এক বছরে সাড়ে ৬২ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করেছে ব্যাংক। হিসাব অনুযায়ী ঋণ পুনঃ তফসিলের দিক থেকে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালের শেষ তিন মাসে খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিলের পরিমাণ অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পেছনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে দায়ী করা হচ্ছে। কারণ নির্বাচনে প্রার্থী হতে সে সময় অনেক প্রার্থীই খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিলের মাধ্যমে নিয়মিত হন।
২০২৩ সালে নির্বাচনের প্রভাব
খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল ৬২,৬৩৮ কোটি টাকার
নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের তিন মাসে প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করা হয়, যা আগের তিন মাসের চেয়ে প্রায় সাড়ে ৯ গুণ বেশি। এক ত্রৈমাসিকের হিসাবেও এটি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এই ঋণের প্রায় ৯২ শতাংশই পুনঃ তফসিল করে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো।
গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রার্থীদের নামে খেলাপি ঋণ থাকলে তা মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে নবায়ন বা পরিশোধ করতে হয়। আর যথাসময়ে ঋণ নবায়ন করা হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী নির্বাচনে যোগ্য বলে বিবেচিত হন, অন্যথায় প্রার্থী হতে পারেন না।
এ ছাড়া বিশেষ বিবেচনায় কোনো খেলাপি ঋণ চারবার পর্যন্ত পুনঃ তফসিলের সুযোগ রাখা হয়েছে, আগে তিনবারের বেশি পুনঃ তফসিল করা যেত না। এ ছাড়া ব্যাংকের পর্ষদই এখন খেলাপি ঋণ নবায়নের সিদ্ধান্ত দিতে পারছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের শেষ তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৮২৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এটি আগের তিন মাসের চেয়ে সাড়ে ৯ গুণ বেশি। আগের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করা হয় চার হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) তিন হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। আর এপ্রিল থেকে জুন সময়ে পুনঃ তফসিল করা হয় ১০ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা। সব মিলে গত বছর ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা। আগের বছরের (২০২২ সাল) পুরো সময়ে খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করা হয়েছিল ৬৩ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। মূলত নীতিমালায় ঢালাও ছাড় দেওয়ার কারণে ওই বছর খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিলে রেকর্ড গড়েছিল।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, একসময় রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করার প্রবণতা বেশি ছিল। তবে পুনঃ তফসিলের সব ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকের পর্ষদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার পর সেই প্রবণতা এখন বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে দেখা যাচ্ছে। ২০২৩ সালের শেষ তিন মাসে বেসরকারি ব্যাংকগুলোই বেশির ভাগ খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করে। এ সময়ে ব্যাংকগুলো পুনঃ তফসিল করে প্রায় ৪০ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা, যা মোট পুনঃ তফসিল ঋণের ৯১.৯২ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুই হাজার ২০৪ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ছয় ব্যাংক। আর এক হাজার ৭২ কোটি টাকা ঋণ পুনঃ তফসিল করে তৃতীয় অবস্থানে বিশেষায়িত খাতের ব্যাংক। আর বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলো করেছে ২৬৪ কোটি টাকা।
রেকর্ড পরিমাণ খেলাপি ঋণ নবায়নের পরও গত বছরের শেষ তিন মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেছে মাত্র ৯ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। এতে ২০২৩ সাল শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা, যা এক বছর আগেও ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। ফলে বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বাড়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি বছরের (২০২৪) প্রথম তিন মাসে অস্বাভাবিক বেড়েছে খেলাপি ঋণ, এর পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩৬ হাজার কোটি টাকা। সব মিলে মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১.১১ শতাংশ।
জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ৩০০টি আসনের বিপরীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রসহ মোট দুই হাজার ৭১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে এসব প্রার্থী ঋণখেলাপি কি না, সেই তথ্য ঋণতথ্য ব্যুরো (সিআইবি) থেকে যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যাচাই-বাছাইয়ে অন্তত ১১৮ জন প্রার্থী ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হন। বাকিদের কেউ কেউ আগেই খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিলের মাধ্যমে নিয়মিত করেন। তবে ঠিক কতজন প্রার্থী খেলাপি ঋণ নিয়মিত করেছেন, সেই তথ্য জানা যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের কারণে ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেশি পুনঃ তফসিল করা হয়েছে। কারণ আমাদের দেশের অনেক নেতাই ঋণখেলাপি। তাই নির্বাচনের আগে অনেক প্রার্থী ঋণ নবায়ন করেন। এর প্রভাবে অস্বাভাবিক পুনঃ তফসিল করা হয়েছে।’
সম্পর্কিত খবর

স্বস্তির জয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
সাইদুজ্জামান, ডাম্বুলা থেকে

