দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বেতন-ভাতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিক্ষকরা বেশ পিছিয়ে। বিশেষ করে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে। গত ১৫ বছরে সরকার একাধিকবার শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন করে শত শত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়েছে।
শিক্ষকদের বেতন-ভাতায় পিছিয়ে বাংলাদেশ
শরীফুল আলম সুমন

প্রাথমিক পর্যায়ে সহকারী শিক্ষকরা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর মর্যাদা পান।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, সৌদি আরবসহ বেশ কিছু দেশের শিক্ষকরা অনেক বেশি বেতন পান। বাংলাদেশি টাকার হিসাবে তাঁদের মাসিক বেতন গড়ে আট লাখ থেকে ১২ লাখ টাকা, যা বাংলাদেশের একজন শিক্ষকের কয়েক বছরের বেতনের সমান।
অবশ্য দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে শিক্ষকদের বেতন বেশি হলেও কয়েকটিতে জীবনযাত্রার ব্যয়ও অনেক বেশি। মালদ্বীপের শিক্ষকদের বেতন বাংলাদেশি টাকার অঙ্কে বেশি মনে হলেও সেখানে দ্রব্যমূল্য ও অন্যান্য খরচও অনেক বেশি।
বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি তথ্যে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের প্রারম্ভিক মাসিক বেতন প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ টাকা, ভারতে ৩৫ হাজার টাকা, পাকিস্তানে ৩০ হাজার টাকা, শ্রীলঙ্কায় ২৭ হাজার টাকা, নেপালে ৩৫ হাজার টাকা, ভুটানে ৩৩ হাজার টাকা ও মালদ্বীপে ৬৩ হাজার টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক এম তারিক আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের শিক্ষকদের বেতন কাঠামো দুর্বল, সেটা ঠিক। তবে আমরা দেখেছি, কয়েক বছর আগে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বেড়েছে। মাধ্যমিক এমপিওভুক্ত ও সরকারি শিক্ষকদের মধ্যে বেতনবৈষম্য রয়েছে। আবার যাঁরা নন-এমপিও, তাঁরা বেতনই পান না। নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষকদের দায়িত্ব বাড়ানো হচ্ছে। সেখানে তাঁদের বেতন-ভাতা বাড়ানো দরকার। আমার জানা মতে, সরকার এ ব্যাপারে ভাবছে।’
অধ্যাপক এম তারিক আহসান বলেন, ‘শিক্ষার অবকাঠামোতে বরাদ্দ বাড়লেই কিন্তু গুণগত মানের উন্নয়ন হবে না। শিক্ষকদের ক্ষমতায়ন, মান-মর্যাদা ও বেতন—তিনটিই সম্মিলিতভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা যদি ভুটানের দিকে তাকাই, তারা চিকিৎসক ও শিক্ষকদের সবচেয়ে বেশি বেতন দেয়। কোরিয়া, হংকং, জাপানে শিক্ষকদের আলাদা বেতন কাঠামো। এর ফল কিন্তু তারা পাচ্ছে। আমাদেরও স্মার্ট বাংলাদেশ হতে হলে শিক্ষকদের মর্যাদা আরো বাড়াতে হবে।’
সূত্র জানায়, আমাদের মাধ্যমিক শিক্ষার প্রায় ৯৭ শতাংশ বেসরকারি। মূলত এগুলো এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে কর্মরত প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী। সরকার সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডের সমপরিমাণ মূল বেতন দেয়। সেখানে তাঁদের ১৬ হাজার টাকা স্কেলে বেতন শুরু হয়। এর বাইরে তাঁরা বাড়িভাড়া বাবদ মাসে এক হাজার টাকা ও চিকিৎসা ভাতা বাবদ মাসে ৫০০ টাকা পান। সেই হিসাবে শুরুতে একজন শিক্ষক সরকারি ভাতা ১৭ হাজার ৫০০ টাকা পান। এর বাইরে যেসব স্কুলের আয় আছে, তারা ফান্ড থেকেও কিছু টাকা শিক্ষকদের দেয়। তবে সব স্কুল তা দিতে পারে না।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা উৎসব ভাতা পান মূল বেতনের ২৫ শতাংশ। তবে স্কুলের কর্মচারীরা উৎসব ভাতা পান মূল বেতনের ৫০ শতাংশ। এ ছাড়া তাঁরা সরকারি কর্মচারীদের মতো বৈশাখী ভাতা পান। তবে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যাঁরা সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে যোগ দেন, তাঁরা শুরুতেই দশম গ্রেডে ২৬ হাজার টাকা বেতন পান। এর বাইরে তাঁরা সন্তানদের পড়ালেখার জন্য ভাতা পান। পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতাসহ নানা ধরনের সুবিধা পান। তবে সরকারি বা এমপিওভুক্ত উভয় ধরনের স্কুলেই শিক্ষকরা উচ্চতর গ্রেড বিএড সম্পন্ন হলে আলাদা ইনক্রিমেন্ট পান, তাঁদের বেতনও কিছুটা বাড়ে। কিন্তু সারা দেশে প্রায় ৩২ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও সেখানে মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি স্কুলের সংখ্যা মাত্র ৭০০-র কাছাকাছি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ব্যাপারে সব সময় আন্তরিক। আমরা চাই, তাদের বেতন-ভাতা বাড়ুক। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উৎসব ভাতা ও বাড়িভাড়া বাড়াতে একটা হিসাব করছি, যা শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। সরকার হয়তো তাদের সক্ষমতা বিবেচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’
