রাজধানীসহ দেশের কোথাও চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস মিলছে না। শিল্প-কারখানা, সিএনজি স্টেশন, আবাসিক খাতসহ সব ক্ষেত্রে এই সংকট চলছে। বেশ কিছুদিন ধরে চলা এ সংকটের কারণে কমে গেছে শিল্প-কারখানার উৎপাদন। এর মধ্যে সিরামিক, ইস্পাত ও টেক্সটাইল খাতের উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
শিল্পে উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে
সজীব আহমেদ

গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভার এলাকার শিল্প-কারখানাগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস মিলছে না। শিল্প-কারখানা কখনো চলছে, কখনো বন্ধ থাকছে। এর ফলে উৎপাদন কমে গেছে প্রায় অর্ধেক। বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছেন শিল্পোদ্যোক্তারা।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, দেশে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে স্থানীয় উৎসর বাইরে দুটি উৎস থেকে এলএনজি আমদানি করা হয়। এর একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, অন্যটি স্পট মার্কেট (খোলাবাজার)। দেশে গ্যাসের মোট দৈনিক চাহিদা তিন হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। স্বাভাবিক সময়ে চাহিদার বিপরীতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজিসহ গড়ে দৈনিক প্রায় তিন হাজার থেকে তিন হাজার ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হতো।
ব্যাহত হচ্ছে শিল্পের উৎপাদন
শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, গ্যাসসংকটের কারণে সিরামিক, ইস্পাত ও টেক্সটাইল খাতে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে গেছে। চলতি মাসের শুরু থেকেই গ্যাসের সংকট প্রকট হতে থাকে, যার কারণে অনেক সময় কারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। গ্যাসের চাপ বাড়লে কারখানা চলে, কমলে বন্ধ রাখতে হয়।
সিরামিক খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, উৎপাদন কমে যাওয়ায় মাসে প্রায় হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে এ খাতে।
বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) সভাপতি ও আনোয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান মানোয়ার হোসেন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্টিল কারখানার উৎপাদন ৫০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। কারখানাগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ (ক্যাপটিভ) উৎপাদনও কমে গেছে। ১৮ মেগাওয়াট ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র চার থেকে ছয় মেগাওয়াট। ফলে আমাদের আয় ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। ’
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমস লিমিটেড (কেজিডিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা কমবেশি ৩১৫ থেকে ৩২০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থেকে পাওয়া যাচ্ছে ২৭০ থেকে ২৭২ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাসের সংকটের কারণে প্রতি সপ্তাহে এক দিন করে এলাকাভিত্তিক রেশনিং ব্যবস্থার আওতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
চট্টগ্রামে জ্বালানিসংকটের কারণে সম্প্রতি এসএল স্টিলস, ভাটিয়ারী স্টিলস, শম্পা স্টিলসহ অন্তত ২০টি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু কারখানা মালিক বিকল্প হিসেবে ডিজেল দিয়ে উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যদিও যেসব প্রতিষ্ঠানের বয়লারের সঙ্গে ডিজেলের সংযোগ লাইন নেই, তারা এ সুযোগটিও কাজে লাগাতে পারছে না।
চট্টগ্রামের এইচএম স্টিলের পরিচালক সরোয়ার আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, গত কিছুদিনে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও এখনো সরবরাহকৃত গ্যাসের চাপ কম। ফলে নিয়মিত উৎপাদনের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম উৎপাদন হচ্ছে।
বিএসএমের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও শাহরিয়ার স্টিল মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ মাসাদুল আলম মাসুদ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দিনের বেলা মিল চালাতে পারছি না। আমাদের উৎপাদন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। আমরা ক্ষতির মুখে পড়েছি।’
