<p>বিশ্বে যত ধরনের বিষধর সাপ রয়েছে, তার মধ্যে সামুদ্রিক সাপের প্রজাতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সামুদ্রিক সাপের প্রায় ৬০টি প্রজাতির মধ্যে বাংলাদেশে ১৬ প্রজাতি বিষধর সামুদ্রিক সাপ পাওয়া যায়। এই বিষধর সাপগুলো 'হাইড্রোফাইনি' উপ-পরিবারের অন্তর্ভুক্ত, যা 'ইলাপিডি' পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ২০২৩ সালের একটি গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।</p> <p>বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন কিছু বিষধর সামুদ্রিক সাপ হলো:</p> <figure class="image"><img alt="বড়শি-নাক সামুদ্রিক সাপ " height="360" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/07/25/my1182/Hook-Nosed-Sea-Snake-header.jpg" width="600" /> <figcaption>বড়শি-নাক সামুদ্রিক সাপ</figcaption> </figure> <p><strong>বড়শি-নাক সামুদ্রিক সাপ </strong><br /> ইংরেজি নাম: Hook Nose Sea Snake<br />  বৈজ্ঞানিক নাম: *Enhydrina schistosa<br /> রং: তামাটে ধূসর, গায়ে নীলাভ ধূসর বা কালচে ব্যান্ড<br />  দৈর্ঘ্য: সর্বোচ্চ ১৪০ সেমি</p> <p> </p> <figure class="image"><img alt="কালো-হলুদ সামুদ্রিক সাপ " height="334" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/07/25/my1182/yellow-bellied-sea-snake-galapagos.jpg" width="600" /> <figcaption><strong>কালো-হলুদ সামুদ্রিক সাপ </strong></figcaption> </figure> <p><br /> <strong>কালো-হলুদ সামুদ্রিক সাপ </strong><br /> ইংরেজি নাম: Yellow Bellied Sea Snake<br /> বৈজ্ঞানিক নাম: *Hydrophis platurus<br /> রং: পেটের দিকে হলুদ, পিঠ গাঢ় বাদামী বা কালচে<br /> দৈর্ঘ্য: দুই থেকে তিন ফুট<br /> প্রধান খাবার: সামুদ্রিক মাছ</p> <p> </p> <figure class="image"><img alt="নীল সামুদ্রিক সাপ " height="375" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/07/25/my1182/wee.jpg" width="600" /> <figcaption><strong>নীল সামুদ্রিক সাপ </strong></figcaption> </figure> <p><strong>মালাকা বা নীল সামুদ্রিক সাপ </strong><br /> ইংরেজি নাম: Malayan Sea Snake<br />  বৈজ্ঞানিক নাম: Hydrophis melanocephalus*<br />  দৈর্ঘ্য: ১০৯ সেমি<br />  রং: হলদেটে বা সাদা, গায়ে নীল-কালো বা গাঢ় ধূসর ব্যান্ড</p> <figure class="image"><img alt="ক্যান্টরের সরু মাথা সামুদ্রিক সাপ " height="370" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/07/25/my1182/original.jpeg" width="600" /> <figcaption>ক্যান্টরের সরু মাথা সামুদ্রিক সাপ</figcaption> </figure> <p><strong>ক্যান্টরের সরু মাথা সামুদ্রিক সাপ </strong><br /> ইংরেজি নাম: Cantor’s Small-headed Sea Snake<br /> বৈজ্ঞানিক নাম: *Hydrophis cantoris*<br />  দৈর্ঘ্য: ১৮৮ সেমি পর্যন্ত<br /> রং: গাঢ় জলপাই বা ধূসর, হলুদ দাগযুক্ত</p> <p><strong>সামুদ্রিক সাপের বৈশিষ্ট্য</strong><br /> বাংলাদেশের সামুদ্রিক সাপগুলো সাধারণত দৈর্ঘ্যে এক মিটার থেকে আড়াই মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এদের লেজ বৈঠার মতো চ্যাপ্টা, যা সাঁতার কাটতে সহায়ক। সাপের লেজের আকার দেখে বিষধর এবং বিষহীন সাপের মধ্যে পার্থক্য করা যায়। এদের বিষদাঁত ছোট এবং সামনের দিকে থাকে। চোখ এবং নাসারন্ধ্র মাথার উপরের দিকে থাকে, যা পানির ভেতর সাঁতার কাটার সময় কার্যকরী।</p> <p><strong>সামুদ্রিক সাপের গুরুত্ব ও চ্যালেঞ্জ</strong><br /> বাংলাদেশের সামুদ্রিক সাপের প্রজাতি নিয়ে এখনও পর্যন্ত ব্যাপক ভিত্তিতে গবেষণা হয়নি। অধিকাংশ গবেষণাই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বা পাকিস্তান আমলে করা। বাংলাদেশের সাগরে সামুদ্রিক সাপের দেখা পাওয়া যায় বঙ্গোপসাগর, সুন্দরবনের নদী মোহনা এবং সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি এলাকায়।</p> <p><strong>সতর্কতা ও সুরক্ষা</strong><br /> সামুদ্রিক সাপের ছোবল থেকে বাঁচার জন্য জেলে, নাবিক এবং ডুবুরিদের জন্য কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে:<br /> পানির নিচে কাজ করার সময় সতর্কভাবে সাপের উপস্থিতি বুঝতে চেষ্টা করতে হবে।<br /> বিশেষ সুরক্ষা পোশাক পরে সাগরে নামতে হবে, বিশেষ করে পা এবং হাত সুরক্ষিত রাখতে হবে।<br /> প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সরঞ্জাম সঙ্গে রাখতে হবে সামুদ্রিক সাপের দংশন হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।</p> <p>বাংলাদেশের সামুদ্রিক সাপের বৈচিত্র্য এবং বিষধর প্রকৃতির কারণে এদের নিয়ে আরও গবেষণা ও সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। গবেষণার মাধ্যমে এদের প্রজাতির সংখ্যা নির্ধারণ করা এবং তাদের সংরক্ষণ ও সুরক্ষার উপায় বের করা প্রয়োজন। পাশাপাশি, জেলে, নাবিক এবং ডুবুরিদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।<br />  </p> <p>সূত্র: বিবিসি</p>