পুরান ঢাকার নিমতলীতে ১৩ বছর আগে ভয়াবহ আগুনে নারী-শিশুসহ ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। এক পরিবারেরই মারা যায় ১১ জন। আরো কিছু পরিবারের একাধিক সদস্যের মৃত্য হয়। আহত হয় অর্ধশতাধিক।
জিডির তদন্তই শেষ হয়নি ১৩ বছরে
রেজোয়ান বিশ্বাস

২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীর নবাব কাটরার ৪৩ নম্বর বাড়ির বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে সৃষ্ট আগুন মুহূর্তেই আধাকিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল। গতকাল ৪৩ নম্বর বাড়ির সামনে নির্মাণ করা স্মৃতিস্তম্ভের সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায় ভুক্তভোগী মো. রিপনকে। ওই আগুনে তাঁর পরিবারের ছয় সদস্যের মৃত্যু হয় জানিয়ে রিপন বলেন, ‘১৩ বছরেও জানতে পারলাম না আগুনের ঘটনায় কে দায়ী। যে কেমিক্যালের কারণে আগুন লেগেছিল, সেই কেমিক্যাল গোডাউনের মালিক কে ছিলেন? যদি জানতে পারতাম উনি বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াইছে, তাহলে মনকে বুঝ দিতে পারতাম, মনে শান্তি পাইতাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৩ বছর আগে আগুনের ঘটনায় বংশাল থানায় একটি জিডি হয়। এরপর আর জিডির তদন্ত এগোয়নি। এমনকি বংশাল থানায় গিয়ে জিডির কপিও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সে সময় ঘটনা তদন্তে সরকারের তরফ থেকে একটি কমিটি করা হয়েছিল। ওই কমিটির সঙ্গে জিডির তদন্ত সমন্বয় করা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জানতে চাইলে জিডির তদন্তের বিষয়ে গতকাল বংশাল থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘১৩ বছর আগে নিমতলীতে আগুনের ঘটনায় ১২৪ জনের মৃত্যুর খবর জানি। তবে আমি থানায় নতুন। ওই ঘটনায় কোনো মামলা হলে বলতে পারতাম। সে সময়ে ঘটনার জিডির তদন্তের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’
নিমতলীতে রাসায়নিকের আগুনে পরিবারের ১১ সদস্যকে হারান মো. গোলাম এলাহী। গোলাম এলাহী বলেন, ‘রাসায়নিকের আগুনের ঘটনায় আমার পরিবারের ১১ জন নিহত হয়। দিনটি এলে মিলাদ-মাহফিলের পাশাপাশি কোরআন খতম দিই। এত বড় ক্ষতি যেন কারো না হয়।’ এ কথা বলার পর তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরান ঢাকার ৪৩ নবাব কাটরার আগুনে পোড়া সেই পাঁচতলা ভবনটি সংস্কার করা হয়েছে। এখন লোকজন বসবাসও করছেন। এ ছাড়া ওই ভবনের পাশে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার দিনে আজ শনিবার প্রতি বছরের মতো সকাল থেকে ভবনটির সামনে স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে মৃতদের স্মরণ করেন স্বজনহারা অনেক মানুষ। তাদের প্রতি জানানো হবে শ্রদ্ধা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘যে বাড়ির নিচতলা থেকে আগুন লেগেছিল, সেই বাড়ির মালিক হাজি গুলজার আলী। ধারণা করা হয়, তাঁর বাড়ির নিচতলার কেমিক্যাল গোডাউন থেকেই আগুনের সূত্রপাত।’
নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের সময় বংশাল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ছিলেন আবুল হাসান। তিনি এখন রমনা থানার ওসি। তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনায় সরকার একটি তদন্ত কমিটি করেছিল। তখন ওই কমিটির সঙ্গে পুলিশের তদন্ত সমন্বয় করা হয়েছিল।’
বংশাল থানায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিমতলীর ঘটনায় হওয়া জিডির সূত্র ধরে ১২৪ জনের মরদেহ ঢাকা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের জন্য স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। আগুনের ঘটনায় করা সেই জিডির কপি এখন থানার নথিতে আছে। তবে জিডির বিষয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে বংশাল থানা পুলিশের কাছে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
কেমিক্যাল গুদাম না সরানোয় ক্ষোভ : এলাকার সোলাইমান নামের একজন বলেন, নিমতলী ট্র্যাজেডিতে নারী, শিশুসহ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া পরিবারের কথা কেউ মনে রাখেনি। এ ঘটনার পর পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পদার্থের দোকান ও গুদাম সরিয়ে নেওয়ার জোরালো দাবি উঠেছে বারবার। সরকারও এ নিয়ে সময় বেঁধে দিয়েছিল। তবে আজও তা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ওই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছিল সাত বছরের শিশু স্বাধীনের। ঘটনাস্থলে গতকাল তার বাবা মো. মামুন বলেন, ‘সন্তান হারানোর বেদনা কী আমি বুঝি। আমার ছেলেটা যদি আজ বেঁচে থাকত তাইলে কত বড় হইত। এহনও পোলাডার কথা মনে হইলে খারাপ লাগে, এত বছর চইল্যা গেল, এহনও বিচার পাইলাম না।’
এ সময় এলাকার আরো কয়েকজন বলেন, সরকার চাইলে যেকোনো সময় বের করে ফেলতে পারে ওই কেমিক্যাল গোডাউনের মালিক কে ছিল।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, ৪৩ নম্বর নবাব কাটরার পাঁচতলার বাড়ির সামনে একটি স্মৃতিস্তম্ভের পাশে অনেক কালো রঙের ব্যানার টানানো হয়েছে। সেখানে লেখা, ‘৩ জুন নিমতলী ট্র্যাজেডি দিবস।’
এলাকাবাসী জানায়, নিমতলীর পর ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়াারি চুড়িহাট্টায় বড় আগুনে প্রাণহানির সংখ্যা ৭১। এ দুটি অগ্নিকাণ্ডের উৎস রাসায়নিকের গুদাম। এরপর আরো শতাধিক আগুনের ঘটনা এলাকাবাসীর মনে দাগ কেটেছে। তবু সেই রাসায়নিকের সঙ্গেই বাস করতে বাধ্য হচ্ছে স্থানীয়রা।
সম্পর্কিত খবর

