<p>পর্যায় সারণির একমাত্র তরল ধাতু পারদ। পারদ ও ব্রোমিন কক্ষতাপমাত্রায় তরল হিসেবেই থাকে। পারদের তরল ধর্মই এর অনন্য সৌন্দর্য। মধ্যযুগে স্পেনে ইসলামি শাসন ছিল। শাসকরা তাঁদের বাগেনে পারদের পুকুর তৈরি করেছিলেন দর্শনার্থীদের বিমোহিত করতে। হাতের আঙুলে ধরা না-দেওয়া উপাদানটি আগ্রহ জাগানিয়া। সাধারণত আকরিক সিন্নাবার কিংবা সিঁদুর থেকে পাওয়া যায়। পৃথিবীপৃষ্ঠে এই আকরিকের ৮০ শতাংশই স্পেনে পাওয়া যায়।</p> <p>মার্কারি সালফাইড তথা সিঁদুর সনাতনধর্মীদের আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত লাল রঞ্জক পদার্থ। পারদের ঔষুধি গুণও রয়েছে। শুধু তাই নয়। হাজার হাজার বছর ধরে জটিল সব রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগছে মার্কারি। যেমন, জীবাণুনাশক মার্কিউক্রোম। সিফিলিসের মতো অনিরাময়যোগ্য যৌন রোগের চিকিৎসায় শক্তিশালী সক্রিয় যৌগ হিসেবে মার্কারি ব্যবহৃত হয়। পুরো নিরাময় করতে না-পারলেও উপশম করে। </p> <p>চীনা ওষুধে মার্কারির চাহিদা আকাশচুম্বী। যদিও পারদ মারাত্মক বিষাক্ত একটি পদার্থ। পারদের সংস্পর্শে বেশকিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। মাথাব্যাথা দিয়ে শুরু। চোখ, ত্বক ও পেটে জ্বালা হতে পারে। তাছাড়া কাশি, বুকে ব্যথা, দুর্বলতা, ক্লান্তি এবং শরীরের ওজনও কমে যেতে পারে। পরিমাপক যন্ত্র, সুইচ ও দাঁতের ফিলিং-এ তুলনামূলক কম বিষাক্ত পারদ ব্যবহার করা হয়। এর বাইরেও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্লুরোসেন্ট বাতির উপাদান হিসেবে পারদ জনপ্রিয়।</p> <p><strong>দশা</strong><br /> রাসায়নিক সংকেত: Hg<br /> পারমাণবিক সংখ্যা: ৮০<br /> নামকরণ: বুধ গ্রহের সাথে এর অ্যালকেমিক্যাল এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত সংযোগ আছে। তাই বুধ (মার্কারি) গ্রহের নামেই এই মৌলের নামটি রাখা হয়।</p> <p><strong>বিক্রিয়া</strong><br /> মার্কারি সালফাইডের রাসায়নিক আচরণ আদি রসায়নবিদদের (অ্যালকেমিস্ট) আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। তাঁদের আশা ছিল, সালফারের সাথে মার্কারির সমন্বয়ে গোল্ড (সোনা) পাওয়া যাবে। এরপর, রাসায়নবিদরা দেখলেন বিপরীত বা রিভারসিবল বিক্রিয়া নতুন এক তথ্য দেয়। যা হলো, মৌলের শুরু বা বিনাশ নেই। তাঁরা উক্ত পরীক্ষায় পারদ ও সালফারকে তাপ দিয়ে উত্তপ্ত করেন। ফলে বিক্রিয়ার ফল সালফারের দিকে সরে যায়। আবারও তাপ দেওয়া হলে উপাদানগুলো তাদের নিজস্ব অবস্থায় ফিরে আসে। ১৭৭৪ সালে ব্রিটিশ প্রাকৃতিক দার্শনিক জোসেফ প্রিসটলি অক্সিজেনের সাথে পরীক্ষায় মার্কারি অক্সাইডের অনুরূপ বিক্রিয়া পান।</p> <p><br /> <strong>সম্পর্কিত মৌল</strong><br /> জিঙ্ক (Zn 30)<br /> কোপারনিসিয়াম (Cn 112)</p> <p><strong>বিজ্ঞানী</strong><br /> <strong>ইভাঞ্জেলিস্টা টরিসেলি</strong><br /> ১৬০৮-১৬৪৭<br /> ইতালিয়ান উদ্ভাবক। ১৬৪৩ সালে পারদের ব্যারোমিটার উদ্ভাবন করেন।</p> <p><strong>ড্যানিয়েল ফারেনহাইট</strong><br /> ১৬৮৬-১৭৩৬<br /> ডাচ-জার্মান-পলিশ উদ্ভাবক। পারদের থার্মোমিটারের উদ্ভাবন ফারেনহাইটই করেন।</p> <p><strong>আলেকজান্ডার ক্যাল্ডার</strong><br /> ১৮৯৮-১৯৭৬<br /> যুক্তরাষ্ট্রন শিল্পী। শিল্পকর্ম ‘মার্কারি ফাউনটেইনের স্রষ্টা।</p> <p><strong>বর্ণনা</strong><br /> হিউ অ্যাল্ডারসে-উইলিয়ামস</p> <p><br />  </p>