<p>প্রতিদিন দুই ট্রাক জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতি দুই দিনে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার লিটার জ্বালানির অনুমতি দেওয়া হবে। এর বেশির ভাগই পানি ও স্যানিটেশন সরবরাহে জাতিসংঘকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে এবং বাকিটা মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য। যেগুলো জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।</p> <p>স্থানীয় সময় শুক্রবার গাজার যোগাযোগ সরবরাহকারী সংস্থাটি বলেছে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ‘ইউএনআরডাব্লিউএ’-এর মাধ্যমে কিছু জ্বালানি পাওয়ার পর তাদের পরিষেবাগুলো আবার চালু করতে পেরেছে। মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, এই জ্বালানি চুক্তির জন্য ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ওপর যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করেছে। চুক্তির জন্য ইসরায়েল আগেই নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছিল বলে কর্মকর্তারা বলেছেন। কিন্তু দুটি কারণে ইসরায়েল দেরি করেছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছিলেন, দক্ষিণ গাজায় জ্বালানি আসলে শেষ হয়নি। এর জন্য তারা অপেক্ষা করতে চেয়েছিল। এ ছাড়া জ্বালানি দেওয়ার আগে প্রথমে জিম্মি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল। </p> <p>‘ইউএনআরডাব্লিউএ’-এর প্রধান বৃহস্পতিবার সতর্ক করে বলেছিলেন, জ্বালানির অভাবের কারণে তাদের সব কার্যক্রম স্থগিত করতে হতে পারে। সর্বশেষ পরিস্থিতি প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, ‘মৌলিক মানবিক কার্যক্রমের জন্য প্রতিদিন এক লাখ ৬০ হাজার লিটার জ্বালানির প্রয়োজন।’  এর আগে একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছিলেন, জ্বালানি  রাফাহ ক্রসিংয়ের মাধ্যমে দক্ষিণ গাজা উপত্যকার বেসামরিক জনগণের কাছে জাতিসংঘের মাধ্যমে যাবে। তবে শর্তে বলে দেওয়া হয়েছে, জ্বালানি যেন হামাসের কাছে না পৌঁছে।</p> <p>ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, জ্বালানি দেওয়ার উদ্দেশ্য পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে সহায়তা দেওয়া। যাতে এই অঞ্চলে মহামারির প্রাদুর্ভাব রোধ করা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার গাজা উপত্যকায় উদ্ভূত মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) এর আগে গাজায় রোগ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সতর্ক করেছিল। যেখানে জ্বালানির অভাব এবং ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও স্যানিটেশন সুবিধাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। </p> <p>ফিলিস্তিন অঞ্চলে ডাব্লিউএইচওর প্রতিনিধি রিচার্ড পিপারকর্ন বলেছেন, ৭০ হাজারের বেশি মানুষ তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ভুগছে। এ ছাড়া ৪৪ হাজারের বেশি শিশুর ডায়রিয়ার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বলছে, পরিসংখ্যানে উঠে আসা সংখ্যা প্রত্যাশার চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। গাজায় জ্বালানির অভাবে ভুগছে হাসপাতালগুলো। রোগী মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে চলছে। এ ছাড়া বাড়ি, স্যানিটেশন, পরিবহন এবং যোগাযোগ অবকাঠামোর জন্য জ্বালানি প্রয়োজন।</p> <p>হামাস তেল চুরি করতে পারে এবং সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারে এই যুক্তি দেখিয়ে ইসরায়েল জ্বালানি প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছিল। সর্বশেষ যুদ্ধের আগে ইসরায়েল গাজায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ করত। যুদ্ধর পর ইসরায়েল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এরপর গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও বন্ধ হয়ে যায়।</p> <p>এদিকে রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরের বালাতা শরণার্থীশিবিরের একটি ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা প্রতিবেদনগুলো তদন্ত করে দেখেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ইসরায়েলকে বলেছেন, ‘পশ্চিম তীরে উত্তেজনা কমাতে এবং বসতি স্থাপনকারী চরমপন্থী সহিংসতার ক্রমবর্ধমান মাত্রার মোকাবেলা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ দরকার।’ </p> <p>সূত্র : <strong>বিবিসি</strong></p>