<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মানুষের কিছু কিছু অঙ্গ এমন যে এগুলো মানুষের জান্নাত কিংবা জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হতে পারে। যদি কেউ এই অঙ্গের সঠিক ব্যবহার করে তাহলে এই অঙ্গগুলো তাদের জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম হবে, আর যদি কেউ এই অঙ্গগুলো গুনাহের কাজে ব্যবহার করে, তবে এই অঙ্গগুলো তাদের জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হবে। মানুষ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে দুটি এমন আছে, যেগুলো মানুষের জাহান্নামে যাওয়ার অন্যতম কারণ হবে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো, কোন কর্মটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, আল্লাহভীতি, সদাচার ও উত্তম চরিত্র। আবার তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, মুখ ও লজ্জাস্থান। (তিরমিজি, হাদিস : ২০০৪)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, সাহাল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার দুই চোয়ালের মাঝের বস্তু (জিহ্বা) এবং দুই উরুর মাঝখানের বস্তুর (লজ্জাস্থান) জামানত আমাকে দেবে, আমি তাঁর জান্নাতের জিম্মাদার। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৪)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উল্লিখিত হাদিসগুলোতে রাসুল (সা.)-এর দুটি অঙ্গের ব্যাপারে তাঁর প্রিয় উম্মতদের সতর্ক করেছেন। এবং যে অঙ্গগুলো দ্বারা গুনাহ সংঘটিত হয়, এগুলো তার অন্যতম বলে নির্ণয় করেছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেমন বেশির ভাগ গুনাহ মুখের দ্বারা সংঘটিত হয়। মিথ্যা বলা, গিবত করা, গালি দেওয়া, ধমক দেওয়া, হারাম খাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো এই অঙ্গ। এ কারণে আল্লাহর রাসুল (সা.) এই অঙ্গের সঠিক ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। মানুষের এই ছোট অঙ্গটি এতটাই শক্তিশালী যে এর থেকে বের হওয়া একটি শব্দের কারণে অনেক বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে। তাই প্রতিটি মানুষের উচিত এই অঙ্গটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক হওয়া। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন যে নিশ্চয় বান্দা পরিণাম চিন্তা ব্যতিরেকেই এমন কথা বলে যে কথার কারণে সে ঢুকে যাবে জাহান্নামের এমন গভীরে, যার দূরত্ব পূর্ব (পশ্চিম) এর দূরত্বের চেয়েও বেশি। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৭)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাসুল (সা.) যে দুটি অঙ্গ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন, তার মধ্যে দ্বিতীয় অঙ্গটি হলো, লজ্জাস্থান। পবিত্র কোরআনে যারা অঙ্গটির হেফাজত করে, তাদের সফল বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(অবশ্যই সফল হয়েছে মুমিনগণ)... আর যারা তাদের লজ্জাস্থানকে সংরক্ষিত রাখে। (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ৫)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থাৎ প্রকৃত মুমিনের গুণ হলো, যৌনাঙ্গকে হেফাজত করা। তারা নিজের দেহের লজ্জাস্থান ঢেকে রাখে। অর্থাৎ উলঙ্গ হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করে এবং অন্যের সামনে লজ্জাস্থান খোলে না। আর তারা নিজেদের লজ্জাস্থানের সততা ও পবিত্রতা সংরক্ষণ করে। অর্থাৎ যৌন স্বাধীনতা দান করে না এবং কামশক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে লাগামহীন হয় না। অর্থাৎ যারা স্ত্রী ও (হালাল) দাসীদের ছাড়া সব পর নারী থেকে যৌনাঙ্গকে হেফাজতে রাখে এবং এই দুই শ্রেণির সঙ্গে শরিয়তের বিধি মোতাবেক কামপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করা ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে কোনো অবৈধ পন্থায় কামবাসনা পূর্ণ করতে প্রবৃত্ত হয় না। কারণ অবৈধ পদ্ধতিতে কামবাসনা পূর্ণ করা আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ। আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর কাছে কোন গুনাহটি সবচেয়ে বড়? তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল্লাহর সঙ্গে শারিক করা। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> আমি বললাম, এটি অবশ্যই বড় গুনাহ। এরপর কোনটি? তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তোমার সন্তান তোমার সঙ্গে খাবে এ ভয়ে তাকে হত্যা করা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> আমি বললাম, এরপর কোনটি? তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এরপর তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে জিনা করা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (বুখারি, হাদিস : ৭৫২০)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহান আল্লাহ সবাইকে এই দুটি অঙ্গের গুনাহ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।</span></span></span></span></p> <p> </p>