রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের দুর্নীতি, জাল-জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চকে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির আইনজীবী। পরে হাইকোর্ট এসংক্রান্ত রিট আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. ইয়ামিন নেওয়াজ খান।
দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
আদালতে দাখিল করা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত স্মারকে বলা হয়েছে, ‘অভিযোগটি ব্যাংক শাখার নথির (মানি লন্ডারিং ই/আর নং ৬০/২০২৩) সঙ্গে একীভূত করে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’
এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে কমিশনের পরিচালক (মানি লন্ডারিং) গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী স্মারকটি গত ১৮ এপ্রিল দুদকের উপপরিচালক মো. নূর-ই-আলমের কাছে পাঠিয়েছেন।
পরে দুদকের আইনজীবী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘লাগামহীন দুর্নীতি, বিক্রি করা জমি বন্ধক রেখে প্রতারণার মাধ্যমে ২৭০ কোটি টাকা ব্যাংকঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। গত ১৮ এপ্রিল এ সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। সিদ্ধান্তটি আদালতকে জানিয়েছি। যে কারণে এসংক্রান্ত রিট আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে আদেশ দিয়েছেন।
এখন অভিযোগ অনুসন্ধানে একজন অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে কমিশন।’
রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গত বছর ২৬ নভেম্বর দুদকে লিখিত অভিযোগ দেন আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা ড. সুফি সাগর শামস। সংস্থাটির চেয়ারম্যানকে দেওয়া অভিযোগে রফিকুলের একাধিক দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতির কথা উল্লেখ করে এসব অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়। দুদকে করা অভিযোগের অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকেও পাঠান অভিযোগকারী। কিন্তু অভিযোগের বিষয়ে দুদককে পদক্ষেপ নিতে না দেখে সংস্থাটির নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
গত ১৯ মার্চ রিটটি শুনানিতে ওঠে।
সেদিন দুদকের আইনজীবী আদালতকে বলেন, রিট আবেদনকারীর অভিযোগ দুদকের বিবেচনায় রয়েছে। এটার (অভিযোগের) ওপর কাজ করছে দুদক। এখন কী পর্যায়ে আছে, তার হালনাগাদ (আপডেট) তথ্য জেনে জানাতে হবে। সে পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রাখা হোক।
তখন হাইকোর্ট দুদককে অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ জানাতে বলে শুনানি পিছিয়ে দেন। এর ধারাবাহিকতায় রিট আবেদনটি শুনানিতে উঠলে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের কথা জানায় দুদক।