শোভাযাত্রা

রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে জুলাই কন্যারা রিকশা শোভাযাত্রার আয়োজন করেন। ছবি : কালের কণ্ঠ
।
রাতে ফেসবুক পোস্ট ভোরে মিলল ঢাবি শিক্ষার্থীর মরদেহ
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবনির্মিত রবীন্দ্র ভবনের নিচ থেকে সঞ্জু বারাইক (২৩) নামের এক শিক্ষার্থীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে।
পুলিশ ও হল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার ভোর পৌনে ৬টার দিকে রবীন্দ্র ভবনের নিচ থেকে সঞ্জু বারাইককে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
জগন্নাথ হলের স্টাফ মানিক কুমার দাস বলেন, ‘ভোরবেলা দেখি ভবনের নিচে একজন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে অন্য স্টাফদের সহযোগিতায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাঁকে মৃত বলে জানান।’
শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মুনসুর বলেন, ‘রবীন্দ্র ভবনের পাশে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি।
ওসি আরো বলেন, ‘এ ঘটনায় আপাতত অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে রাত আড়াইটার দিকে সঞ্জুর নিজ ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে লেখা ছিল, ‘আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি, আমি দিনের পর দিন কাউকে ডিস্টার্ব করে গেছি, উল্টো মানুষকে দোষারোপ করা আমার একদম ঠিক হয়নি, আমি সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি দিনের পর দিন অন্যায় করেছি, নিজের দোষ ঢেকে অন্যজনকে দোষ দেওয়া আমার ঠিক হয়নি। আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমার কারণে কারো কোনো ক্ষতি হলে সেই দায় একান্তই আমার, আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সঞ্জু মানসিকভাবে কিছুটা অস্থিরতায় ভুগছিলেন বলে সহপাঠীরা জানিয়েছে। দুই দিন ধরে সে হলে ছিল না। রবিবার ভোর ৪টার দিকে হলে ফিরে আসে, তবে কিছুক্ষণ পরই ছাদের দিকে চলে যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফরা তাকে ভবনের নিচ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন।’

