<p>চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবে বাংলাদেশের অসুস্থ হাজীদের চিকিৎসা দিতে সরকারের গঠন করা ‘সমন্বিত হজ চিকিৎসক দল’-এর ৯ জন নার্সের অন্তর্ভুক্তি ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। সে স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।</p> <p>হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চাওয়া আবেদনে শুনানির পর আজ বুধবার (৮ মে) কোনো কোনো আদেশ দেননি চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। ফলে সমন্বিত হজ চিকিৎসক দলের সঙ্গে এই ৯ নার্সের সৌদি আরবে যাওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।</p> <p>আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। আর রিটকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান।</p> <p>যে ৯ জনের অন্তর্ভুক্তি স্থগিত রাখা হয়েছে, তারা হলেন- জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাজার মোছা. ফিরোজা আক্তার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মোছা. ইয়াসমিন, ঢাকা নার্সিং কলেজের প্রভাষক নাজমা পারভীন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মো. আনিসুজ্জামান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স হামিদা খাতুন, কামরুন নাহার, রংপুর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক, ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের সার্জেন্ট মো. জাহিদুল ইসলাম ও ল্যান্স কর্পোরাল মো. রোকন মিয়া।</p> <p>আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চেম্বার আদালত কোনো আদেশ দেননি। ফলে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশই বহাল থাকছে। ফলে চলতি মৌসুমের সমন্বিত হজ চিকিৎসক দলে এই ৯ জনের থাকার সুযোগ নেই।’</p> <p>গত ৭ ফেব্রুয়ারির বিজ্ঞপ্তি এবং নীতিমালা অনুসরণ করে চলতি মৌসুমের সমন্বিত চিকিৎসক দলে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করেছিলেন জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স খাঁন মো. গোলাম মোরশেদ। হজযাত্রী স্বাস্থ্যসেবা নীতিমালা, ২০১৮ এর আলোকে সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ৯ এপ্রিল সমন্বিত হজ চিকিৎসক দল গঠন করে তার তালিকা প্রকাশ করে। ১৮৯ জনের দলে চিকিৎসক রাখা হয় ৮৫ জন। নার্স ৫৫ জন, ফার্মাসিস্ট ২৪ জন এবং ওটি/ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ২৫ জন। ৫৫ জন নার্সের তালিকায় নার্সিং কর্মকর্তার নাম থাকলেও নিজের নাম না থাকায় সংক্ষুব্ধ হন গোলাম মোরশেদ। এরপর গত ১২ এপ্রিল তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ফের আবেদন করেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট গত ৩০ এপ্রিল রুলসহ আদেশ দেন। অন্তর্বর্তী আদেশে সমন্বিত হজ চিকিৎসক দলে নার্স হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ৯ জনের অন্তর্ভুক্তিতে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট। পরে এ আদেশ স্থগিত চেয়ে সরকারের পাশাপাশি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স হামিদা খাতুন ও কামরুন নাহারও আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন।</p> <p>হজযাত্রী স্বাস্থ্যসেবা নীতিমালা ২০১৮ এর ৭(২) ধারা অনুসারে আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ৩৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। আর ৭(৩) বলা হয়েছে, একবার হজ স্বাস্থ্যসেবা দলের সঙ্গে সৌদি আরব গিয়ে থাকলে পরের বছর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সমন্বিত হজ চিকিৎসক দলে অন্তর্ভুক্ত হতে আবেদন করতে পারবেন না।</p> <p>রিট আবেদনকারীর হলফনামার বরাত দিয়ে হাইকোর্ট আদেশে বলেন, ‘মোছা. ফিরোজা আক্তার ও মো. রোকন মিয়া বয়সসীমা অতিক্রম করেছেন। তারা এর আগেও ছর সমন্বিত হজ চিকিৎসক দলে ছিলেন। এমনকি রোকন মিয়া, মো. আবু বকর সিদ্দিক ও মো. জাহিদুল ইসলাম নার্স পেশাতেই কখনো ছিলেন না।’</p>