<p>মায়া মানেই যত্ন, মমতা। মানুষ প্রকৃতিতে ভালোবাসে। মানুষের এই মমতার প্রতিদান প্রকৃতিও কম দেয় না। প্রকৃতি ও প্রিয়জন-এই দুটি বিষয়কেই হৃদয়ে নিয়ে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড বাজারে এনেছে ন্যাচারাল হারবাল ব্র্যান্ড ‘মায়া’। আয়ুর্বেদ থেকে অনুপ্রাণিত এবং সম্পূর্ণ প্রকৃতি থেকে সংগৃহীত নিখাদ সব উপকরণে তৈরি ‘মায়া’র হয়ে প্রাথমিকভাবে দুটি নতুন পণ্য বাজারে আসছে-  নাম ‘মায়া ট্রু হার্বস মেরুলা অয়েল’ এবং ‘মায়া অল নেচারাল হেয়ার এন্ড স্ক্যাল্প অয়েল’। ‘মায়া’ ব্র্যান্ডটির প্রতিনিধিত্ব করছেন বিশিষ্ট গবেষক ডা. সুশীল যোশী- তিনি প্রতিষ্ঠানের হারবাল বিভাগের প্রধান। কালের কণ্ঠের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি আফ্রিকার মেরুলা ফল থেকে তৈরি ম্যাজিক্যাল অয়েল মেরুলা সম্পর্কে তুলে ধরলেন দারুণ সব তথ্য। </p> <p>তরুণ বয়সেই উদ্ভিদ, আয়ুর্বেদ এবং প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয় ডা. যোশীর। পরে উদ্ভিদ, এথনো মেডিসিন এবং ভেষজ উপাদান নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। এমএসসি পড়ার সময় "এঞ্জেলিকা হার্ব" শিরোনামে তিনি গবেষণা করেন, যাতে দেখা যায় পাকস্থলী ও যকৃতের চিকিৎসায় অনবদ্য ভূমিকা রাখে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান। পরে ডা. যোশী উদ্ভিদ ও ভেষজ উপাদান নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের সঙ্গে নিজের যাত্রা, প্রকৃতি ও আধুনিক বিজ্ঞানের মেলবন্ধনে 'মায়া'র মানুষের ত্বকের 'ন্যাচারাল সলিউশন' হয়ে ওঠার কথা সাক্ষাতকারে সবিস্তারে জানালেন ড. যোশী। </p> <p><strong>মেরুলা তেলটির উৎপত্তি কোথায়?</strong></p> <p><strong>ডা. যোশী : </strong>মেরুলা মূলত এক ধরনের ফল। আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় এই ফল থেকেই তৈরি হয় মেরুলা অয়েল। দক্ষিণ আফ্রিকানরা এটি ত্বকের রক্ষাকবচ হিসেবে কয়েক শ বছর ধরে ব্যবহার করে আসছে। এমনকি ১০০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দেও মেরুলা অয়েল ব্যবহারের ইতিহাস মেলে। হাজার বছর ধরে আফ্রিকার জুলু ও সোঙ্গা নারীরা ত্বকের যত্নে এই তেল ব্যবহার করে আসছেন। কেননা মেরুলা তেল সেখানকার কড়া রোদ এবং রুক্ষ আবহাওয়ার প্রভাব থেকে চুল ও ত্বককে রক্ষা করে। ত্বক, চুলের যত্ন আর অন্যান্য ঔষধি গুণাগুণের কারণে এই তেল ‘মিরাকেল অয়েল’ হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া আফ্রিকার পুরাণেও এই গাছের আধ্যাত্মিক ভূমিকার উল্লেখ পাওয়া যায়।</p> <p> </p> <p><img alt="kk" height="450" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/kalerkantho.jpg (2).png" width="800" /></p> <p><strong>নতুন এই হারবাল ব্র্যান্ডের পেছনের গল্পটি কী?</strong></p> <p><strong>ডা. যোশী</strong> : ভারতের আয়ুর্বেদিক এবং চায়নার টিসিএমের (Traditional Chinese Medicine) মতোই দক্ষিণ আফ্রিকায়ও রয়েছে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের ঐতিহ্য। আমরা চাইলেই বাজার থেকে আধুনিক প্রসাধন বা স্কিন কেয়ার পণ্য কিনে ব্যবহার করতে পারি, আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসীদের কাছে ব্যাপারটি দুঃসাধ্য। এ কারণেই চিকিৎসা থেকে শুরু করে রূপচর্চা, সব ক্ষেত্রে তারা প্রায় কয়েক শ বছর ধরে প্রাকৃতিক সমাধানেই নির্ভরশীল। প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন ভেষজ উপাদান সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ধরে সৌন্দর্যচর্চার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করে আসছে তারা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আফ্রিকান নারীদের স্বাস্থ্যবান অসাধারণ চকচকে ও স্বাস্থ্যবান ত্বক, যার পেছনে রয়েছে মেরুলার অবদান। আফ্রিকান নারীরা শুষ্ক, ফাটা ত্বকের পরিচর্যায়ও এই তেল ব্যবহার করে। আমাদের গবেষণাদলটি মূলত এভাবেই মেরুলার সন্ধান পায়। শুধু সৌন্দর্যচর্চাই নয়, রান্না, মাংস সংরক্ষণ, চামড়ার চিকিৎসার জন্য এবং প্রাকৃতিক প্রসাধনী হিসেবেও মেরুলা তেল ব্যবহৃত হয়েছে। এ ছাড়া নবজাতক শিশুদের জন্য মেরুলা তেল একটি চমৎকার ম্যাসাজ লোশন।