অন্যদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা এখনো তৃতীয় শ্রেণির মর্যাদা পান। স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডের বেতন স্কেলে মূল বেতন ১১ হাজার টাকা, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা ও টিফিন ভাতা মিলিয়ে শুরুতে প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পান। সারা দেশে এই সহকারী শিক্ষকদের সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। এর বাইরে তাঁরা নিয়মানুযায়ী সন্তানদের জন্য শিক্ষা ভাতা পান।
এ ছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকরা শুরুতে নবম গ্রেডে ২২ হাজার টাকা স্কেলে বেতন পান। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এই বেতন স্কেলের বাইরে খুব একটা সুবিধা না পেলেও সরকারি কলেজ ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বাড়িভাড়া, যাতায়াত, চিকিৎসাসহ আরো নানা সুবিধা পান।
উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যায়, তারা প্রাথমিক শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। সবচেয়ে বেশি মেধাবীদের নিয়োগ দেওয়া হয় প্রাথমিকে। তাঁদের বেতন-ভাতাও অন্যান্য শিক্ষকদের চেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল বাশার হাওলাদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকতা পেশা কিন্তু দিন দিন শ্রীহীন হয়ে পড়ছে। অনেকে অন্য কোনো চাকরি পেলে শিক্ষকতা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। এখন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার পদ খালি। কিন্তু শিক্ষক হিসেবে যোগদান করতে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন না। এর মূল কারণ শিক্ষকদের মানবেতর জীবন। এত অল্প টাকা বেতন পেয়ে কোনোভাবেই তাঁরা চলতে পারছেন না। আমরা এখন আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার দিকে যাচ্ছি। এই সময়ে শিক্ষকদের বেতন-ভাতার উন্নয়ন সবার আগে জরুরি হয়ে পড়েছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ‘আমাদের শিক্ষকদের বেতন যেহেতু কম, তাই তাঁরা অন্য কিছু করার চেষ্টা করেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকতা পেশায় ঢুকলেই তাঁরা প্রাইভেট-কোচিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এখানে আয় বেশি হওয়ায় স্কুলের চেয়ে তাঁরা প্রাইভেটেই বেশি মনোযোগী হন। সরকার বারবার প্রাইভেট-কোচিং বন্ধ করার চেষ্টা করলেও এতে সফল হয়নি।’
শিক্ষকরা বলছেন, সরকার নতুন শিক্ষাক্রম চালু করেছে। সেখানে শিক্ষকদের অংশগ্রহণ অনেক বেশি বেড়েছে। কিন্তু বেতন-ভাতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এমনকি ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের প্রস্তাব করা হলেও, তা বাস্তবায়নে এখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি ২০১০-এর সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শিক্ষার উন্নয়নে আগে শিক্ষকদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়াতে যেমন উদ্যোগ নিতে হবে, তেমনি তাঁদের বেতন-ভাতাও সম্মানজনক হতে হবে। আমরা যদি পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেই তুলনা করি, তাহলে দেখা যাবে তাদের শিক্ষকদের বেতন আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। শিক্ষকদের জন্য আমরা স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর কথা বলেছিলাম, সেটার কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। এখন দক্ষতার ভিত্তিতে বেতন কাঠামোর সংশোধন আনা প্রয়োজন। নয়তো মেধাবীরা আগামীতে শিক্ষকতায় আসবেন না।’
সম্পর্কিত খবর

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদ
সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীদের অংশগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার দুপুরে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিল শাহবাগ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মিটফোর্ড হাসপাতালে গিয়ে শেষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর ১টার দিকে ধানমণ্ডির আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্স ল্যাবে উপস্থিত হয়ে ১০ মিনিট অবস্থান করেন। এরপর তাঁরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে যান।
এ সময় হাসপাতাল ও আশপাশে থাকা বিএনপির ব্যানার ছিঁড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় কয়েকজনকে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিসংবলিত ব্যানার পদদলিত করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার পর অনেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীর ছদ্মবেশে রাজপথে সক্রিয় হচ্ছে। কেউ কেউ আবার বিএনপির প্ল্যাটফর্মে ঢুকে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে।