কালিয়াকৈর এলাকার পোশাক কারখানাগুলোতে গ্যাসের চাপ কম থাকায় উৎপাদন প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এভাবে চললে একসময় কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। চন্দ্রা এলাকার পোশাক কারখানা নূর গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এ কে এম জহিরুল হক বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে গ্যাসের চাপ কম। এতে কারখানার উৎপাদন কমে গেছে। গ্যাস কম থাকায় কারখানার কিছু সেকশনের মেশিনও বন্ধ রাখতে হচ্ছে।’ একই ধরনের মন্তব্য করেন সফিপুর এলাকার করতোয়া স্পিনিংয়ের পরিচালক (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের উৎপাদন ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমে এসেছে। দিনে গ্যাস থাকে না। সন্ধ্যার পর আস্তে আস্তে গ্যাস আসতে থাকে। সে জন্য রাতের বেলায় কাজ বেশি করতে হয়।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘শিল্প-কারখানায় গ্যাসসংকট অসহনীয় হয়ে উঠেছে। কোথাও কোথাও দিনে ছয় থেকে ১২ ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হচ্ছে মিল। এতে আমাদের প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত উৎপাদন কম হচ্ছে।’
আবাসিকে জ্বলছে না চুলা
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার আবাসিকে দেখা দিয়েছে গ্যাসের তীব্র সংকট। বেশ কিছুদিন ধরে চলা এ সংকট দিন দিন আরো তীব্র হচ্ছে। বাসাবাড়িতে সকাল ও রাতে গ্যাস থাকলেও দুপুরে রান্নার গ্যাস পাচ্ছেন না গৃহিণীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাড্ডা, রামপুরা, মিরপুর, বনশ্রী, মালিবাগ, শান্তিবাগ, যাত্রাবাড়ী, পুরান ঢাকা, উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা গ্যাসসংকটে ভোগান্তিতে পড়েছে।
রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা তাজমল হিরক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘টানা গত ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে সকাল ৮টার আগেই গ্যাস চলে যায়, সারা দিন আর গ্যাসের দেখা মেলে না। আবার সন্ধ্যার পর চুলায় গ্যাসের সরবরাহ পাওয়া যায়। যদি কোনো দিন দুপুর বা বিকেল বেলায় গ্যাস আসে, চাপ কম থাকায় চুলা জ্বলে টিম টিম করে। তাতে রান্না করার কোনো উপায় থাকে না। তাই বাধ্য হয়েই দুপুরে রান্নার কাজে এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করতে হচ্ছে।’
একই অভিযোগ রামপুরার বাসিন্দা সাইফুদ্দিনের। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে আমাদের এলাকায় গ্যাসসংকট। সকালের দিকে গ্যাস থাকলেও দিনের বেলা থাকে না। থাকলেও না থাকার মতোই। আঁচ এতই কম যে রান্না করা সম্ভব হয় না।’
সিএনজি স্টেশনে গ্যাস কম
গ্যাসের চাপ (প্রেসার) কম থাকায় প্রতিটি গাড়িকে গ্যাস নিতে সিএনজি স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশ কয়েক দিন ধরেই গ্যাসের চাপ কম থাকায় দিনের বেলা বেশ কিছু সিএনজি স্টেশন বন্ধ রাখতে হচ্ছে। আর এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে গ্যাসচালিত যানবাহনগুলোর ওপর।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভারসন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারহান নুর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাসের প্রেসার একদম কম। যেখানে সরবরাহ করার কথা ১৫ পিএসআই গ্যাস, সেখানে আমরা পাচ্ছি মাত্র দুই থেকে তিন পিএসআই গ্যাস। গ্যাসের প্রেসার কম থাকার কারণে সিএনজি স্টেশনগুলোতে গাড়ির দীর্ঘ লাইন হচ্ছে।’
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি ক্রয়ের চুক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছি। এই ঘাটতি মেটানোর জন্য দেশীয় কূপগুলো থেকে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে কাজ করা হচ্ছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই এই সংকট কেটে যাবে।’
তবে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরূল ইমাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকেই গ্যাসের উৎপাদন ক্রমাগত কমছে, কিন্তু উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ না নেওয়ায় আজ গ্যাসসংকট।’ তাঁর পরামর্শ, যত দ্রুত সম্ভব দীর্ঘমেয়াদি এলএনজির চুক্তি বাড়াতে হবে, প্রয়োজনে কাতার ও ওমান ছাড়াও অন্যান্য দেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করে এলএনজি আমদানি বাড়াতে হবে।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা।]
সম্পর্কিত খবর

ফিরে দেখা ২ আগস্ট ’২৪
প্রতিবাদে নানা পেশার মানুষ, সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক

পূর্বঘোষিত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছাড়াও গত বছরের এই দিনে (২ আগস্ট) পেশাজীবী, শিক্ষক, শিল্পী ও চিকিৎসকদের একাংশ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
গণমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে এদিন দেশের ২৮ জেলায় ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি পালিত হয়। রাজধানীর উত্তরাসহ দেশের একাধিক স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে খুলনায় একজন পুলিশ সদস্য এবং হবিগঞ্জে একজন পথচারীর মৃত্যু হয়।
সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলার প্রতিবাদে পরদিন ৩ আগস্ট বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে ৪ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়।
এদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে থাকা এবং সেখান থেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি দেওয়া বিষয়ে জানান, ডিবি অফিস থেকে তাঁরা স্বেচ্ছায় বিবৃতি দেননি, বাধ্য করা হয়।
অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে সহিংসতার অভিযোগে ২ আগস্ট পর্যন্ত আগের ১৪ দিনে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে খবর প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমগুলো।
বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, নিহত ২ : এদিন রাজধানীর উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে মাইলস্টোন কলেজের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে অন্তত ছয় শিক্ষার্থী আহত হয়।
হবিগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় একজন পথচারী নিহত হন। সংঘর্ষে পুলিশ ও আন্দোলনকারীসহ শতাধিক লোক আহত হয়।
বিকেলে সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। আন্দোলনকারীরাও ইটপাটকেল ছোড়ে। সংঘর্ষে শিশু, সাংবাদিক, পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়।
এদিন দুপুর ১২টার পর থেকে মোবাইল ইন্টারনেটে ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও রাশিয়াভিত্তিক মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রাম বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাঁচ ঘণ্টা পর সন্ধ্যার দিকে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার আবার চালু করা হয়।
শিল্পী, চিকিৎসকসহ পেশাজীবীরাও শামিল প্রতিবাদে : রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষক ও নাগরিক সমাজের ডাকা ‘দ্রোহযাত্রা’ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়। চার দফার মধ্যে ছিল গণগ্রেপ্তার বন্ধ করা ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দেওয়া, কারফিউ তুলে নেওয়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া এবং সরকারের পদত্যাগ।
ধানমণ্ডিতে ‘গণহত্যা ও নিপীড়নবিরোধী শিল্পীসমাজ’ ব্যানারে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানান শিল্পীরা। সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে। বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজ’ ব্যানারে সমাবেশের আয়োজন করেন কবি-লেখকরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে সমাবেশ করেন শিক্ষক, চিকিৎসক ও মেডিক্যাল-ডেন্টাল শিক্ষার্থীরাও।
পলকের ক্ষমা প্রার্থনা : এদিন নাটোরে এক অনুষ্ঠানে তৎকালীন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদ পলক বলেন, ‘অপপ্রচার বন্ধে ব্যর্থতা এবং ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার সব দায়ভার আমার।...তরুণ প্রজন্মের কাছে যদি আমার কোনো ভুল হয়ে থাকে, আমি প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
৮০ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন : ২ আগস্ট ছুটির দিন (শুক্রবার) হওয়া সত্ত্বেও এদিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৮০ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন হয়। আইন মন্ত্রণালয় জানায়, পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে আইনমন্ত্রী তাদের জামিনের বিশেষ উদ্যোগ নেন।
সহিংসতায় অন্তত ৩২ শিশুর মৃত্যু, ইউনিসেফের নিন্দা : এদিন জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এক বিবৃতিতে জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় অন্তত ৩২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুদের এই মৃত্যুকে ‘ভয়ানক ক্ষতি’ উল্লেখ করে সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানান ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক সঞ্জয় উইজেসেকেরা।

আগস্ট ঘিরে জনমনে আতঙ্ক পুলিশি তৎপরতা জোরদার
ওমর ফারুক

৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান দিবস কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিরাজ করছে অজানা এক আতঙ্ক। তবে পুলিশ ও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নিরাপত্তা নিয়ে বড় কোনো হুমকি নেই। তার পরও রাজধানীসহ সারা দেশে নজরদারি ও চিরুনি অভিযান চলছে।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র বলছে, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে নতুন করে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছেন—এমন আশঙ্কায় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
রাজধানীতে সহিংস কর্মকাণ্ডের আশঙ্কায় গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক হাজার ২৬১ জনকে। এর মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের আট নেতাকর্মীকে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জালাল (৫১), দক্ষিণ ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড ২ নম্বর ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শিবলু (৪৮), কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আফজালুন নেছা হাসান বাসেত (৪৫), কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন ওরফে লিটন (৫০), ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নিষিদ্ধঘোষিত জসীম উদ্দিন হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান (২৫), ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহাবুবুর রহমান হিরন, আওয়ামী লীগের সাবেক ৬৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামসুদ্দিন ভূঁইয়া এবং গাজীপুর মহানগর মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান (৫২)।
চিরুনি অভিযান ও চেকপোস্ট : ডিএমপির মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ডিএমপি কোনো গণগ্রেপ্তার করছে না।’ তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ডিএমপির ৫০টি থানায় ৪৮৯টি টহল টিম এবং ৬৬টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এ সময়ে ২৫৪ জনকে বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ২০টি মোবাইল ফোন, ছয়টি মোটরসাইকেল, একটি প্রাইভেট কার এবং বিভিন্ন প্রকার মাদক।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এসব অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন রাতভর তল্লাশি চলছে।
ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক ও সেনা কর্মকর্তা
ভাটারা থানা এলাকায় ৮ জুলাই একটি কনভেনশন সেন্টারে ‘ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক’ করার অভিযোগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ডিএমপির ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, ওই কনভেনশন সেন্টার ভাড়া নিয়েছিলেন শামীমা নাসরিন শম্পা নামের এক ব্যক্তি, যিনি বিদেশে লোক পাঠানোর একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু সেখানে গোপনে রাজনীতিসংশ্লিষ্ট লোকজন জড়ো হন।
এই বৈঠকে সেনাবাহিনীর মেজর পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা সাদেকুল হক সাদেকেরও সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আলাদা তদন্ত চলছে।
গতকাল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর সাদেকের বিরুদ্ধে সেনা আইনে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত আদালত গঠন করেছে সেনাবাহিনী।
পুলিশ ও সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে অস্থিরতা রয়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা শাহাদত হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যাত্রাবাড়ী ফেরার পথে অন্তত তিনটি চেকপোস্টে তল্লাশির মুখে পড়েন তিনি। তাঁর ভাষায়, ‘এর আগে এত কঠোর তল্লাশি দেখিনি। মনে হচ্ছে বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে।’
৫ নয়, ১৫ আগস্ট নিয়ে শঙ্কা
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট নিয়ে পুলিশ খুব বেশি উদ্বিগ্ন নয়। তবে ১৫ আগস্ট ঘিরে শঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় উত্তেজনা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বাড়তি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল শুক্রবার রাতে আইজিপি বাহারুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার মতো আমরা কিছু দেখছি না। পুলিশ যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নিরাপত্তা শঙ্কা নাকচ করেছেন। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট বা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস ঘিরে কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই।’
এর আগে গত বুধবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন বা আগামী ৫ আগস্ট দেশে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের হুমকি নেই। সবকিছু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

