<p style="margin-bottom:13px">গেল ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হলো ‘আলোচিত’ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির নির্বাচন। তারকাদের এই নির্বাচনে দেশের বেশির ভাগ মানুষের আগ্রহ ঢের। এবারের নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে মোট ৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। দুই প্যানেলের একটিতে ছিলেন সভাপতি পদে অভিনেতা মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজল। অন্যটিতে সভাপতি পদে একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক মাহমুদ কলি ও সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। এর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে সভাপতি হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন মিশা সওদাগর এবং সাধারণ সম্পাদক ডিপজল। দুজনই পর্দায় খলনায়ক হিসেবে সমাদৃত। তাঁদের উত্থান অশ্লীলতার আমলে। যখন দেশের ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। অনেকের দাবি, চলচ্চিত্রে অশ্লীলতার শুরুও তাঁদের হাত ধরেই বলা যায়।</p> <p>শুধু তা-ই নয়, দুজন জড়িত ছিলেন বিএনপি-জামায়তের রাজনীতির সঙ্গেও। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদ্য নির্বাচিত মিশা সওদাগর একসময় বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গুগল ঘাঁটলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর ছবিও মেলে। ওই সময় বিএনপি আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিতি ছিল এই অভিনেতার। তবে সময়ের বিবর্তনে তিনি ভোল পাল্টেছেন। এখন হয়েছেন আওয়ামী ঘরানার। শুধু ঘরানারই নন, রীতিমতো অস্বীকার করেন তিনি কখনো বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।</p> <p>একই অবস্থা বিএনপির রাজনীতি দিয়ে উত্থান ঘটা মিরপুরের কিং মনোয়ার হোসেন ডিপজলের। ১৯৯৪ সালে তিনি ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার হন। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি জোট। তারপর টানা তিন মেয়াদে কমিশনার ছিলেন তিনি। বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী হলেও তিনি দাবি করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই তিনি বারবার বিজয়ী হয়েছেন। ওই সময় তাঁকে প্রকাশ্যে বিএনপির রাজনীতিতেও দেখা যায় বলে অনেকেই জানান। তিনি সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়কের আমলে আটক হয়েছিলেন। ওই সময় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল। তবে ভোল পাল্টেছেন ডিপজলও। তিনি এখন হয়ে গেছেন পুরোদস্তুর আওয়ামী লীগ কর্মী। শুধু তা-ই নয়, ২০২১ সালে ঢাকার একটি আসনে উপনির্বাচনের সময় সেখান থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ারও চেষ্টা করেন। তবে বিএনপি থেকে উত্থান বলে তাঁর কাছে মনোনয়ন ফরমই বিক্রি করা হয়নি। </p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে কমিটিতে বিভিন্ন পদে ঠাঁই পাওয়া রুবেল, জয় চৌধুরী, আলেকজান্ডার বো বিভিন্ন সময় বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে তাঁরা এখন পুরোপুরি অস্বীকার করেন বিষয়টি।</p> <p>গতকাল নতুন কমিটির শপথ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মারামারির ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া শিল্পী সমিতির সদস্য শিবা শানু এখনো ওতপ্রোতভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বিএনপির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পেজে নানা কর্মসূচিতে তাঁর সরব উপস্থিতি দেখা যায় এখনো। </p> <p>এসব দেখে অনেকের ধারণা, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি কি তাহলে বিএনপি ঘরানার নেতৃবৃন্দের দখলে চলে গেল? তাহলে বাংলা চলচ্চিত্রে আবার অশ্লীলতার জোয়ার শুরু হবে? এই আতঙ্ক আরো পাকাপোক্ত হয়েছে গতকাল শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে ‘ন্যক্কারজনক’ ঘটনার মাধ্যমে।</p>