<p><strong>[ষষ্ঠ শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি বইয়ের সপ্তম অধ্যায়ে মাছরাঙার উল্লেখ আছে]</strong></p> <p>মাছরাঙা Coraciiformes বর্গের অন্তর্গত অত্যন্ত উজ্জ্বল রঙের ছোট বা মাঝারি আকৃতির একটি পাখি। অ্যান্টার্কটিকা বাদে প্রায় সারা পৃথিবীতেই এদের দেখা যায়। মোট প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৯৪। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও নিউ গিনিতে এই পাখি পর্যাপ্ত, উষ্ণমণ্ডলীয় আফ্রিকায়ও মাছরাঙার অনেকগুলো প্রজাতি আছে। বাংলাদেশে সর্বমোট ১২ প্রজাতির মাছরাঙা আছে।</p> <p>মাছরাঙার প্রায় সব প্রজাতিরই দেহের তুলনায় মাথা বড়, লম্বা, ধারালো ও চোখা চঞ্চু, খাটো পা ও খাটো লেজ রয়েছে। বেশির ভাগ মাছরাঙার দেহ উজ্জ্বল রঙের আর স্ত্রী-পুরুষে সামান্য ভিন্নতা দেখা যায়। বেশির ভাগ মাছরাঙা বিষুবীয় অঞ্চলে বসবাস করে এবং এদের বড় একটি অংশকে কেবল বনে দেখা যায়। এরা অনেক ধরনের প্রাণী শিকার করে, তবে তার বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে মাছ। এরা সাধারণত ডালে থেকে ডাইভ দিয়ে পানির মধ্য থেকে মাছ শিকার করে। অন্যান্য শিকারের মধ্যে রয়েছে পোকামাকড়, ব্যাঙ, সরীসৃপ, পাখি, এমনকি ছোট আকারের স্তন্যপায়ী।</p> <p>Coraciiformes বর্গের অন্য সব সদস্যের মতো মাছরাঙাও গর্তে বাসা করে। সাধারণত জলাশয়ের পাশে খাড়া পারের গর্তে এরা বাসা বানায়। বাংলাদেশে প্রাপ্ত বাদামি মাছরাঙার (Brown-winged Kingfisher) আছে বিশাল লাল ঠোঁট। মাথা, গলা ও পেটের দিক বাদামি-হলুদ, পুচ্ছ ঘন বাদামি, পিঠ ও পাছা উজ্জ্বল ফ্যাকাসে নীল। এরা সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে বিস্তৃত। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Halcyon amauroptera.</p> <p>পাতি মাছরাঙার বৈজ্ঞানিক নাম Alcedo atthis. এরা লম্বায় ১৮ থেকে ২০ সেন্টিমিটার হয়। এদের মাথা ও ঘাড়ের ওপর ফিরোজা বর্ণের ছোট ছোট দাগ থাকে। ঘাড়ের পাশে সাদা রেখা। দেহের উপরাংশ সবুজাভ নীল। পিঠের মাঝ থেকে লেজের ওপর পর্যন্ত ফিরোজা রেখা। ডানার দুই পাশে রয়েছে ফিরোজা বর্ণের ছোট ছোট দাগ। গলা সাদা।</p> <p>এরা ডিম পাড়ে একসঙ্গে পাঁচ থেকে সাতটি। ডিমগুলো দেখতে চকচকে সাদা। মা ও বাবা পাখি উভয়েই দিনের বেলা ডিমে তা দেয়। তবে রাতের বেলা শুধু মা পাখি তা দেয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে ১৯-২০ দিন সময় লাগে। সাধারণত বাচ্চারা উড়তে শেখে ২০ থেকে ২৫ দিনে। নিরাপদ মনে হলে মাছরাঙা একই স্থানে বছরের পর বছর বাসা বাঁধে। পাতি মাছরাঙাদের গড় আয়ু সাত বছর হলেও এরা সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।</p> <p> </p> <p style="text-align: center;"><strong>[আরো জানতে বাংলাপিডিয়া ও পত্রপত্রিকায় মাছরাঙা সম্পর্কিত লেখাগুলো পড়তে পারো।]</strong></p>