<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থেকে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা পর্যন্ত ৪০০ থেকে প্রায় চার হাজার টাকা বেতন বাড়বে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমান মূল্যস্ফীতির তুলনায় বেতন বৃদ্ধির পরিমাণ অনেক কম। এতে মূল্যস্ফীতি না কমে বরং বাড়তে পারে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত জুন মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৭৪ শতাংশ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির (১৩-২০ গ্রেড) কর্মচারীদের মূল বেতন ৮২৫০-১১০০০ টাকা। ৫ শতাংশ বিশেষ এই প্রণোদনার ফলে তাঁদের বেতন বাড়বে ৪১২ থেকে ৫৫০ টাকা। দ্বিতীয় শ্রেণির (১০-১২ গ্রেড) কর্মকর্তাদের বেতন বাড়বে ৫৬৫ থেকে ৮০০ টাকা। প্রথম শ্রেণির (প্রথম-নবম গ্রেড) কর্মকর্তাদের বেতন বাড়বে এক হাজার ১০০ থেকে তিন হাজার ৯০০ টাকা। এই ভাতা শুধু চলতি বছর বাড়বে। এ জন্য পৃথক একটি কোড চালু করা হবে। এতে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির (ইনক্রিমেন্ট) মতো সুবিধা পাওয়া যাবে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র জানায়, এর আগে ২০১৩ সালে ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা কার্যকরের সময় কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি কম হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেতন কমিয়ে নিম্নস্তরের কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়। তখন সর্বনিম্ন এক হাজার ৫০০ এবং সর্বোচ্চ ছয় হাজার টাকা মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবারও সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব করতে পারে অর্থ বিভাগ। তবে সর্বোচ্চ বেতন নির্ধারণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারি প্রকল্প ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং পেনশনভোগীদেরও বেতন-ভাতা বাড়বে। এ জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেতন-ভাতা বাবদ আরো চার হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। বিদ্যমান বাজেটের মধ্যে এটা সমন্বয় করার চিন্তা করছে অর্থ বিভাগ। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ৫ শতাংশ বাড়তি প্রণোদনা হিসেবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতনের সঙ্গে প্রতি মাসে পাবেন। এসংক্রান্ত সব বিষয় স্পষ্ট করতে অর্থ বিভাগ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সারসংক্ষেপ পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে অনুমোদন দিলে অর্থ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। যখনই প্রজ্ঞাপন জারি হোক, সরকারি কর্মীরা বাড়তি প্রণোদনা জুলাই মাস থেকেই পাবেন। এ জন্য চাকরি (বেতন-ভাতাদি) আদেশ-২০১৫ সংশোধন করা হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও মহার্ঘ ভাতা চালুকালীন অর্থসচিব ফজলে কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০১৩ সালে মহার্ঘ ভাতা বাস্তবায়নের সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তুলনায় নিম্নস্তরের কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি কম হচ্ছিল। তখন নিচের গ্রেডে বাড়িয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেতন কমানো হয়েছিল। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কর্মচারীদের বেতন এবারও কম বাড়ার বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে সাবেক এই অর্থসচিব বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে কিছু বলার আমার কোনো এখতিয়ার নেই। এখন যাঁরা আছেন, তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে প্রচলিত সংস্কৃতি অনুযায়ী প্রথমে সরকারি কর্মীরা, এরপর প্রকল্প ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা এবং পেনশনভোগীরা এই সুবিধা পাবেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাধারণত প্রতি পাঁচ বছর পর পর পে স্কেল ঘোষণা করে সরকার। ২০০৯ সালে সপ্তম পে স্কেল কার্যকরের পর অষ্টম পে স্কেল ঘোষণা করতে দেরি হয়েছিল। পরে ২০১৩ সালের অক্টোবরে মহার্ঘ ভাতা চালু করে সরকার। তবে ২০১৫ সালে অষ্টম পে স্কেল বাস্তবায়নের পর মহার্ঘ ভাতা বাতিল করা হয়। ২০১৫ সালে যখন সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়, তখন মূল্যস্ফীতি ৩ থেকে ৫ শতাংশ ধরে পরবর্তী বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ঠিক করা হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমান বাজারের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করতে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বক্তব্য দেওয়ার সময় সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার কথা জানান। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আসল করণীয় ছিল মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু সরকারি কর্মচারীদের যে বেতন বাড়ানো হচ্ছে, এতে মূল্যস্ফীতি কমবে না, বরং বাড়বে। এই সিদ্ধান্ত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিপরীতমুখী নীতি হবে। এটা শুধু সরকারি কর্মচারীদের নয়, অন্য মানুষেরও সমস্যা। এ জন্য সরকারি ব্যয় কমানো, বাজেটে ঘাটতি কমানো, টাকা ছাপানো বন্ধ করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, সবার বেতন না বাড়িয়ে এটি শুধু তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে ভালো হতো। কারণ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চেয়ে নিম্নস্তরের কর্মচারীদের মধ্যে বেতনের পার্থক্য অনেক বেশি। আর এটি প্রণোদনা কেন বলা হচ্ছে জানি না। এটি একটি সহায়তা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রবিধি, বাস্তবায়ন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান) মো. গোলাম মোস্তফা কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন, প্রণোদনা দেওয়া হবে। প্রণোদনা মানে এক প্রকার ইনসেনটিভ। উনি বলেননি আরেকটি বেতন বৃদ্ধির ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এটি শুধু এ বছর বাড়বে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির হার কম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব কিছু অবগত আছেন। তিনি চান কর্মচারীরা যাঁরা নিচের দিকে আছেন, তাঁরাও যেন ভালো সুবিধা পান।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ সচিবালয় বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ৫ শতাংশ প্রণোদনার যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা সার্বিক মূল্যস্ফীতির তুলনায় অনেক কম, যা বর্তমান বাজারদরকে আরো প্রভাবিত করবে। একাদশ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন ২০ শতাংশ বাড়ানো দরকার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২৩-২৪ সালের বাজেট সংক্ষিপ্তসার অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে সর্বমোট ৮১ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা।</span></span></span></span></p>