<p>১৯০৫ সালে রাশিয়ান সাম্রাজ্যের বিপুল পরিমাণ স্বর্ণসহ একটি যুদ্ধজাহাজ ডুবে যায়। দীর্ঘদিন পানিতে ডুবে থাকা সে জাহাজটির সন্ধান পাওয়া গেল দক্ষিণ কোরিয়ার উলেঙ্গডো দ্বীপের এক মাইল দূরের সাগরে।</p> <p>পানিতে ডুবে থাকা দিমিত্রি দনস্কই নামের জাহাজটির সন্ধান পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি অনুসন্ধানী প্রতিষ্ঠান ‘শিনিল গ্রুপ’। ১১৩ বছর আগে এক যুদ্ধে জাপানের যুদ্ধজাহাজের হামলায় রাশিয়ান জাহাজটি ডুবে যায়। যুদ্ধজাহাজটিতে ছিল ২০০ টন স্বর্ণবার ও স্বর্ণমুদ্রা। বর্তমান বাজারমূল্যে সে স্বর্ণের মূল্য প্রায় ১৩ হাজার কোটি ডলার।</p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/hotjobs/32121255888.jpg\" style=\"height:382px; width:635px\" /></p> <p>পাঁচ হাজার ৮০০ টনের জাহাজটির সন্ধান যে প্রতিষ্ঠান সন্ধান পেয়েছে, সেই সিউলভিত্তিক অনুসন্ধানকারী শিনিল গ্রুপ এক বিবৃতিতে রাশিয়ান ইম্পেরিয়াল নেভির ক্রুজারটির সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। জাহাজটি পানির এক হাজার ৪০০ ফুট নিচে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। ডুবে যাওয়ার সময় যুদ্ধজাহাজটিতে নৌবহরের তহবিল হিসেবে স্বর্ণবার ও কয়েনের পাঁচ হাজার ৫০০ বাক্স বহন করছিল।</p> <p>পানির নিচে ডুবে থাকা যুদ্ধজাহাজটির সন্ধান পাওয়ার পর তার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে অনুসন্ধানী প্রতিষ্ঠান। সেই ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, জাহাজটির কামান, ডেক-বন্দুক, নোঙর ও হুইলসহ প্রায় সবকিছুর ওপরই জলজ আগাছা ও পলির পুরু আস্তরণ জন্মেছে।</p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/hotjobs/115688.jpg\" style=\"height:382px; width:635px\" /></p> <p>পানির নিচের জাহাজটি ঠিক কোন জাহাজ, এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া সহজ ছিল না অনুসন্ধানকারীদের পক্ষ থেকে। তবে তারা জাহাজের নাম সম্পর্কে নিশ্চিত হন পেছনের অংশে লেখা দেখে। উদ্ধার অভিযানে মনুষ্যবাহী দুটি সাবমেরিন ব্যবহার করা হয়।</p> <p>শিনিল গ্রুপ এক বিবৃতিতে জানায়, জাপানি হামলায় জাহাজটির কাঠামো বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হয়। তবে এখনো জাহাজের ডেক ও পাশের অংশ ঠিক আছে বলে দেখা গেছে।</p> <p>রাশিয়ান যুদ্ধজাহাজটি পানিতে নামে ১৮৮৩ সালের আগস্টে সেন্ট পিটার্সবার্গে। বাণিজ্যিক জাহাজ হিসেবে তৈরি করা হলেও পরে একে সামরিক বাহিনীর কাজে লাগানো হয়। জাহাজটি কয়লাভিত্তিক ইঞ্জিন ও পাল উভয় শক্তিতেই চলতে পারত।</p> <p>১৯০৪ সালে রুশ-জাপান যুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় জাপানের হামলায় রাশিয়ার নৌবাহিনীর অধিকাংশ জাহাজ ধ্বংস হয়ে যায়। তখন জাহাজ সংকট কাটাতে বাণিজ্যিক জাহাজটিকেই নৌবাহিনীর কাজে লাগানো হয়। এ সময় অস্ত্রসজ্জিত করে একে রুশ সম্রাজ্যের দ্বিতীয় প্যাসিফিক স্কোয়াড্রনে নেয়া হয়।</p> <p>অনুসন্ধানকারী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে এটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। তবে প্রশ্ন উঠেছে এত বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ কী করা হবে? এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে উদ্ধারকারী সংস্থা। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এ অভিযান থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটি অংশ দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উত্তর কোরিয়া হয়ে রাশিয়া পর্যন্ত একটি রেললাইন তৈরিতে ব্যয় করা হবে। এছাড়া ১০ শতাংশ অর্থ উলেঙ্গডোর দ্বীপের পর্যটন খাতে খরচ করা হবে। সেখানে জাহাজটির স্মরণে একটি জাদুঘরও নির্মাণ করা হবে।</p> <p>সূত্র : ফক্স নিউজ</p>