</p> <p><strong>মেরুলা কেন অন্যান্য তেল এবং স্কিন কেয়ার পণ্য থেকে আলাদা? </strong></p> <p><strong>ড. যোশী : </strong>সাধারণত আমরা চুলের যত্নেই তেল ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু মুখের ত্বকের যত্নে তেল - ব্যাপারটা ভাবলে ভ্রু কুঁচকে ওঠা স্বাভাবিক। এখানেই মেরুলা তেলের জাদু। কেননা মেরুলা মূলত একটি নন-স্টিকি তেল। অন্যান্য সাধারণ তেলের তুলনায় মেরুলা অত্যন্ত হালকা হওয়ায় ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গেই এ তেল ত্বকে খুব সহজেই মিশে যায়। তাই ত্বক কোনো রকম সমস্যা ছাড়াই এই তেলের প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড, ময়শ্চারাইজিং এবং থেরাপিউটিক সুবিধাগুলো গ্রহণ করতে পারে। শুধু তাই নয়, মেরুলা ত্বককে নরম করতে সাহায্য করে এবং শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বককে আর্দ্র রাখে। মেরুলা তেলে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ই-এর প্রাকৃতিক উপাদানের পুষ্টি, যা শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় দেয় কার্যকরী সমাধান। এই তেল ত্বককে আর্দ্র রাখে, বলিরেখা দূর করে, তারুণ্য ফিরিয়ে আনে, নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এবং চুলকে করে কোমল ও সিল্কি। </p> <p><strong>মেরুলার মূল গুণগত মান সম্পর্কে কিছু বলুন।</strong></p> <p><strong>ডা. যোশী : </strong>প্রাকৃতিক মান বজায় রাখতে আমরা অত্যাধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যব্হার করছি। ফলের কার্নেল থেকে প্রাপ্ত বাদাম এবং বাদামের তেল আফ্রিকান খাদ্য ও সংস্কৃতিতে শতাব্দী ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মেরুলা ফলের বীজ বা কার্নেল একটি শক্ত খোলসে আবদ্ধ থাকে। রাসায়নিক পদার্থ ছাড়া নির্দিষ্ট তাপ ও চাপ প্রয়োগে বীজ ভেঙে তেল নিষ্কাশন করা হয়; অর্থাৎ শতভাগ কোল্ড-প্রেসড পদ্ধতিতে তৈরি এই নির্ভেজাল ও রাসায়নিকমুক্ত তেল মেরুলা। মেরুলা তেল ত্বকের গভীর পর্যন্ত আর্দ্র রাখে, কালো দাগ ও বলিরেখা দূর করে। এই তেল চুলেও দেওয়া যায়। মেরুলার ব্যবহারে চুল কোমল হয় এবং রুক্ষতা কমে আসে। </p> <p><strong>হারবাল পণ্যের উপাদান সংগ্রহে স্কয়ার কিভাবে কাজ করছে?</strong></p> <p><strong>ডা. যোশী :</strong> সাধারণত প্রসাধনী ও টয়লেট্রিজ সামগ্রীর অধিকাংশ কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। তবে মায়ার বেলায় দেশীয় উপাদান দিয়ে পণ্য উৎপাদনের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। আমরা ইতিমধ্যেই নিষ্কাশনের একটি অত্যাধুনিক প্লান্ট নির্মাণ করেছি, যেখানে ভেষজ নির্যাস উৎপাদন করা হচ্ছে; যা পরে আমাদের পণ্যে যোগ করা হয়। কিছু পণ্যের জন্য আমরা বিদেশ থেকে সেরা প্রাকৃতিক উপাদান সংগ্রহ করছি। অ্যালোভেরা, গোলাপ, তিলের তেল, নিমপাতা, দারচিনি, জাতামানসি, রতনজট, কারিপাতা, কালোজিরা, শিকাকাই, মেহেদিপাতা বাংলাদেশ থেকেই সংগ্রহ করি আমরা। মেরুলা তেল আফ্রিকা থেকে এবং অর্গান তেল মরক্কো থেকে আনা হয়।</p> <p><strong>মায়ার হারবাল তেল দুটি কোথায় মিলবে? </strong></p> <p><strong>ডা. যোশী :</strong> দুটি তেল বর্তমানে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। যেকোনো দোকান বা সুপারশপ থেকে ক্রেতারা মায়া ব্র্যান্ডের পণ্য দুটি কিনতে পারবেন। মায়া অল নেচারাল হেয়ার অ্যান্ড স্ক্যাল্প অয়েল একটি রুট অ্যাপ্লিকেটরসহ ১০০ মিলিলিটার বোতলে পাওয়া যাচ্ছে। ৩০ মিলিলিটার বোতলে মিলবে এই তেল। মোড়কের গায়ে তেলের ব্যবহারের বিধিও উল্লেখ করা হয়েছে। নারী ও পুরুষ উভয়েই এই তেল ব্যবহার করতে পারবেন। ক্রেতাদের সৌন্দর্য চর্চায় এই পণ্যের মূল্য তাদের সাধ্যমানেই রাখা হয়েছে।</p> <p>স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড প্রায় তিন দশক ধরে ক্রেতাদের সেরা পণ্যটি দেওয়ার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ফেব্রিক থেকে গৃহস্থালিপণ্য, শিশু ও বড়দের ত্বক ও শরীরের যত্নে বিশ্বমানের পণ্যের পসরা নিয়ে মান ও ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছে এ কম্পানি। চার হাজার কর্মীর অক্লান্ত চেষ্টায় একে একে মেরিল, সেনোরা, সেপনিল, জুঁই, কুল ব্র্যান্ড নিয়ে দেশের ৭০ শতাংশ ঘরে জায়গা করে নিয়েছে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড। এর সঙ্গে এবার যোগ হলো মায়া, প্রকৃতি ও প্রিয়জনের যত্নে আদর্শ প্রাকৃতিক সমাধান।</p>