রাজনৈতিক পরিচয় : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্ষোভের বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া ‘আইডিয়াল কলেজ শিক্ষার্থী’ ইয়ামিনকে তাঁর সহপাঠীরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। আগেও তাঁকে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।
নেপথ্যে রাজনৈতিক হিসাব : রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. দিলারা চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটি রাজনৈতিক দলগুলোর ভিত নষ্ট করার একটি অপচেষ্টা। এর ফলে আবারও ১/১১-এর মতো সংকট সৃষ্টি হতে পারে। রাজনৈতিক দলে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ বাড়ছে। সোহাগ, যিনি আগে হাজি সেলিমের সঙ্গে ছিলেন, এখন বিএনপির কর্মী। বিএনপি যদি নিজেকে রক্ষা করতে চায়, তাহলে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদারের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে ডিএমপি উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ওই মিছিলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের উপস্থিতির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে নিষিদ্ধ যেকোনো দলের কার্যক্রম রুখে দিতে পুলিশ সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। এর আগেও রাজধানীতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে যারা ঝটিকা মিছিল করেছে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এই বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখব।’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলীল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যারা গুপ্ত রাজনীতি করে এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায় তারা জল ঘোলা করতে এমন কর্মকাণ্ড করছে। তারা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারমান তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তিমূলক ভিডিও করেছে। তাদের ব্যানার পদদলিত করে আগুন জ্বালিয়েছে। যারা স্বৈরাচারের আমলে তাদের লুঙ্গির নিচে ছিল, তারাই এখন ঘোলা জলে মাছ শিকার করা চেষ্টা করছে। জনগণের কাছে তাদের অবস্থান না থাকার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পেছনে থেকে গুপ্ত হামলা করার চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, “পুলিশের তদন্তে এসেছে ‘ব্যাবসায়িক দ্বন্দ্ব’ থেকে সোহাগ হত্যাকাণ্ড। এর পরও আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে শোক জানিয়েছি, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। একই সঙ্গে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জোর দাবিও জানিয়েছি।”

বড় ধরনের সহিংস অপরাধের সংখ্যা বাড়েনি : প্রেস উইং
১০ মাসে ৩৫৫৪ খুন, ৪১০৫ ধর্ষণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ১০ মাসে (২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত) দেশে তিন হাজার ৫৫৪ জন খুনের ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে ডাকাতি হয়েছে ৬১০টি, দস্যুতা এক হাজার ৫২৬টি, দাঙ্গা ৯৭টি, ধর্ষণ চার হাজার ১০৫টি, এসিড নিক্ষেপ পাঁচটি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১২ হাজার ৭২৬টি, অপহরণ ৮১৯টি, সিঁধেল চুরি দুই হাজার ৩০৪টি, চুরি সাত হাজার ৩১০টি এবং এই সময়ে রুজুকৃত মামলার সংখ্যা এক লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৫টি।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ১০ মাসের অপরাধ পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এসব পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে।
অপরাধ পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে দেশে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ৩৬৭টি, খুন হয়েছে এক হাজার ৯৩৩টি এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার ৭৪৪টি। এ সময় নারী নির্যাতন ছয় হাজার ১৪৪টি এবং শিশু নির্যাতনের দুই হাজার ১৫৯টি ঘটনা ঘটেছে।
এর আগের বছর ২০২৪ সালে ডাকাতি হয়েছিল ৪৯০টি, খুন চার হাজার ১১৪টি, ধর্ষণ চার হাজার ৩৯৪টি, নারী নির্যাতন ১০ হাজার ১৯৮টি এবং শিশু নির্যাতন দুই হাজার ৯৬৪টি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি বছর দেশে অপরাধের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরে জনমনে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সরকারি অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছর বড় ধরনের অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে—এমন দাবি সঠিক নয়। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ মাসে বড় ধরনের অপরাধের প্রবণতা স্থিতিশীল রয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, পরিসংখ্যানে বড় ধরনের অপরাধের দ্রুত বাড়ার কোনো লক্ষণ নেই। বাস্তবে বেশির ভাগ গুরুতর অপরাধের হার কমছে বা একই পর্যায়ে রয়েছে।
