<p>কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জিঞ্জিরাম নদে খেওয়ারচর রাবার ড্যামটি দীর্ঘ ৯ বছরেও চালু করা যায়নি। রাবার ড্যামের কাজ শেষ হলেও নদের দুই তীরে বাঁধ তৈরি না করায় এটি চালু করা যাচ্ছে না। ফলে যে উদ্দেশ্য সামনে রেখে রাবার ড্যামটি নির্মাণ করা হয়, তা ব্যাহত হচ্ছে।</p> <p>রৌমারী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অল্প খরচে সীমান্ত এলাকার ১০ হাজার হেক্টর বোরো ক্ষেতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ২০১০ সালের জুনে জিঞ্জিরাম নদে ৮৫ মিটার রাবার ড্যাম নির্মাণের কাজ শুরু হয়, যা ২০১৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। একই প্রকল্পের আওতায় সায়েদাবাদ বাজার থেকে খেওয়ারচর বাজার পর্যন্ত রাস্তা পাকাকরণ ও সিসি ব্লক ফেলা এবং নদীর দুই তীরে বাঁধ নির্মাণকাজও অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু ‘জয়েন্ট ভেঞ্চার’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই বরাদ্দকৃত টাকা তুলে নেয়। এ অবস্থায় প্রকল্পের কাজ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরে আরো দেড় কোটি টাকার সংযুক্ত দরপত্র আহ্বান করে কাজ শেষ করার জন্য খন্দকার বিজনেস ইন্টারন্যাশনাল ফার্ম নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত বছরের জুনে এর কাজ সম্পন্ন হয়।</p> <p>রাবার ড্যাম-সংলগ্ন কৃষক ও পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির (পাবসস) সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের হতাশা আর ক্ষোভের কথা জানা গেছে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বলেন, ‘জিঞ্জিরাম নদের দুই তীরে অন্তত তিন কিলোমিটার বাঁধের প্রয়োজন। গত বছর কাজ শেষ হলেও সেই বাঁধের অভাবে এখন পর্যন্ত সেচ কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। বাঁধ তৈরির জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে বারবার আবেদন করেও কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’</p> <p>খেওয়ারচরের কৃষক এমদাদুল হক বলেন, ‘৯ বছর থিকা শুনছি কম খরচে আমরা বোরো ক্ষেতে সেচ দিতে পারব। এ আশা নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলাম। রাবার ড্যাম হওয়ার পর এ সমস্যা ও সমস্যায় আমরা হতাশ।’ কৃষক দমির উদ্দিন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এগুলান রাবার ড্যাম দিয়া আমগর কোনো উপকার হবো না। সরকার খালি খালি ট্যাহা গচ্ছা দিল।’ আব্দুল আউয়াল নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘রাবার ড্যাম বানাইয়া দিছে ঠিকই, কিন্তু এর দিকে সরকারের কোনো নজর নাই।’</p> <p>রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘রাবার ড্যাম প্রকল্প নিয়ে সীমান্ত এলাকার হাজারো কৃষকের বুকভরা স্বপ্ন ছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হচ্ছে না। আমরা এখন হতাশ। নদীর দুই তীরে বাঁধ না হওয়া পর্যন্ত সেচ কার্যক্রম শুরু করা যাবে না।’</p> <p>এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া পেলে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।</p> <p> </p>