় সমাবেশ করে।

ফেসবুক পোস্টে দুঃখ প্রকাশ সারজিসের

সমালোচনার মুখে গতকাল দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন সারজিস আলম। তিনি লেখেন, সংগ্রাম, সৌন্দর্য ও সৌহার্দ্যের রাঙামাটি থেকে...

আমরা লড়াই করব সকল জাতিগোষ্ঠীর অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিয়ে; জুলাই পদযাত্রা থেকে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।

বান্দরবান নিয়ে কিছুদিন আগে একটি বক্তব্যে যে অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দচয়ন হয়েছে, সেটার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

মন্তব্য
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস

এ বছর তিনটি যৌথ সামরিক মহড়া চালাবে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
শেয়ার
এ বছর তিনটি যৌথ সামরিক মহড়া চালাবে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র এ বছর বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে তিনটি সামরিক মহড়া চালাবে এবং নতুন দক্ষতা সংযোজনের মাধ্যমে তাদের দীর্ঘদিনের অংশীদারি বজায় রাখবে। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস গতকাল রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।

যৌথ সামরিক মহড়া ও নতুন দক্ষতা সংযোজন প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলেছে, এগুলো আমাদের অভিন্ন নিরাপত্তা লক্ষ্যকে আরো দৃঢ় করবে। এই প্রচেষ্টাগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ এবং এই অঞ্চলকে আরো শক্তিশালী ও নিরাপদ করে তোলে।

টাইগার লাইটনিং মহড়া : টানা চতুর্থ বছরের মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী প্যাসিফিক টাইগার লাইটনিং মহড়া পরিচালনা করবে। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, বাস্তবধর্মী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমাদের সৈনিকরা সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান, শান্তিরক্ষা, জঙ্গলে অভিযান, আহতদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত সরিয়ে নেওয়া এবং তাৎক্ষণিক বিস্ফোরক ডিভাইস (আইইডি) প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুতি অর্জন করবে।

টাইগার শার্ক ২০২৫ মহড়া : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, টাইগার শার্ক (ফ্লাশ বেঙ্গল সিরিজের অংশ) একটি যৌথ প্রশিক্ষণ মহড়া যেখানে আমাদের দুই দেশের বিশেষ বাহিনী যুদ্ধকৌশল অনুশীলন করে। ২০০৯ সাল থেকে চলমান এই মহড়ায় প্যাট্রল বোট পরিচালনা এবং স্বল্পপাল্লার অস্ত্রের লক্ষ্যভেদে দক্ষতা অর্জনের অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা বাংলাদেশ স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ এবং প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডকে সংকট মোকাবেলায় আরো দক্ষ করে তুলবে।

এই যৌথ মহড়ার বিশেষ আকর্ষণ হলো উভয় দেশের ব্যবহৃত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম।

প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল মহড়া : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল। এই মহড়ায় আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, আমাদের সি-১৩০ বহরকে তুলে ধরা হবে। এটি দুর্যোগকালে আকাশপথে সরঞ্জাম সরবরাহ ও চলাচল সংক্রান্ত অভিযানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই মহড়াটি অনুসন্ধান ও উদ্ধার (এসএআর) এবং অ্যারোমেডিক্যাল কার্যক্রমের ওপরও গুরুত্ব দেয়, যা মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়াবে।

আরকিউ-২১ কর্মসূচি চালু : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সঙ্গে একত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি মানববিহীন আকাশযান ব্যবস্থা (ইউএএস) সক্ষমতা গড়ে তুলছে। বাংলাদেশ সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি রেজিমেন্ট নতুন আরকিউ-২১ ব্ল্যাকজ্যাক সিস্টেম পরিচালনা করবে। এই সম্মিলিত উদ্যোগ বাংলাদেশকে সমুদ্রসীমা পর্যবেক্ষণ, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনায় সক্ষম করে তুলবে।

মন্তব্য
ডাকসু নির্বাচন ২০২৫

তফসিল ২৯ জুলাই ভোট সেপ্টেম্বরে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
তফসিল ২৯ জুলাই   ভোট সেপ্টেম্বরে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর তফসিল ঘোষণা করা হবে আগামী ২৯ জুলাই। এরপর নির্বাচন সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। গতকাল রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অংশীজনদের নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এসব তথ্য জানান ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা, সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর, প্রোক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, অনুষদের ডিন, শিক্ষকদের প্রতিনিধি, হল প্রভোস্ট, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা।

স্বাগত বক্তব্য দেন ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী অংশীজনদের আগের পরামর্শের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সভায় জানানো হয়, নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ছয়টি নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে।

কেন্দ্রগুলো হলো১. কার্জন হল কেন্দ্র (পরীক্ষার হল) : ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল ও ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ২. শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র : জগন্নাথ হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৩. ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) : রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল ও কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্র : বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৫. সিনেট ভবন কেন্দ্র (অ্যালামনাই ফ্লোর, সেমিনারকক্ষ, ডাইনিংরুম) : স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন; ৬. উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র : সূর্য সেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, কবি জসীমউদ্দীন হল ও শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা এখানে ভোট দেবেন।

সভায় আরো জানানো হয়, ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গত ৬ জুন থেকে এ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আরো ৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত লাইট স্থাপন করা হয়েছে।

প্রোক্টরিয়াল মোবাইল টিমের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা গেটগুলোতে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ক্যাম্পাসের প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

মন্তব্য

আবারও মালিকদের ধর্মঘটের হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আবারও মালিকদের  ধর্মঘটের হুমকি

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি পাঁচটি দাবি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর সংশোধন, বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ২০ ও ২৫ বছর থেকে বাড়ানোসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে সমিতি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই দাবিগুলো না মানা হলে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণাও দিয়েছে তারা। গতকাল দুপুরে সমিতির কার্যালয়ে মালিক ও শ্রমিকদের যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এতে সারা দেশ থেকে পরিবহনের মালিক-শ্রমিক নেতারা যোগদান করে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো তুলে ধরে সরকারের প্রতি দাবিগুলো প্রস্তাব করেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. কফিল উদ্দিন। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনটি একটি প্রতিশোধপরায়ণ, নিপীড়নমূলক এবং ক্ষতিকর।

বিগত সরকারের আইনে বাণিজ্যিক মোটরযানের মধ্যে বাসের ইকোনমিক লাইফ ২০ এবং ট্রাকের লাইফ ২৫ বছর করা হয়েছে। এ আইনটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পরিবহন সেক্টরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। এতে ৭০ ভাগ গাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে মৌখিকভাবে দাবি করেছি, কোনে অস্থিরতা তৈরি না করে পরিবহন সেক্টরের মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বসে এই উদ্ভূত পরিস্থিতির নিরসন না করা হলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই সেক্টরে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