আইএসপিআর
সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত গঠন প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে নাশকতার পরিকল্পনায় আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের সঙ্গে গোপন বৈঠকে অংশ নেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে সেনা আইনে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত আদালত গঠন করেছে সেনাবাহিনী।
গতকাল শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী একটি সংস্থার কাছ থেকে সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া যায়।
আইএসপিআর জানায়, ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সেনা আইনে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাঁর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার ব্যত্যয়ের বিষয়েও আরেকটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে সুপারিশ অনুযায়ী সেনা আইনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি পেশাদার, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন ওই কর্মকর্তা, যিনি মেজর পদে কর্মরত এবং নাম সাদেকুল হক সাদেক। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেনাবাহিনীর প্রচলিত বিধি অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মির্জা ফখরুল
ফ্যাসিস্টদের না ফেরা নিশ্চিত করতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা একটা বিরাট, ভয়ংকর ফ্যাসিবাদের হাত থেকে আপাতত মুক্তি পেয়েছি। এই মুক্তি তখনই চূড়ান্ত হবে, যখন তাদের আমরা রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘এই দেশটাকে বদলাতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা আমাদের দেশকে ধ্বংস করেছে, তাদের ঘৃণা করতে হবে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর উত্তরার আজমপুরের আমির কমপ্লেক্সের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘২৪ গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ’ শীর্ষক এই সমাবেশের আয়োজন করে মহানগর উত্তর বিএনপি।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা লুটপাট করে, যারা ব্যাংক লুট করে, যারা চাঁদাবাজি করে, যারা মানুষের সম্পত্তি দখল করে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো রকমের আপস থাকবে না।
বর্তমান সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আজ একটা ভালো খবর আছে। কয়েক দিন আগে আপনারা দেখেছেন, আমেরিকা আমাদের পণ্যের ওপর ট্যারিফ আরোপ করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ক্রাইসিস হচ্ছে, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনটা আমরা চাই, দেশের মানুষ চায়। আমার তো যাওয়ারই জায়গা নেই। এখন আমার কোনো সমস্যা হলে আমি কার কাছে যাব? কোনো এমপি নেই তো? তাহলে আমি যাব কার কাছে? আমার সমস্যাটা পার্লামেন্টে কে তুলে ধরবে? লোক নেই। কে পার্লামেন্টে আমার দাবি নিয়ে কথা বলবে? লোক নেই। এ জন্যই দ্রুত নির্বাচন দরকার, খুব দ্রুত পার্লামেন্ট দরকার।’
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর জনগণ যে আস্থা রেখেছিল, একইভাবে তারা তারেক রহমানের ওপর আস্থা রাখছে। অপেক্ষা করছি, কবে তারেক রহমান দেশে আসবেন। কবে নেতৃত্ব দেবেন। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, তারেক রহমান অতি দ্রুত দেশে আসেন, আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে নেতৃত্ব দেন, সেটাই আমাদের কামনা। তারেক রহমান বারবার প্রতিদিন কথা বলছেন। প্রতিদিন তিনি বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করছেন। তিনি বলছেন, ‘আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ তৈরি করব। যে বাংলাদেশে সব মানুষের সমান অধিকার থাকবে, যে বাংলাদেশে মানুষ ভোট দিতে পারবে, যে বাংলাদেশে সাধারণ গরিব মানুষ সে গরিব থাকবে না, ধীরে ধীরে সে উন্নতির দিকে যাবে।’ বারবার করে বলেছেন যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রান্তিক মানুষের জন্য ফার্মার্স কার্ড, স্বাস্থ্য কার্ড, ফ্যামিলি কার্ড ইত্যাদি পরিকল্পনা নিয়েছেন।”
ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হকের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক এ বি এম এ আবদুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি, জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি পালন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল আলম নিরব, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব মোস্তফা জামান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রাজিব আহসান প্রমুখ।