প্রেস উইং নাগরিকদের প্রতি সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ওপর আস্থা রাখতে হবে। কারণ অপরাধের হার মোটামুটি স্থিতিশীল, যাতে বোঝা যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

মা-সন্তানসহ ৫ জেলায় সাতজনকে হত্যা
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

ময়মনসিংহের ভালুকায় দুই সন্তানসহ মাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জে শিশুকে হত্যা করে ঘরে লুকিয়ে রেখেছে সত্মা। এ নিয়ে দেশের পাঁচ জেলায় সাতজনকে খুন করা হয়েছে। আর তিন জেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চারজনের লাশ।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) : পৌর এলাকার পনাশাইল রোডে এক ভাড়া বাসায় মা ও দুই সন্তানকে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলো নেত্রকোনার কেন্দুয়ার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ময়না বেগম (২৫), মেয়ে রাইসা (৭) ও ছেলে নীরব (২)।
স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম এখানে ভাড়া থেকে ভালুকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। রবিবার রাত ৮টার সময় তিনি কর্মস্থলে যান এবং গতকাল সকালে ফিরে বাসার বারান্দার দরজা তালাবদ্ধ দেখেন।
রফিকুলের ভাই নজরুল ইসলাম একই বাসায় পাশাপাশি কক্ষে থাকেন। নিজ এলাকার একটি হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামি নজরুল ভালুকায় অটো চালাতেন। ঘটনার পর থেকে তিনি নিরুদ্দেশ, তাঁর মোবাইল ফোনটিও বন্ধ।
সিরাজগঞ্জ : কামারখন্দ উপজেলায় সাত বছর বয়সী এক কন্যাশিশুকে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে ঘরে লুকিয়ে রেখে এক সত্মা পালিয়ে যান। রবিবার রাত ১০টার দিকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ওই রাতেই সত্মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত শিশু হাজেরা খাতুন উপজেলার কুটিরচর এলাকার হারুনার রশিদের মেয়ে। শিশুটির দাদি মনোয়ারা খাতুন জানান, রবিবার দুপুরে শিশু হাজেরা স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এদিকে সিরাজগঞ্জ সদর ও তাড়াশ উপজেলা থেকে গতকাল সকালে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সদরে উদ্ধার হওয়া আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। সদর থানার এসআই শফিউল আলম জানান, তাঁর মাথা ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন আছে।
অন্যদিকে তাড়াশে নিহত সেলুনকর্মী শান্ত (২০) ঈশ্বরপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে। তাড়াশ থানার ওসি জিয়াউর রহমান জানান, সকালে নিজ ঘর থেকে শান্তর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বারহাট্টা থানার ওসি কামরুল হাসান জানান, আহাদুলের সঙ্গে প্রতিবেশী মনহর আলী ও তাঁর চার ছেলে আলমগীর, অনিক, নির্ঝর ও বাবুর জমিসংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তার জেরেই ওরা ঢাকা থেকে এসে হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
চট্টগ্রাম : পতেঙ্গা থানার কাটগড় এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে ছুরিকাঘাতে ফেরদৌসী আক্তার নামের এক নারী খুন হয়েছেন। রবিবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফেরদৌসী এলাকার লোকমান হোসেনের স্ত্রী। নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে ফেরদৌসীর দেবর তাঁর ঘাড়, পিঠ ও পেটে ছুরিকাঘাত করে।
নিহতের ভাই মামুন খান বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমার বোনকে তাঁর স্বামী, শাশুড়ি পরিবারের লোকেরা নির্যাতন করে আসছিল। আমরা একটি সিসিটিভির ফুটেজে দেখেছি, লোকমানের বড় ভাই সোলেমান ও ছোট ভাই রনির হাতে ছুরি। আমরা খুনিদের বিচার চাই।’
ঘটনার পর ফেরদৌসীর স্বামী লোকমানকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। শ্বশুরবাড়ির বাকি লোকজন পলাতক।
বারহাট্টা (নেত্রকোনা) : জমিসংক্রান্ত বিরোধে আহাদুল মিয়া (২৬) নামের এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল দুপুরে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে রবিবার রাতে উপজেলার বাউশী ইউনিয়নের শাসনউড়া গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। আহাদুল মিয়া ওই গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে।
নরসিংদী : এক মাদক কারবারির বাড়ি থেকে সাজিদ হোসেন (২২) নামে এক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের বাগহাটা টেকপাড়া গ্রামে দুলালের বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, নিহত যুবকের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। আবার যার বাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে তারাও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তবে নিহতর পরিবারের অভিযোগ, মাদক ব্যবসায়ী দুলালের বাড়িতে নির্যাতন করে সাজিদকে হত্যা করা হয়েছে।
