<p>কান আমাদের শ্রবণ অঙ্গ। এটা আমাদের শরীরে ভারসাম্য রক্ষা করে। কানের তিনটি অংশ : বহিঃকর্ণ, মধ্যকর্ণ ও অন্তঃকর্ণ। কান দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পুঁজ বা পানি পড়াকে আমরা সাধারণত কান পাকা রোগ বলে থাকি।</p> <p>এটি সাধারণত মধ্যকর্ণের রোগ। এতে কানের পর্দায় ছিদ্র হয়। তবে অনেক সময় বহিঃকর্ণের কিছু প্রদাহের কারণেও কানে পুঁজ বা পানি জমা হতে পারে। এটি খুবই অপ্রীতিকর এবং ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে প্রধানত শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। আবার শহরের মানুষের তুলনায় নানা কারণে গ্রামের মানুষের মধ্যে রোগটি বেশি হতে দেখা যায়।</p> <p><strong>কাদের বেশি হয় এবং কেন হয়?</strong></p> <p>কান পাকা রোগ হওয়ার মূল কারণ হলো মধ্য কর্ণের প্রদাহ। যদি এটা দ্রুত রোগ নির্ণয় করা না যায় অথবা অপর্যাপ্ত চিকিৎসা নেওয়া হয় তবেই দীর্ঘমেয়াদি কান পাকা রোগ হয়।</p> <p><strong>উপসর্গ</strong></p> <p><strong>- </strong>কান দিয়ে পুঁজ, পানি বা রক্তমিশ্রিত তরল বের হওয়া। এটা একটানা অথবা কিছুদিন পর পর হতে পারে। এই তরল দুর্গন্ধযুক্ত বা গন্ধহীন হতে পারে।<br /> <strong>- </strong>সামান্য ঠাণ্ডা-সর্দি লাগলেই কান থেকে পানি বা পুঁজ পড়া পুনরায় শুরু হয়ে যায়।<br /> <strong>- </strong>কানে ভার ভার ভাব বা হঠাৎ প্রদাহের ফলে অনেকের কানে তীব্র ব্যথাসহ জ্বর আসতে পারে।<br /> <strong>- </strong>তবে দীর্ঘমেয়াদি কান পাকায় সাধারণত ব্যথা থাকে না।<br /> <strong>- </strong>কান চুলকানো। কানে কম শোনা।<br /> <strong>- </strong>মাথা ঘোরা। কান ও মাথার ভেতরে ভোঁ ভোঁ শব্দ হওয়া।</p> <p><strong>চিকিৎসা</strong></p> <p><strong>- </strong>কানের পর্দায় ছিদ্র থাকলে অবশ্যই কান শুকনা রাখতে হবে। কানের ভেতর যেন পানি না যায়।</p> <p><strong>- </strong>গোসল করার সময় পরিষ্কার তুলা তেলে চুবিয়ে সেই তুলা চিপে আলগা তেল বাইরে ফেলে দেবেন। এরপর সেই তেলে ভেজা তুলা কানে গুঁজে মগ দিয়ে গোসল করতে হবে। গোসলের পর তুলা খুলে নেবেন। অথবা ইয়ার প্লাগ ব্যবহার করতে পারবেন। কোনো অবস্থায় পানিতে সাঁতার কাটা বা ঝরনার পানিতে গোসল করা যাবে না।</p> <p><strong>- </strong>কানে ইনফেকশন থাকলে কানের চিকিৎসকের কাছে গিয়ে কানটি ঠিকমতো পরিষ্কার করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রেই মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে এটি করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।</p> <p><strong>- </strong>সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারলে সাধারণত এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পর্দার ছোটখাটো ছিদ্র প্রাকৃতিক নিয়মে জোড়া লাগতে দেখা যায়।</p> <p><strong>- </strong>পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও নিয়ম মানার পরও যদি দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে কানের পর্দা জোড়া না লাগে, তাহলে একটা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাইক্রোসার্জারি করে পর্দা জোড়া লাগিয়ে দেওয়া হয়।</p> <p><strong>পরামর্শ দিয়েছেন</strong><br /> ডা. আলমগীর মো. সোয়েব<br /> সিনিয়র কনসালট্যান্ট (ইএনটি)<br /> স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ<br /> গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।</p>