<p>ঈমানদার ব্যক্তি উত্তম চরিত্রের অধিকারী হয়। চারিত্রিক সৌন্দর্যের একটি হলো উলফত। যাকে বাংলায় অন্তরঙ্গতা, হৃদ্যতা, ভালোবাসা বলা যেতে পারে। আল্লামা জুরজানি (রহ.)-এর মতে, উলফতের পারিভাষিক অর্থ হলো সামাজিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।</p> <p>পবিত্র কোরআনে মুমিন বান্দাদের সামাজিক ঐক্যের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা সবাই আল্লাহর রশি দৃঢ়ভাবে ধারণ করো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহকে স্মরণ করো; তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করলেন। ফলে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে পরস্পর ভাই ভাই হয়ে গেলে। তোমরা অগ্নিকুণ্ডের (দোজখের) প্রান্তে ছিলে, অতঃপর তিনি (আল্লাহ) তা থেকে তোমাদের উদ্ধার করেছেন। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নিদর্শন স্পষ্টভাবে বিবৃত করেন, যাতে তোমরা সৎপথ পেতে পারো।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৩)</p> <p>উল্লিখিত আয়াতে মুমিনদের ঐক্যবদ্ধ থাকার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এবং  কোরআন-সুন্নাহর পথ শক্তভাবে আঁকড়ে ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে যেমন মুমিনরা সামাজিকভাবে শক্তিশালী হবে, তেমনি তাদের সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসবে, যা মহান আল্লাহর অত্যন্ত বড় নিয়ামত। উপরোক্ত আয়াতের শেষাংশে মহান আল্লাহ তাঁর সেই নিয়ামতের কথাই স্মরণ করিয়েছেন। জাহেলি যুগে যারা একে অপরের প্রাণপণ শত্রু ছিল, মহান আল্লাহ ঈমান  আনার পর তাদের পরম বন্ধুতে রূপান্তরিত করেছিলেন।</p> <p>পরস্পর আন্তরিকতা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। রাসুল (সা.) বলেন, মুমিন আন্তরিক হয় এবং আন্তরিকতা পায়, যারা আন্তরিক হয় না এবং আন্তরিকতা পায় না, তাদের মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। (মুসনাদে আহমদ)</p> <p>অর্থাৎ মুমিন তার ঈমান, সচ্চরিত্র ও নম্রতার কারণে অন্য মুমিনের হিতাকাঙ্ক্ষী হয়, আন্তরিক হয়, ফলে সে-ও অন্যদের আন্তরিকতা পায়। আর যার ঈমান নেই অথবা চারিত্রিক ত্রুটি আছে, তার মধ্যে অন্য মুমিনের প্রতি আন্তরিকতা কাজ করে না, ফলে সে-ও কারো আন্তরিকতা পায় না।</p> <p>মহান আল্লাহ প্রত্যেক মুমিনকে পরস্পর আন্তরিক ও হিতাকাঙ্ক্ষী হওয়ার তাওফিক দান করুন।</p>