চলমান অর্থসংকটের কারণে দীর্ঘদিন সময়মতো ভর্তুকি দেওয়া হয়নি। এতে বড় অঙ্কের বকেয়া অর্থের বোঝা এখন সরকারের কাঁধে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সার, প্রণোদনাসহ বিভিন্ন খাতের ভর্তুকির অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি সরকার। এ পরিস্থিতিতে ভর্তুকি পরিশোধে বিকল্প পথ খুঁজে নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
ভর্তুকির বকেয়া শোধ বন্ডে
মিরাজ শামস

বর্তমানে অর্থসংকটে রয়েছে ভর্তুকির সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠানগুলো। কিছু খাতে ভর্তুকির বকেয়া রয়েছে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে।
বাজেট প্রণয়নের সময় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল, সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের মধ্যেই বকেয়াসহ ভর্তুকি পরিশোধ করা হবে। কিন্তু লক্ষ্যমতো রাজস্ব আদায় না হওয়ায় পর্যাপ্ত অর্থের সংস্থান হয়নি। ফলে অর্থবছরের সাত মাস পার হয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় পরিমাণ অর্থ ছাড় সম্ভব হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষ ট্রেজারি বন্ডের মাধ্যমে এখন একদিকে যেমন নগদ অর্থের সংকট সমন্বয় হচ্ছে, অন্যদিকে সরকার অর্থ পরিশোধের জন্য আরো বেশি সময় পাচ্ছে। আগামীতে সরকারের আর্থিক অবস্থা ভালো হলে বাজেট থেকেই ধীরে ধীরে এসব বকেয়া পরিশোধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ খাতের বকেয়া ভর্তুকি পরিশোধের জন্য ব্যাংকগুলোকে ছয় হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করেছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এক হাজার কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ছয় ভাগের এক ভাগ নগদ অর্থ দিলেও বেশির ভাগই পরিশোধ হচ্ছে বন্ডে। এই মুহূর্তে সরকারের বকেয়া অর্থ পরিশোধের অন্যতম উপায় বিশেষ ট্রেজারি বন্ড।
সম্প্রতি সরকারি-বেসরকারি খাতের ২৪টি ব্যাংকের অনুকূলে ছয় হাজার ৫৬৫ কোটি টাকার বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর ৬০টি গ্রাহক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভর্তুকি বাবদ এসব বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। বন্ডের সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদহারের ভিত্তিতে। বর্তমানে এ হার ৮ শতাংশের ওপর। এ বন্ডের মেয়াদ আট থেকে ১০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী (আইপিপি) এবং সার আমদানিকারকদের কাছ থেকে ব্যাংকে জমা হওয়া বকেয়া নিষ্পত্তির জন্য এখন বিশেষ বন্ড ইস্যু করছে সরকার। বিদ্যুতে ভর্তুকির অংশ হিসেবে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলোর বকেয়া ব্যাংক দায় পরিশোধে এই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়, ঋণদাতা ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বিদ্যুৎ বিভাগের মধ্যে বিশেষ ট্রেজারি বন্ডসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি খাতের ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার্স (আইপিপি), রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য এক হাজার কোটি টাকা সম্প্রতি ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই অর্থ দিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এসব কেন্দ্রের ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের ভর্তুকি বাবদ পাওনার আংশিক পরিশোধ করবে।
অর্থ ছাড়পত্রটি বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এতে বলা হয়, এরই মধ্যে আইপিপি, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বকেয়া বিলের পুরোটা এবং ২০২৩ সালের জানুয়ারির আংশিক নগদ ও বিশেষ বন্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। এর পরিমাণ দুই হাজার ১৩২ কোটি টাকা। জানুয়ারির বাকিটুকু অর্থাৎ ৩৬৯ কোটি ৮৬ লাখ এবং ফেব্রুয়ারির দুই হাজার ৬৩৭ কোটি টাকার আংশিক ৬৩০ কোটি ১৪ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য মোট এক হাজার কোটি টাকা বিপিডিবির অনুকূলে ছাড় করা হলো।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগের অর্থবছরের বকেয়াসহ চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত সার ও বিদ্যুতের ভর্তুকি বাবদ বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৩ হাজার কোটি টাকা। বিপরীতে মোট ১৬ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর মধ্যে বাজেট থেকে পিডিবিকে বরাদ্দ দেওয়া হয় সাত হাজার কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উদ্যোক্তাদের ঋণের বিপরীতে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে ৯ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকার বিশেষ বন্ড দেওয়া হয়েছে।
