<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজধানীর বাইরে মাদারীপুর কিংবা মুন্সীগঞ্জ জেলায় বিমানবন্দর স্থাপনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। ফলে বিমানবন্দর করার জন্য যে সমীক্ষা প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল তার পুরো টাকাই জলে গেছে। রাজধানীর বাইরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের জন্য ১৩৬ কোটি টাকার সমীক্ষা প্রকল্প নেওয়া হয়। কিন্তু বিমানবন্দরটি না হওয়ায় ১৩৬ কোটি টাকাই অপচয় হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সমীক্ষা প্রকল্পটির সমাপ্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর বাইরে মাদারীপুর কিংবা মুন্সীগঞ্জ জেলায় বিমানবন্দর স্থাপনের সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে স্থগিত হওয়ায় এই মুহূর্তে সমীক্ষা প্রতিবেদনের কার্যকারিতা নেই। সরকারের আর্থিক সাশ্রয়ের জন্য ভবিষ্যতে বড় বাজেটের সমীক্ষা কাজ গ্রহণের আগে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে সমীক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করা উচিত। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আওতায় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটির ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ করতে সীমিত বাজেটে প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় প্রণীত সমীক্ষা প্রতিবেদনে অর্থনৈতিক ও আর্থিক বিষয়গুলো সঠিকভাবে উঠে না আসার শঙ্কা রয়েছে। আইএমইডি বলছে, প্রকল্পের আওতায় প্রণীত ডিপিপিগুলোর অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের সময় প্রস্তাবিত প্রকল্পের সম্ভাব্য সমীক্ষা প্রতিবেদনে অর্থনৈতিক ও আর্থিক বিষয়গুলো পরীক্ষা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা সমীচীন হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যদিও সমীক্ষা প্রকল্পটির বিষয়ে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজধানীর বাইরে এখন আমরা বিমানবন্দর না করলেও ভাবষ্যতে করতে হবে। রাজধানীর আশপাশে ২৭টি জায়গায় সমীক্ষা করা হয়েছে। আমরা এখন থার্ড টার্মিনালসহ দেশের অন্য অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলো উন্নয়নে বেশি নজর দিচ্ছি। এগুলো গুছিয়ে রাজধানীর বাইরে বিমানবন্দর করার বিষয়ে নজর দেব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরি কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ থেকে নেওয়া হয়, যার কারণে এখন বিমানবন্দর হচ্ছে না। আর আমরা এমন কোনো আঞ্চলিক বিজনেস হাব হয়ে যাইনি যে এত বড় বিমানবন্দর লাগবে, যে কারণে সমীক্ষা প্রকল্পের নামে ১৩৬ কোটি টাকা অপচয় করা হয়েছে। শুধু এই প্রকল্পই নয়, এ রকম শত শত অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নিয়ে অর্থের অপচয় করা হয়েছে গত সরকারের আমলে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সমীক্ষা প্রকল্পটি নেওয়ার আগে বলা হয়, বাংলাদেশে এয়ার ট্রাফিক প্রবাহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোর বিদ্যমান অবকাঠামোগত সুবিধা দেশের ভবিষ্যৎ বিমান চলাচলের চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত নয়। বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দেশের ব্যস্ততম বিমানবন্দর, যেখান দিয়ে মোট বিমান চলাচলের প্রায় ৮০ শতাংশ হয়। এই বিমানবন্দর ষাটের দশকের গোড়ার দিকে একটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর হিসেবে ডিজাইন করা হয়েছিল। বিমানবন্দরটির একটি একক রানওয়ে এবং বার্ষিক যাত্রী হ্যান্ডলিং ক্ষমতা মাত্র আট মিলিয়ন। দেশের একটি এয়ার গেটওয়ে হিসেবে এটি দেশের ক্রমবর্ধমান এয়ার ট্রাফিক চাহিদা পরিচালনার জন্য অপর্যাপ্ত। যাত্রী টার্মিনাল ভবনের জায়গা আধুনিক পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত নয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার জন্য ২০১৫ সালে ১৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। প্রকল্পটি দুই বছরে শেষ করার জন্য নেওয়া হলেও শেষ করতে সাত বছর লেগে যায়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর রাজধানীর কাছাকাছি কোথাও আরো একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা নেয়। মূলত ঢাকাকে আকাশ যোগাযোগের সংযোগস্থল বা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাব</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। ২০১০ সালে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা প্রাথমিক ব্যয় ধরে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। বিমানবন্দর নির্মাণের উপযুক্ত জায়গা হিসেবে সরকারের প্রাথমিক বাছাইয়ে উঠে আসে মুন্সীগঞ্জের আড়িয়াল বিল ও ময়মনসিংহের ত্রিশালের নাম। পরে ত্রিশালকে বাদ দিয়ে আড়িয়াল বিলেই বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা করে সরকার।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিষ্ঠানটি বিমানবন্দর নির্মাণের সম্ভাব্য ২৮টি স্থান সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ১০টি স্থান প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করে। পরবর্তী সময়ে বিস্তারিত আরো অন্যান্য প্যারামিটার বিবেচনায় তিনটি উপযুক্ত সম্ভাব্য স্থান থেকে দুটি স্থানকে নির্বাচন করা হয়। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভে, মাস্টারপ্ল্যান, এয়ার রুট, এরোস্পেস, এয়ার ট্রাফিক ফোরকাস্ট ও উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পন্ন করেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেবিচকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, রাজধানী থেকে পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার সীমান্ত ঘেঁষে এই বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেলেই কাজ শুরু হতো। কিন্তু তা না করে পিডিসহ অনেকে নানা টালবাহানা করে প্রকল্পটির ব্যয় এক লাখ কোটি টাকা করেছে।</span></span></span></span></p>