ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ মহররম ১৪৪৭

দুই মাসে ১২ ঘণ্টার কাজ, আয় দুই লাখ টাকা

  • দুই মাসে মাত্র ১২ ঘণ্টার কাজ। ১২ ঘণ্টায় আয় দুই লাখ টাকার ওপরে। নাম তার তানজিম শাহ কবির। ডাকনাম তৃণব। পড়ে নোয়াখালী জিলা স্কুলের দশম শ্রেণিতে। ১৫ বছরের এই তৃণবের সফলতার গল্প শুনেছেন মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
notdefined
notdefined
শেয়ার
দুই মাসে ১২ ঘণ্টার কাজ, আয় দুই লাখ টাকা
তানজিম শাহ কবির

ছোটবেলা থেকেই
ছোটবেলা থেকেই তানজিম শাহ কবিরের কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ। নিজে থেকেই কম্পিউটারে নানা কাজ করার চেষ্টা করত। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রথম প্রগ্রামিং শুরু করে। এতটুকু বয়সেই তৃণব পাইথন, সি প্রগ্রামিংয়ের অনেকটাই শিখেছে।

তৃণব বলে, ‘নিজে নিজে চেষ্টা করতাম। স্কুলের মিজান স্যারের কাছে সি প্রগ্রামিং শিখেছি।’ কোনো কিছু নিয়ে অনরবত লেগে থাকা যেন তার স্বভাব। সে কথাই শোনা গেল তার বাবা হুমায়ুন কবিরের মুখে, ‘ও ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন ডিভাইস নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করে।

বিভিন্ন ডিভাইস জানতে, বুঝতে চেষ্টা করে। নিজেই খুলে ফেলে আবার ঠিকঠাক সংযুক্ত করে ফেলে।’
 
বাবা-মা বড় অনুপ্রেরণা
‘বাবা কম্পিউটার রুমে তালা দিয়ে রাখেন। যখন-তখন কাজ করতে পারি না।
খানিকটা মন খারাপ হলেও ভালোই লাগে। তাঁরা তো আমার ভালোর জন্যই সব করছেন’, বলে তৃণব। তৃণবের বাবা হুমায়ুন কবির চাকরি করেছেন দীর্ঘদিন। এখন ব্যবসা করেন। মা নিগার সুলতানা শিক্ষকতা করছেন।
ছোট ভাই তাহমিদ শাহ কবির, বাবা-মাকে নিয়ে তৃণব নোয়াখালীর মাইজদীতে থাকে।

কাজ তার ইথিক্যাল হ্যাকিং নিয়ে
তৃণব কাজ করে ইথিক্যাল হ্যাকিং বা নৈতিক হ্যাকিং নিয়ে। এককথায় এরা ভালো হ্যাকার। এরা অন্যের সিস্টেমে অনুমতি নিয়ে ঢুকে ত্রুটি খুঁজে বের করে তা ঠিক করে দেয়। হ্যাকিং দুই প্রকার—হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার বা ইথিক্যাল হ্যাকার এবং ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার বা ম্যালিসিয়াস হ্যাকার। ম্যালিসিয়াস হ্যাকাররা কোনো দেশ, কম্পানি কিংবা প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমের রুল এবং সিকিউরিটি ভেঙে ফেলে এবং মূল সিস্টেমের ক্ষতিসাধন করে। এই ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় ইথিক্যাল হ্যাকারদের। মোটকথা সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে ইথিক্যাল হ্যাকারদের বিকল্প নেই। তৃণব জানায়, দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিতে ইথিক্যাল হ্যাকারদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। অনলাইন মার্কেট প্লেসেও তাদের কাজের কোনো কমতি নেই।