পাবনা : পুকুরে ভাসমান অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে শহরের লাইব্রেরি বাজার এলাকার কলাবাগান কলোনির মিঠুর পুকুর থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত যুবকের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে আনুমানিক বয়স হবে ৪০ বছর।
গাজীপুর : নিখোঁজের ছয় দিন পর এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বিকেলে মহানগরীর ধীরাশ্রম এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নাবিলা কানিজ সাবা ধীরাশ্রমের দাখিনখান এলাকার নাসির মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার শিশুটি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান না পেয়ে রাতে শিশুটির মা খাদিজা বেগম সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। গতকাল বাড়ির পাশে ঝোপের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে স্থানীয়রা বস্তাটির সন্ধান পায়। বস্তা খুলে সাবার গলিত লাশ পাওয়া যায়।

ফাঁকিবাজদের আতঙ্ক আয়কর গোয়েন্দা
হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন ১৮৩ ভিআইপি
নিজস্ব প্রতিবেদক

যাত্রা শুরুর মাত্র সাত মাসের মধ্যেই কর ফাঁকিবাজদের আতঙ্ক হয়ে উঠেছে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। এ সময় ১৮৩ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এক হাজার ৮৭৪ কোটি টাকার কর ফাঁকি উদঘাটন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ১১৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বাকি টাকা আদায়ের প্রচেষ্টাও চলছে বলে জানা গেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানায়, এক হাজার ৭৮৮টি বিভিন্ন শ্রেণির ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি ও অর্থপাচার মামলা তদন্ত করছে আয়কর গোয়েন্দা। এঁদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, খেলোয়াড়, অভিনেতা-অভিনেত্রী, ডাক্তার, আইনজীবী, প্রকৌশলী, শিক্ষক, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব পর্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি রয়েছেন। এনবিআরের অধীন ৪১টি কর অঞ্চল ও দেশের ৬৪ জেলার করদাতারাও এ কার্যক্রমের আওতায় রয়েছেন।
এয়ার টিকিট সিন্ডিকেট, পরিবহন ব্যবসায়ী, শেয়ারবাজার, আমদানি ও মজুদকারী, চালান জালিয়াতকারী, জুয়াড়ি, ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির পাশাপাশি কমেছে জনদুর্ভোগ।
আয়কর গোয়েন্দার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি। তবে কর্মচারী নিয়োগ ও ভাড়া অফিসে স্থানান্তরের পর মূল কার্যক্রম চালু হয়েছিল ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর।
কর প্রশাসনে দক্ষ গোয়েন্দা গঠন, কর ফাঁকি, অর্থপাচার, বিভিন্ন আর্থিক অপরাধ শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, রাজস্ব পুনরুদ্ধার করা, স্বচ্ছতা-জবাবদিহি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, কর ফাঁকির তদন্তে অর্থের উৎস যাচাই করা ও দায়িত্বশীল অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে যৌথ কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে এই বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
জানা গেছে, বিশেষায়িত এই গোয়েন্দা ইউনিট অল্প সময়ের ব্যবধানে সফলতা দেখালেও তার নেই প্রয়োজনীয় জনবল ও স্থায়ী অফিস ভবন। শুরুতে এনবিআর ভবনে অস্থায়ী কার্যালয় থাকলেও পরে ভাড়া করা অফিসে যাবতীয় কাজ করছে রাজস্ব ফাঁকি ঠেকিয়ে দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি।
জানতে চাইলে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কমিশনার মো. আবদুর রকিব কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আয়কর গোয়েন্দা অল্প সময় ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই ইউনিটের সদস্যসংখ্যা কম হলেও তাঁরা মেধাবী ও পরিশ্রমী। তাঁদের কাজের প্রতি একাগ্রতা থাকায় আমরা সামগ্রিকভাবে ভালো করতে পারছি। তবে জনবল সংকট, প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট পেলে এই ইউনিট দেশের জন্য আরো অনেক কিছু করতে পারবে। আমরা চাই দেশে একটি নতুন কর সংস্কৃতি। যেখানে কেউ কর ফাঁকি দিতে পারবেন না।’
জানা গেছে, ভবিষ্যতে এই ইউনিটের জন্য ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনের চিন্তা করা হচ্ছে। কর ফাঁকি-অর্থপাচার রোধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক, প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। এ ছাড়া কর ফাঁকিবাজদের ডেটাবেইস তৈরি, নিয়মিত তল্লাশি-জব্দকরণ অভিযান পরিচালনা, কর নেটের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কাজও করবে এই ইউনিট।