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে বিকল্প প্রস্তাব
৭৬ আসনের উচ্চকক্ষ ও সরাসরি ভোট, এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রার্থী
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের স্বার্থে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, উচ্চকক্ষের আসনসংখ্যা হতে পারে ৭৬ এবং এসব আসনের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে। একই সঙ্গে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে বিরোধ থাকায় সেখানেও বিকল্প প্রস্তাব আনা হয়েছে। সেখানে সংরক্ষিত নারী আসন বাদ দিয়ে বিদ্যমান সংসদীয় আসনের নির্বাচনে দলগুলোকে এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপের ১৩তম দিনে এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তবে দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। আজ মঙ্গলবার আবারও আলোচনা চলবে। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া।
কমিশন সূত্র জানায়, সংসদের উচ্চকক্ষের নতুন প্রস্তাবের বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলা ও প্রতিটি সিটি করপোরেশন এলাকা উচ্চকক্ষের একেকটি একেক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকা হিসেবে বিবেচিত বা চিহ্নিত হবে এবং প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকা থেকে সাধারণ ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে একজন করে উচ্চকক্ষের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। বর্তমানে দেশে ৬৪টি প্রশাসনিক জেলা ও ১২টি সিটি করপোরেশন রয়েছে বিধায় উচ্চকক্ষের আসনসংখ্যা হবে ৭৬। জাতীয় সংসদ (নিম্নকক্ষ) এবং উচ্চকক্ষের নির্বাচন একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষের নাম প্রস্তাব করা হয় সিনেট। রাজনৈতিক দলগুলোর অধিকাংশই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে একমত হলেও উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনের বিষয়ে মতভেদ দেখা দেয়। যে কারণে নতুন এই প্রস্তাব আনা হয়েছে।
সংলাপ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সমাজের বিরাজমান বৈচিত্র্যকে প্রতিনিধিত্ব করতে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু কী পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন হবে সে ব্যাপারে ঐকমত্য হওয়া যাচ্ছে না।
সংসদে নারীদের জন্য স্থায়ীভাবে ১০০ আসন করার ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন উল্লেখ করে কমিশনের সহসভাপতি বলেন, এ ক্ষেত্রেও পদ্ধতিগত প্রশ্ন এখনো রয়েছে। এ পদ্ধতি নির্ধারণে আমরা এখনো একমতের জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও নারী আসন বৃদ্ধির প্রশ্নে বিএনপি আগের অবস্থানে রয়েছে বলে জানান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, সংসদে নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার প্রস্তাবে বিএনপি একমত। তবে ওই আসনগুলোতে নির্বাচন বিদ্যমান পদ্ধতিতে হতে হবে।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, আমরা উচ্চকক্ষের বিষয়ে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা চালুর পক্ষে। অধিকাংশ দল এ বিষয়ে একমত। নারী আসনের বিষয়েও আমরা ১০০ আসনে পিআর পদ্ধতির পক্ষে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করেছে কমিশন। আমরা এর বিরোধী। নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন হতে হবে। কমিশন এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারীদের মনোনয়ন বাধ্যবাধকতার কথা বলেছে। আমরা এটি সমর্থন করি। তবে এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। এ জন্য আরো সময় প্রয়োজন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, কমিশনের কর্মকাণ্ড সংগত মনে হচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলো যেখানে দলের অভ্যন্তরে ৩০ শতাংশ নারীকে কমিটিতে রাখতে পারছে না, সেখানে ৩০ শতাংশ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার সামর্থ্য আছে বলে মনে করি না।
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, বর্তমান ৬৫ অনুচ্ছেদে সংরক্ষিত আসন চায় না কমিশন। আমরা বলেছি, সংরক্ষিত আসন ১০০ করতে। আর বর্তমান বাস্তবতায় ৩০ শতাংশ আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কঠিন বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, আমরা বলেছি এবার ৫ শতাংশ দেওয়া যেতে পারে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, কমিশন নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী সংরক্ষিত নারী আসন বাতিল ও ৩৩ আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যা এই মুহূর্তে অসম্ভব।
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন সেলিম বলেন, সংরক্ষিত নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার ক্ষেত্রে অধিকাংশ দল একমত।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, নারীদের সংরক্ষিত আসন দরকার নেই; বরং তাদের নির্বাচিত হয়েই সংসদে আসা উচিত।
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নারীদের পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নারীদের আসনে সরাসরি নির্বাচন করতে হবে। তিনটি সাধারণ আসন মিলে একটি নারী আসনে ভোট হতে হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদউদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, নারীদের সরাসরি নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারলেই তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।

খুলনায় যুবদল নেতা হত্যা
আরো একজন তথ্যদাতা গ্রেপ্তার, কিলিং মিশনের তিনজন এখনো অধরা
খুলনা অফিস

খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান মোল্লা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আলাউদ্দিনকে (২২) গতকাল সোমবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে রবিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাহবুবের অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য খুনিদের কাছে সরবরাহের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
এদিকে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে কিলিং মিশনের যে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করছে, তাদের কেউ এখনো ধরা পড়েনি।
শনিবার রাতে প্রথমে গ্রেপ্তার করা সজল শেখ নামের চরমপন্থী সদস্য বর্তমানে পুলিশি রিমান্ডে রয়েছে। আজ মঙ্গলবার রিমান্ড শেষে তাঁকে আবার আদালতে তোলা হবে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কেএমপির দৌলতপুর থানার ওসি মীর আতাহার আলী জানিয়েছেন।
যুবদল নেতা মাহবুবকে শুক্রবার দুপুরে দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বরপাশা পশ্চিম পাড়ার নিজ বাড়ির সামনে তিন অস্ত্রধারী প্রথমে একাধিক গুলি করে এবং পরে দুই পায়ের রগ কেটে হত্যা করে।
দৌলতপুর থানার ওসি জানান, ওই এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের ছেলে আলাউদ্দিনকে রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পশ্চিম মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সজলের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা দুজনই নিহত মাহবুবের অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য খুনিদের কাছে সরবরাহের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে খুনিরা এসে মাহবুব মোল্লাকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে।
কিলিং মিশনের তিন সদস্যকে দ্রুতই গ্রেপ্তর করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে পুলিশ।