পথ দেখাল ইশিখন ডটকম
বাবার ল্যাপটপ নিয়ে পড়ে থাকত তৃণব। নানা রকম কাজ শেখার চেষ্টা করত। একদিন সে বাবাকে বলে কোথাও কোর্সে ভর্তি করিয়ে দিতে। ২০২১ সালের জুন মাসের ঘটনা। অবশ্য আর জে কিবরিয়ার এক অনুষ্ঠানে শাওন নামের একজন ইথিক্যাল হ্যাকারের সফলতার গল্পটা বাবা আগেই দেখেছিলেন। ফলে পেশায় ঝানু ব্যবসায়ী হুমায়ুন ইথিক্যাল হ্যাকিংয়ে ছেলের সম্ভাবনা আঁচ করতে মোটেও ভুল করেননি। তৃণবের বাবা ছেলের মতকেই প্রাধান্য দিয়ে ইথিক্যাল হ্যাকিংয়ের কোর্সে ভর্তি করিয়ে দেন ইশিখন ডটকমে। ইশিখনে সবচেয়ে কম বয়সী শিক্ষার্থী ছিল তৃণব। অল্প বয়স। ছেলে কি সত্যিই শিখতে পারছে কিছু? এমন শঙ্কা কিছুটা হলেও ছিল তাঁর বাবা-মায়ের। তাঁরা ছেলের কাছাকাছি থাকতেন। ওকে টিচার যা জিজ্ঞেস করত, সব কিছুই জবাব দিয়ে দিত। ফলে তাঁরাও একটু আশ্বস্ত হন।

অবশেষে মিলল নিজস্ব কম্পিউটার
ইশিখনে ইথিক্যাল হ্যাকিং তো শেখা হলো। বাবার ল্যাপটপে তখন আর কাজ চলছিল না তৃণবের। এবার আবদার করল ভালো কনফিগারেশনের কম্পিউটারের। অল্প বয়সী ছেলে। কম্পিউটার কিনে দিলে সারাক্ষণ কী না কী করে। পড়াশোনা আবার গোল্লায় যাবে না তো! এমনটাই ভাবছিলেন তাঁর বাবা-মা। সে কারণে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে একটু দেরি করেছিলেন। এদিকে তৃণবও নাছোড়বান্দা। রীতিমতো কান্না জুড়ে দেয়। কম্পিউটার তার লাগবেই লাগবে। বাবা যেন কম্পিউটার কিনে দেন সে জন্য ১০০ রাকাত নফল নামাজও পড়েছে সে। অবশেষে ছেলের আবদার রক্ষা না করে পারেননি ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির।

কম্পিউটার রুমে তালা
কম্পিউটার পেয়ে তৃণব নাওয়া-খাওয়া ভুলে গেল। সারাক্ষণ কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকে। এমনও হয়েছে, সারা রাত কাজ করেছে সে। একটুও ঘুমায়নি। তখন তার বেডরুমে কম্পিউটার থাকত। এখন অবশ্য আলাদা রুমে থাকে। সে রুমে তালা লাগিয়ে দেন তাঁর বাবা। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আগে একাডেমিক পড়াশোনা, তারপর অন্য কিছু। তবে মাঝে মাঝে কিছুটা সময়ের জন্য রুম খুলে দেন। তখন তৃণব কাজের ভুবনে হারিয়ে যায়।’

ঘণ্টা অনুপাতে আয়
দুই মাসে মাত্র ১২ ঘণ্টা কাজ করে তৃণবের আয় দুই লাখ টাকার ওপরে। সে প্রতি ঘণ্টা কাজের জন্য ৫০ থেকে ১০০ ডলার নেয়। অবিশ্বাস্য মনে হলেও ছোট তৃণবের এই আয়ের গল্পটা পুরোটাই সত্য। তৃণব নিজেই তার ব্যাখ্যা করে এভাবে, আসলে ইথিক্যাল হ্যাকিংয়ের কাজ এমনই। সময় অনুপাতে টাকা আয় করা যায়। অবশ্য এই সফলতা তার এক দিনে আসেনি। দিনের পর দিন সে কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থেকেছে। চর্চা বাদ দেয়নি এক দিনও। তৃণব বলে, ‘পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শুধু অনুশীলন করেছি। দিন-রাত লাভ-ক্ষতি কোনো কিছুর কথা ভাবিনি। শেখার মাঝে হারিয়ে গেছি।’

