বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারি এগিয়ে নেওয়ার সংকল্পের কথা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো বার্তায় তিনি ওই সংকল্পের কথা জানান।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, বাংলাদেশের জাতীয় দিবস উপলক্ষে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পাঠানো বার্তায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, ‘আপনাদের জাতীয় দিবস উপলক্ষে ভারতের জনগণ, সরকার এবং আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
’
দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বহুমুখী। আমাদের সহযোগিতার মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য, বহুমুখী সংযোগ, উন্নয়ন অংশীদারি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা, সক্ষমতা বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা এবং মানুষে মানুষে বিনিময়ের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্র। এ ছাড়া ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ এবং ‘পূর্বমুখী নীতি’, আমাদের ‘সাগর’ মতবাদ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশ। ভারত একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ এবং প্রগতিশীল বাংলাদেশের প্রতি তাঁর সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে।
’
অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় দিবস উপলক্ষে আমি আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
নরেন্দ্র মোদি বলেন, এই দিনটি আমাদের অভিন্ন ইতিহাস এবং ত্যাগের প্রমাণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের সম্পর্কের জন্য একটি পথপ্রদর্শক হিসেবে অব্যাহত রয়েছে, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিকশিত হয়েছে এবং আমাদের জনগণের জন্য নানা সুবিধা বয়ে এনেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একে অন্যের উদ্বেগ ও স্বার্থের প্রতি পারস্পরিক সংবেদনশীলতা এবং শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার অভিন্ন লক্ষ্য দ্বারা তাড়িত হয়ে এই অংশীদারি এগিয়ে নিতে আমরা সংকল্পবদ্ধ।
’
চীনা সরকারি সংবাদ মাধ্যম সিএমজি জানায়, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো বার্তায় বলেছেন, গত অর্ধ শতাব্দীতে চীন ও বাংলাদেশ সব সময় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচ নীতির ভিত্তিতে সম্পর্ক উন্নত করেছে, দুই দেশ সব সময় পরস্পরকে সম্মান করেছে, সমতাসম্পন্ন আচরণ করেছে এবং সহযোগিতা করেছে।
চীনা রাষ্ট্রপতি বলেন, দুই দেশের বিভিন্ন খাতের সহযোগিতা ফলপ্রসূ হয়েছে, যা দুই দেশের জনগণের জন্য বাস্তব কল্যাণ বয়ে এনেছে।
চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কোন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শি চিনপিং বলেন, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী এবং ‘চীন-বাংলাদেশ মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় বর্ষের’ সুযোগে দুই দেশের উচ্চমানের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ নির্মাণ এবং দুই দেশের সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারির সম্পর্কের অব্যাহত উন্নয়ন জোরদার করতে চান তিনি।
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াংও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন।
এদিকে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মার্কো রুবিও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমি বাংলাদেশের মানুষকে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানাই। উদযাপনের এই মুহূর্ত এমন এক সময়ে এসেছে, যখন অন্তর্বর্তী সরকার জাতিকে এমন একটি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করছে, যা বাংলাদেশের মানুষকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেবে।’
মার্কো রুবিও বলেন, একটি উজ্জ্বল ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে বাংলাদেশের যাত্রাকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার উন্নয়নে আমাদের অংশীদারত্ব অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিশেষ এই উপলক্ষে আমি উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং উভয় জাতিকে নিরাপদ, শক্তিশালী এবং আরো সমৃদ্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিকে পুনর্ব্যক্ত করছি।’
ঢাকায় রাশিয়া দূতাবাস জানায়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে ও রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন।