যাদের কথায় নাচে তারাই ভিসা দেবে না, আমাদের কিছু করার নেই। ওটা নিয়ে আমাদের চিন্তার কিছু নাই। আন্দোলন করবে, করতে থাকুক, আমি বলি, যতই আন্দোলন করে, করুক।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নজর রাখতে হবে ওই ১৩, ১৪ বা তারপর ১৫ সালে যেভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষকে পুড়িয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে, হাত-পা কেটেছে, তা যেন করতে না পারে। নিজের কান, ক্যামেরা সতর্ক রাখতে হবে। তা না হলে আবার উসকানি দিয়ে ওই বাইরের কাছে কাঁদতে থাকবে। জনগণের কথা তারা বিশ্বাস করে না। তারা মনে করে, কেউ অন্য কোথাও থেকে এসে নাগরদোলায় চাপিয়ে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কেউ দেবে না, দেয় না কখনো। ব্যবহার করে, ব্যবহার করবে, কিন্তু দেবে না—এটা হলো বাস্তব কথা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কিন্তু আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছি। আমরা বাজেট দিয়েছি, জ্ঞানী, গুণী, বুদ্ধিজীবীরা বলে, এই বাজেট আওয়ামী লীগ কখনো কার্যকর করতে পারবে না। আমি স্পষ্ট করতে চাই, আমরা কতটুকু করতে পারব, তা বুঝে, শুনে বাজেট দিয়েছি। আমরা যা দিয়েছি, আমরা তা করতে পারব।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘যে কষ্টটা মানুষের হচ্ছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। আর কিছু লোক আছে, সুযোগটা নেয়, মজুদ করে রাখে। পেঁয়াজের দাম হু হু করে বেড়ে যায়, যেই পেঁয়াজ আমদানি করব, ওমনি দাম কমে গেল। যারা মজুদ করে রেখেছিল, তারা যদি এই অপকর্মটা না করত এই পেঁয়াজ দিয়েই আমাদের হতো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। সেই বিদ্যুতের এখন সমস্যা হচ্ছে, লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছি। আমি জানি মানুষের কষ্ট হচ্ছে, মানুষের কষ্টটা আমি উপলব্ধি করতে পারি। আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি, এই দুই-এক দিনের মধ্যে আরো ৫০০ মেগাওয়াট যুক্ত হবে। এরপর ১০-১৫ দিনের মধ্যে আরো যুক্ত হবে, তারপর আর কষ্ট থাকবে না। বাংলাদেশে ৪১ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা হবে, এটা তো আমরা ভাবতে পারি না। তারপর বৃষ্টি নেই, মানুষের কষ্ট হচ্ছে আমরা সেটা জানি। তার পরও আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে মানুষের কষ্ট লাঘব করা যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশের গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত আওয়ামী লীগই করেছে। আজ খুব শুনি বিএনপির নেতারা সমানে বক্তৃতা দিয়ে গণতন্ত্র, গণতন্ত্র, নির্বাচন, নির্বাচন করে। কোন গণতান্ত্রিক ধারায় ওই দলের জন্ম? একটা সামরিক একনায়ক, সংবিধান লঙ্ঘন করে, রাষ্ট্রপতি হত্যা করে, নিজেকে নিজে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে তৈরি হয়েছিল এই বিএনপি। আর জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের দোসর ছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন, তাদের রাজনীতি সংবিধানে ছিল নিষিদ্ধ। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সংবিধান পরিবর্তন করে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ দেয়। ভোট কারচুপির যে যাত্রাটা, সেটা তো বিএনপির নেতার মাধ্যমেই সৃষ্টি। এ দেশে হত্যার রাজনীতি আর ভোট কারচুপি, মানুষের ভোট কেড়ে নেওয়া—এটা তো জিয়াউর রহমানই শুরু করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগই আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটের অধিকার সম্পর্কে এখন সচেতন। সেই সচেতনতা আমরা সৃষ্টি করেছি। খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করেছিল বলেই এ দেশের মানুষ ফুঁসে উঠেছিল, আন্দোলন করেছিল। সেই আন্দোলনের ফলে খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে, ভোট চুরির অপরাধে।’

ঐতিহাসিক ‘৬ দফা দিবস’ উপলক্ষে গতকাল ধানমণ্ডির বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : পিএমও