কাজের ফিরিস্তি
আপওয়ার্কে ‘হুমায়ুন কবির’ নামে যে মানুষটি আছেন, প্রচুর কাজ করছেন, সে মানুষটি আসলে তৃণব। বয়স ১৮ হয়নি। সে কারণে বাবার নামে আপওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট খুলেছে। আপওয়ার্কে সে কাজের আবেদন করে রাখে। কারো পছন্দ হলে তাকে নক দেয়। আবার তার কিছু ব্যক্তিগত ক্রেতা (পারসোনাল বায়ার) আছে। কিছু কম্পানির সঙ্গেও যোগাযোগ তার বেশ ভালো। এই কম্পানিগুলো অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের। পারসোনাল বায়ার, কম্পানি তার থেকে কাজ করিয়ে নেয়। নিজের কাজ সম্পর্কে তৃণব বলে, ‘আমার কাজের চাহিদা অনেক বলে কম সময়ে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব হয়েছে। এই যেমন—১২ ঘণ্টায় দুই লাখ টাকার বেশি আয় করেছি। ওয়েবসাইট টেস্টিং করে সবচেয়ে বেশি আয় করেছি। এ ছাড়া র‌্যানসামওয়্যার সরানো, ফাইল ডিক্রিপ্ট, ম্যালওয়্যার ক্লিন, অ্যাকাউন্ট সিকিউরিটি, সার্ভার সিকিউরিটি ইত্যাদি কাজও করেছি।’ যেখানে পাঁচ-দশ ডলার দিয়ে বেশির ভাগ নতুন ফ্রিল্যান্সারের আয়ের শুরু হয়, সেখানে তৃণবের প্রথম আয়ই ছিল ২১০ ডলার। এই টাকা সে বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেয়।

নতুনদের জন্য
এ ক্ষেত্রে নতুনদের জন্য তৃণব বলে, ‘নতুনদের একটু বেশি সময় দিতে হবে, আর হতে হবে একটু পরিশ্রমী, না হলে শিখতে পারবে না। মেধা থাকলে সব সম্ভব। আমার বয়সীরা কেউ যদি ইথিক্যাল হ্যাকিং, কোডিং শেখে, তাহলে তাদের জীবন সুন্দর হবে। অনেক খারাপ অভ্যাস থেকে বেঁচে থাকবে। আমাদের দেশের কিশোর-কিশোরীরা অনেক মেধাবী। তাদের নিয়ে আমি অনেক আশাবাদী।’

বাংলালিংক থেকে পেয়েছে অ্যাপ্রিসিয়েশন লেটার
মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশনে ছয় থেকে সাতটি বাগ খুঁজে পেয়েছে তৃণব। এ জন্য বাংলালিংক তাকে তিনটি অ্যাপ্রিসিয়েশন লেটার দেয়। বাংলালিংক থেকে তৃণব সম্পর্কে বলা হয়, ‘তোমাকে দেখে আমরা অনেক অনুপ্রাণিত আর গর্বিত যে আমাদের দেশের অনেক ছোট ছোট বাগ হান্টার আছে, যা উন্নত দেশেও নজিরবিহীন। তোমার দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে আমাদের বাগ হান্ট প্রগ্রামে কোনো বয়সের সীমা নেই।’

স্বপ্ন দেখেন গুগলে কাজ করার
ভালো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে গুগল বা এ রকম বড় কোনো কম্পানিতে কাজ করতে চাই। দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনতে চাই। এভাবেই নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বেশ আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে বলল তৃণব। 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, গোপনে সমঝোতায় পৌঁছালেন জাকারবার্গ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, গোপনে সমঝোতায় পৌঁছালেন জাকারবার্গ
মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। ছবি : এএফপি

ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় অবহেলার দায়ে দায়ের করা আট বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা নিয়ে গোপন সমঝোতায় পৌঁছেছেন মার্ক জাকারবার্গ ও মেটা প্ল্যাটফরমের বর্তমান ও সাবেক পরিচালকরা। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার চ্যান্সারি কোর্টে মামলার শুনানির দ্বিতীয় দিনে এ তথ্য জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সমঝোতার শর্তগুলো আদালতে প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি বিবাদীপক্ষের আইনজীবীরাও এই বিষয়ে মুখ খোলেননি।

শুনানি শুরুর ঠিক আগে হঠাৎ বিচারক ক্যাথলিন ম্যাককরমিক মামলাটি মুলতবি ঘোষণা করেন এবং উভয় পক্ষকে অভিনন্দন জানান।

বাদীপক্ষের আইনজীবী স্যাম ক্লসিক জানিয়েছেন, সমঝোতায় পৌঁছাতে তাদের খুব বেশি সময় লাগেনি। ওই দিনই আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল মেটার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও ধনকুবের বিনিয়োগকারী মার্ক অ্যান্ড্রিসেনের। 

এই মামলায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ, সাবেক প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গসহ বর্তমান ও সাবেক মিলিয়ে মোট ১১ জন কর্মকর্তা।

বাদী শেয়ারহোল্ডারদের অভিযোগ, এসব ব্যক্তি কোম্পানির গোপনীয়তা লঙ্ঘনের দায়ে ফেসবুককে বিপুল অঙ্কের জরিমানার মুখে ফেলেছেন। ফলে তাদের ব্যক্তিগত সম্পদ থেকেই সেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যদিও অভিযুক্তরা অভিযোগগুলো ‘অযৌক্তিক’ বলে দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ফেসবুককে পাঁচ বিলিয়ন ডলার জরিমানা করে।

২০১২ সালে ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষাসংক্রান্ত যে চুক্তি হয়েছিল, তা লঙ্ঘনের অভিযোগেই এই জরিমানা। এই মামলায় মেটা করপোরেশনকে সরাসরি আসামি করা হয়নি।

মামলার বিষয়ে মেটা কোনো মন্তব্য করেনি। এমনকি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেননি বিবাদীপক্ষের আইনজীবীরাও।

ডিজিটাল কনটেন্ট নেক্সটের প্রধান জেসন কিন মনে করেন, এই সমঝোতা হয়তো সংশ্লিষ্টদের কিছুটা স্বস্তি দেবে, কিন্তু জনস্বার্থে দায় স্বীকার করার সুযোগ হারাল।

তার মতে, মামলাটি চালিয়ে নেওয়া হলে ফেসবুকের ভেতরের অনেক অজানা তথ্য প্রকাশ্যে আসত।

মামলার পরবর্তী পর্যায়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল জাকারবার্গের (সোমবার) ও স্যান্ডবার্গের (বুধবার)। এ ছাড়া সাবেক বোর্ড সদস্য পিটার থিল ও রিড হেস্টিংসেরও সাক্ষ্য দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

বাদীপক্ষের অভিযোগ, মেটার পরিচালনা পর্ষদ ২০১২ সালের এফটিসি চুক্তির শর্ত মানা হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি জাকারবার্গ ও স্যান্ডবার্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ফেসবুককে পরিকল্পিতভাবে একটি ‘অবৈধ তথ্য সংগ্রাহক প্ল্যাটফরমে’ পরিণত করেছেন।

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেয়। এরপরই এই কেলেঙ্কারির সূত্র ধরে মামলার সূত্রপাত হয়।

গতকালের শুনানিতে বাদীপক্ষের একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, ফেসবুকের গোপনীয়তা নীতিতে গুরুতর ঘাটতি রয়েছে। যদিও তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি, প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালের চুক্তি ভেঙেছে কি না।

ফেসবুক জানিয়েছে, ২০১৯ সালের পর থেকে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষায় তারা বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষক জেসন কিন মনে করেন, ফেসবুক কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কাণ্ডকে ‘খারাপ কিছু ব্যক্তির কাজ’ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পুরো প্রতিষ্ঠানটির নজরদারিমূলক ব্যাবসায়িক মডেলই ভেঙে পড়েছে এবং সেটি এখনো সংশোধিত হয়নি।

তার মতে, মামলাটি অব্যাহত থাকলে আদালতে হয়তো ফেসবুকের আসল চেহারাটা দেখা যেত—কিন্তু সেই সুযোগটা হারিয়ে গেল। 

মন্তব্য

ব্রিস্টলে চালু যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী সুপার কম্পিউটার ‘ইসামবার্ড-এআই’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ব্রিস্টলে চালু যুক্তরাজ্যের শক্তিশালী সুপার কম্পিউটার ‘ইসামবার্ড-এআই’
সংগৃহীত ছবি

ব্রিস্টলে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো যুক্তরাজ্যের অত্যাধুনিক সুপার কম্পিউটার ‘ইসামবার্ড-এআই’। দেশটির প্রযুক্তিসচিব পিটার কাইল এটি চালু করেন সরকারের নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে।

এই কম্পিউটারটি কেমব্রিজের ‘ডন’ নামের আরেকটি সুপার কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যের পাবলিক এআই শক্তিকে আরো উন্নত করবে। এর লক্ষ্য—ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের অপেক্ষমাণ তালিকা কমানো, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নতুন উপায় খোঁজা, ওষুধ উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা।

ইসামবার্ড-এআই ইতিমধ্যে জানুয়ারিতে একটি ওষুধ গবেষণা প্রকল্পে ব্যবহার শুরু হয়। এখন এটি সম্পূর্ণরূপে চালু হওয়ায় আরো অনেক সরকারি প্রকল্পে ব্যবহার করা যাবে। এই মেশিনে রয়েছে ৫,৪০০-এরও বেশি এনভিডিয়া গ্রেস হপার সুপারচিপ। এটি হিউলেট-প্যাকার্ডের প্রযুক্তিতে তৈরি এবং সরকারি অর্থায়নে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় এটি নির্মাণ করেছে।

যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে এ ধরনের সুপার কম্পিউটার ব্যবস্থার সক্ষমতা ২০ গুণ বাড়ানো হবে।

পাশাপাশি স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসেও এআই উন্নয়নে বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ করা হবে। সরকার বলছে, ১০ লাখ শিক্ষার্থীকে এআই শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে এবং আরো ৭৫ লাখ মানুষকে এটি নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিশ্বজুড়ে এআই প্রতিযোগিতার মধ্যে যুক্তরাজ্য নিজেকে শুধু ব্যবহারকারী নয়, বরং উদ্ভাবক হিসেবেও গড়ে তুলতে চাইছে।

ইতিমধ্যেই ‘ইসামবার্ড-এআই’ বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ সুপার কম্পিউটারের তালিকায় ১১তম স্থানে উঠে এসেছে।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

স্পেসএক্সের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে কাল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
স্পেসএক্সের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে কাল

বিশ্বখ্যাত মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের ব্যবসা পরিচালনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ারের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল আগামীকাল শুক্রবার (১৮ জুলাই) ঢাকায় আসছেন। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্য হলেন আন্তর্জাতিক কৌশল ও সরকারি সম্পর্ক পরিচালক রিচার্ড গ্রিফিথস।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশ সফরে তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে স্টারলিংকের সম্ভাব্য বিনিয়োগ ও অংশীদারিত্বের দিকগুলো মূল্যায়ন করবে এবং সরকার ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবে।