ক্রিকেট ম্যাচ, তার ওপর রবিবার। গতকাল তাই উদ্দাম পার্টির প্রস্তুতি ছিল রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উপড়ে পড়া গ্যালারির। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকে ডিজের মিউজিক, দর্শকদের ড্রাম পেটানো আর ট্রাম্পেটের চড়া সুরে কান পাতা দায়। সেই পার্টিই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যায় দারুণ ক্ষিপ্রতায় কুশল মেন্ডিসকে শামীম হোসেন রান আউট করতেই।
বিশ ওভারের ক্রিকেটে ছন্দ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুতলয়ের ক্রিকেটে ছন্দের সেই গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে পেয়ে আর পেছনে তাকায়নি বাংলাদেশ দল।
অবশ্য ম্যাচজুড়েই শামীমের প্রতিপত্তি দেখা গেছে।
কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন লিটন ও শামীম। অধিনায়কের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে তাওহিদ ফেরেন, একই ওভারে তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুমে যোগ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ধাক্কায় অবশ্য কাবু হওয়ার অবস্থায় নেই শামীম। আগের ম্যাচে ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকা এই বাঁহাতি শুরু থেকে চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। ওদিকে অধিনায়কও থিতু হয়ে গেছেন উইকেটে। তাঁরা জুটি বেঁধে ছোটান রানের গতি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে লিটন ও শামীম মিলে তোলেন ৭৭ রান, তা-ও মাত্র ২১ বলে! ১৩ ম্যাচ পর ফিফটির দেখা পান লিটন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের দ্বাদশ পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস। এক বাউন্ডারি আর পাঁচ ছক্কায় ৫০ বলে ৭৬ রান করে যখন আউট হন অধিনায়ক, ততক্ষণে লড়াইয়ের জন্য আশাব্যঞ্জক পূঁজি এক রকম হয়ে গেছে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে স্ট্রাইক পেতে মরণপণ দৌড়েও ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি শামীম। তাতে ২৭ বলে তাঁর ৪৮ রানের ইনিংস পঞ্চাশ ছুঁতে না পারার আক্ষেপে শেষ হয়েছে। অবশ্য তাঁর মনে কোনো আক্ষেপ নেই, ‘দল জিতেছে। তাতে অবদান রাখতে পেরেছি। এতেই আমি খুশি।’ শামীম আরো খুশি ১৬ জুলাই কলম্বোয় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা নয়, জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
ম্যাচ শুরুর আগের রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের চালচিত্র না বললেই নয়। হাজার তিরিশেক দর্শকের ঠাঁই হয় এ মাঠে। তবে দুই দিন ধরে টিকিটের জন্য আহাজারি শোনা যাচ্ছিল, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল যে পর্যাপ্ত আসন নেই। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় খেলা শুরু হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে গ্যালারি ভরে গেছে। বরাবরের মতো গ্যালারি লাগোয়া গাছেও চড়ে বসেন বিনা টিকিটের দর্শক। তাই বলে সিঁধ কেটে বিনা টিকিটের দর্শক ঢোকে ডাম্বুলায়, সেটি অজানা ছিল। গতকাল সেটিও দেখা হলো, বাংলাদেশ ইনিংসের ব্যাটিং পাওয়ার প্লে চলাকালে ভিআইপি স্ট্যান্ডের দিককার কাঁটাতারের বেড়ার নিচের মাটি সরিয়ে অন্তত শ খানেক টিকিটহীন দর্শক ঢুকে পড়লেন স্টেডিয়াম চত্বরে। বিনা বাধায় যোগ দিলেন গ্যালারির উৎসবে। নিজ দলের ব্যাটিং ভরাডুবিতে ক্ষণে ক্ষণে লাউড স্পিকার থেমেছিল বটে। তবে পুরোপুরি থামেনি। পুরস্কার বিতরণীর পরও কিছু দর্শককে দেখা গেছে হাসিমুখে সেলফি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তো বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেও গেলেন, ‘ওয়েল প্লেইড বাংলাদেশ!’

অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দে অভিযান শুরু

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ব্যাটারির রিকশার দাপট বেড়েছে। সেগুলো জব্দে অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল মালিবাগে অবৈধ ব্যাটারির রিকশা জব্দ করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি : ফোকাস বাংলা
।
মানবতাবিরোধী অপরাধ
বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ আসামির আত্মসমর্পণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ পলাতক ২৪ আসামিকে আত্মসমর্পণের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে বাংলা-ইংরেজি দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে বলা হয়েছে। আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গতকাল রবিবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক হলেন মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এর আগে ১০ জুলাই এই মামলার ২৬ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পরে ট্রাইব্যুনাল আগামী ২২ জুলাই পরবর্তী শুনানির তারিখ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন। যে দুজন আসামি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তাঁরা হলেন রাফিউল হাসান রাসেল ও মো. আনোয়ার পারভেজ।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় মোট ৩০ জন আসামি। এর মধ্যে চারজনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এদিকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ জুলাই ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই মামলার শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। শুনানিতে তিনি বলেন, পলাতক আট আসামির গ্রেপ্তার বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় প্রয়োজন। তখন ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৬ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। আদেশের সময় মামলার ১৬ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

হত্যা মামলায় জামিন
আমি রাজনীতি বুঝি না : অপু বিশ্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর ভাটারা থানার এনামুল হক নামের এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস জামিন পেয়েছেন। গতকাল রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। শুনানি চলাকালে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনয়শিল্পী। এটাই আমার পেশা।
এদিন অপু বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি মুখে কালো মাস্ক, মাথায় সাদা ওড়না ও বোরকা পরেছিলেন। তাঁর আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
এরপর অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি একজন অভিনেত্রী। অভিনয় করার জন্য অনেক কিছু করতে হয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনীতি করিও না। করতেও চাই না।’ এ সময় আইনজীবীরা আহা আহা সাধু বলতে থাকেন। অনেক আইনজীবী উত্তেজিত হয়ে বলেন, অপু বিশ্বাস এমপি হতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনার দোসর তিনি। এ সময় অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি অভিনেত্রী। আমাকে যে পোশাক দেওয়া হয়, সে পোশাক পরে অভিনয় করতে হয়। অভিনয় এমনই। ওই সময় আমি খারাপ অবস্থায় ছিলাম। পারিবারিক ঝামেলা চলছিল। আমার একটা বাচ্চা আছে।’ এ সময় অপু বিশ্বাসের চোখ ছলছল করতে দেখা যায়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে অপু বিশ্বাস গত ২ জুন হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পান। পরে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিননামা দাখিল করেন তিনি।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার শ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন তিনি। মামলায় অপু বিশ্বাস, আশ্না হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকেও আসামি করা হয়। মামলায় এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পরে এই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার হন আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ মে জামিন পান তিনি।