<p>আগামী বছর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সুবাতাস বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলেছে, ২০২৫ সাল থেকে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়তে শুরু করবে। একই সঙ্গে কমতে শুরু করবে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রবণতা। ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতেও অবদান বাড়বে বাংলাদেশের। এতে ২০২৮ সাল নাগাদ বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান হবে ১৯তম। বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ২৫তম।</p> <p>সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফের বার্ষিক বৈঠকের জন্য প্রস্তুতকৃত ২০২৪ সালের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের এপ্রিল সংস্করণে বাংলাদেশের অর্থনীতির এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।</p> <p>আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি বৈশ্বিক জিডিপির ০.৮৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা আগামী পাঁচ বছরে ০.১৭ শতাংশ পয়েন্ট প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হয়েছে। এর ফলে ২০২৮ সালে বিশ্ব জিডিপিতে বাংলাদেশ ১.০১ শতাংশ অবদান রাখবে।</p> <p>আইএমএফ মনে করে, বাংলাদেশের জিডিপি আগামী পাঁচ বছরে ২৪৫.৫২ বিলিয়ন ডলার বাড়বে। বাংলাদেশের এই গতিপথ অর্থনৈতিক আকারের দিক থেকে বাংলাদেশকে বিশ্বের মধ্যে ১৯তম অবস্থানে নিয়ে যাবে।</p> <p>আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ ইরান, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড, তাইওয়ান ও পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাবে।</p> <p>প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৮ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ৬৯১.৮৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে, যা গত বছরের ৪৪৬.৩৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫৫ শতাংশ বাড়বে। মাথাপিছু জিডিপি ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি এবং ক্রয়ক্ষমতা সমতা (পিপিপি) ডলারের ওপর ভিত্তি করে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মূল্য ৫৪ শতাংশ বাড়বে।</p> <p>আইএমএফ বলেছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু চলতি বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম হবে।</p> <p>তাদের হিসাবে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫.৭ শতাংশ। তবে ২০২৫ সাল থেকে আবার বাড়তে শুরু করবে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি। ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৬ শতাংশ হতে পারে। ২০২৮ ও ২০২৯ সালে হতে পারে ৭ শতাংশ। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি কমতে পারে।</p> <p>সংস্থাটির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৪ সালে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে ৯.৩ শতাংশে। অর্থাৎ চলতি বছরও বাংলাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকলেও ২০২৮ ও ২০২৯ সালে তা কমে সাড়ে ৫ শতাংশে নেমে আসবে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উন্নতি হবে। ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতেও বাংলাদেশের অবদান বাড়বে।</p> <p>আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮০ সালে ০.৩৭৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৪৪তম। কিছু ওঠানামা থাকলেও ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অবস্থান প্রায় একই জায়গায় ছিল। ১৯৯৮ সালে ইউক্রেন ও রোমানিয়াকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ ৪২তম স্থান অর্জন করে।</p>
