<p>সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দায়িত্ব পালন করে আসা তিন বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। গতকাল বুধবার আইন মন্ত্রণালয় এই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপ্রধান। শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে নিয়োগ কার্যকর হবে।</p> <p>নিয়োগ পাওয়া তিনজন হলেন বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন। এই নিয়োগ কার্যকরের মধ্য দিয়ে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে বিচারপতি হলেন আটজন।</p> <p>আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নতুন নিয়োগ পাওয়া বিচারপতিদের শপথ পড়াবেন বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী। সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারকের পদের মেয়াদ ৬৭ বছর। সে হিসাবে বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ অবসরে যাবেন আগামী ১ জুন। বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম অবসরে যাবেন আগামী বছরের ৭ জুন এবং বিচারপতি কাশেফা হোসেন অবসরে যাবেন আগামী বছরের ১ জুলাই।</p> <p><strong>জীবনবৃত্তান্ত</strong><br /> মুহাম্মদ আবদুল হাফিজের জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ জুন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করার পর ১৯৮২ সালে ঢাকা দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৮৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল তাঁর নিয়োগ স্থায়ী করা হয়।</p> <p>মো. শাহিনুর ইসলামের জন্ম ১৯৫৮ সালের ৭ এপ্রিল। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক করার পর ১৯৮৩ সালের ২০ এপ্রিল মুনসেফ (সহকারী জজ) হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০১ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। পরে নড়াইল, হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জেজ আদালতের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি ঢাকার প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার হিসেবে ২০১০ সালের এপ্রিলে তিনি নিয়োগ পান। ২০১২ সালের ২২ মার্চ তিনি ট্রাইব্যুনাল-২-এর সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট তাঁকে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। ২০১৫ সালে তাঁকে সেখানে স্থায়ী করা হয়। ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর শাহিনুর ইসলামকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান করা হয়। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি তাঁকে হাইকোর্টে ফিরিয়ে আনা হয়।</p> <p>কাশেফা হোসেনের জন্ম ১৯৫৮ সালের ১ জুলাই। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করার পর আইনেও স্নাতক ডিগ্রি নেন। পরে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। কাশেফা হোসেন ১৯৯৫ সালে জেলা আদালত এবং ২০০৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। তাঁর বাবা প্রয়াত বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন। সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯৭ সালে তাঁকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়।</p>