পাশাপাশি তারা বাংলাদেশে স্টারলিংকের অফিসিয়াল যাত্রা শুরুর ঘোষণা দেবে।

লরেন ড্রেয়ারের নেতৃত্বে আগত দলটি ব্যবসায়িক সম্ভাবনা যাচাই, নতুন প্রযুক্তির স্থানীয় বাস্তবায়ন এবং গ্রামীণ ও দুর্গম অঞ্চলে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দেখছে।

স্পেসএক্স ও স্টারলিংকের এই সফর বাংলাদেশের ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনের লক্ষ্য পূরণে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আগামীকাল প্রতিনিধিদলটি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।

পরে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে প্রেস কনফারেন্সে বক্তব্য রাখবে। রাতে ঢাকার হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং আগামী ১৯ জুলাই প্রতিনিধিদল দেশে ফিরে যাবেন।

মন্তব্য

তথ্য অধিকার নিয়ে নতুন অভিযোগের মুখে টিকটক

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
তথ্য অধিকার নিয়ে নতুন অভিযোগের মুখে টিকটক
ফাইল ছবি : এএফপি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জেনারেল ডেটা প্রটেকশন রেগুলেশনের (জিডিপিআর) বিধি-নিষেধ না মানার অভিযোগে অনলাইন গোপনীয়তা নিয়ে কাজ করা কর্মীরা বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট টিকটক ও আরো চীনা মালিকানাধীন দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ করেছেন। বিধি-নিষেধ অনুযায়ী একজন ব্যবহারকারী তার ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে প্রক্রিয়া করা হচ্ছে তা জানার অধিকার রাখেন। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিধি-নিষেধ অনুসরণ করে নি বলে জানিয়েছে অভিযোগকারীরা। 

অস্ট্রিয়াভিত্তিক প্রখ্যাত গোপনীয়তা সংগঠন নোইব (নান অব ইওর বিজনেস) জানুয়ারিতেও এই তিনটি প্রতিষ্ঠানসহ ছয়টি চীনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল।

তাদের অভিযাগ ছিল—‘অবৈধভাবে’ ইউরোপীয় নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চীনে পাঠানো হয়েছে।

নোইব জানিয়েছে, শেইন, টেমু ও শাওমি অভিযোগকারীদের বাড়তি তথ্য সরবরাহ করলেও টিকটক, আলিএক্সপ্রেস ও উইচ্যাট ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিডিপিআর বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করেই চলেছে। টিকটকের বিরুদ্ধে গ্রিসে, আলিএক্সপ্রেসের বিরুদ্ধে বেলজিয়ামে ও উইচ্যাটের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসে ডেটা সুরক্ষা কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে তাদের ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে প্রক্রিয়া হচ্ছে তা জানানো ও জরিমানা করার নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়।

নোইব বলেছে, ‘এই তিনটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে প্রক্রিয়া হচ্ছে সেই তথ্য প্রদানের অনুরোধ মানেনি। এতে করে ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের মৌলিক গোপনীয়তার অধিকার চর্চা ও তাদের ব্যক্তিগত ডেটা কিভাবে প্রক্রিয়া হচ্ছে তা জানার সুযোগ নেই। টিকটক অভিযোগকারীর তথ্যের শুধু কিছু অংশ এলোমেলো ভাবে সরবরাহ করেছে, যা বোঝা অসম্ভব।’

ইউরোপে তদন্ত শুরু হওয়ার পর গত সপ্তাহে বেইজিং দাবি করেছে, তারা কোনো প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ কিংবা সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়নি।

ব্যক্তিগত ডেটা চীনে পাঠানোর দায়ে গত মে মাসে আয়ারল্যান্ডের ডেটা সুরক্ষা কমিশন টিকটককে ৫৩০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছিল।

নোইব জিডিপিআর লঙ্ঘনের কারণে মেটা ও গুগলের মতো বহু মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে। তারা বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছে, ‘চীনা অ্যাপগুলো মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়েও খারাপ।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