এর আগের মাসেও সার ও বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভর্তুকির বিপরীতে বিশেষ বন্ড ইস্যু করা হয়। এ ক্ষেত্রে সারে ভর্তুকির বিপরীতে পাঁচ ব্যাংকের অনুকূলে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করা হয়েছে।
অন্যদিকে গত মাসে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির বিপরীতে তিনটি ব্যাংকের অনুকূলে তিন হাজার ১১০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার বিশেষ বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। এ হিসাবে সব মিলিয়ে ভর্তুকির বিপরীতে এই পর্যন্ত ১৬ হাজার ৬৭৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকার বন্ড ইস্যু করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, সার ও বিদ্যুৎ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থায়ন করেছে ব্যাংক। তাই ব্যাংকগুলোর অনুকূলে সরকারের ভর্তুকির অংশ বন্ড হিসেবে ইস্যু করা হচ্ছে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর দায় সমন্বয় হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণগুলো খেলাপি হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যাবে এবং এর বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে না। পাশাপাশি ব্যাংকগুলো বন্ডের অর্থের সমপরিমাণ বিধিবদ্ধ জমার (এসএলআর) বাধ্যবাধকতাও পূরণে ব্যবহার করতে পারবে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলো বিশেষ এই বন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা রেখে রেপোর মাধ্যমে তারল্য সুবিধাও নিতে পারবে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বকেয়া বিলের পুরো অর্থ এ মুহূর্তে না পেলেও বন্ডের সমপরিমাণ অর্থ ব্যাংকের ঋণ হিসেবে পরিশোধ হয়ে যাবে। এতে খেলাপি হওয়ার হাত থেকে যেমন রেহাই পাবে, তেমনি প্রতিষ্ঠানগুলোর দায় কমে আসবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, প্রাথমিকভাবে বকেয়া ভর্তুকিতে সারে ১০ হাজার ৫০০ কোটি ও বিদ্যুতে ১২ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করার জন্য সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ৪০ ব্যাংকের অনুকূলে ইস্যু করা হচ্ছে। বিশেষ বন্ড ও নগদ পরিশোধের মাধ্যমে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিপিডিবির কাছে থাকা আইপিপিগুলোর পাওনা অর্থ শোধ করা হয়েছে।
এর আগেও সরকারের এ ধরনের বন্ড ইস্যুর নজির রয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) দায়ের বিপরীতে একসময় ব্যাংকের অনুকূলে বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করেছিল সরকার।
গত অর্থ বছরে বিদ্যুৎ খাতে ৪২ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা, জ্বালানি খাতে ছয় হাজার ২৩২ কোটি, কৃষি খাতে ২৬ হাজার ৫৫ কোটি ও সারে ২৫ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ এক লাখ ১০ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুতের ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে ভর্তুকি কমিয়ে আনতে কয়েক দফা দামও বাড়ানো হয়।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে না পারার কারণে সরকারের হাতে নগদ অর্থসংকট রয়েছে। এ কারণে বন্ডে পরিশোধ ছাড়া বিকল্প নেই। তবে বন্ডে পরিশোধের কারণে সুদ পরিশোধের চাপে থাকবে সরকার।
জাহিদ হোসেন বলেন, বন্ডে বকেয়া ভর্তুকি পরিশোধ করা একভাবে টাকা ছাপিয়ে অর্থায়নের মতো। এই বন্ড রেখে নগদ অর্থের তারল্য সংকট ঘাটতি মেটাচ্ছে ব্যাংকগুলো। ফলে এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির বিপরীত হয়েছে। কারণ বাজারে নতুন করে ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ এসেছে। এর প্রভাব বাজারে পড়বে।
সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ‘অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।
এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।
মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।’
গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।’

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল
বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।
মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ‘ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮’-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।
প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।
গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।
অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।
তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।
সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান
বরগুনা প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।