<p>২০১৩ সালে ‘আপসহীন’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন কিংবদন্তি গীতিকার-প্রযোজক ও পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। দুইবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বায়োপিক এটি, পারিপার্শ্বিক কারণে তখন এই তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ছবিতে খালেদা জিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিপুণ আক্তার, বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের চরিত্রে আছেন হেলাল খান। ১১ বছর পর এবার আলোর মুখ দেখতে চলেছে ছবিটি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।</p> <p><strong>ম্যাডামের সঙ্গে দেখা করে সিদ্ধান্ত নেব : হেলাল খান (প্রযোজক-অভিনেতা)</strong><br /> ২০১৩ সালের নভেম্বরে শুটিং শুরধ করে ডিসেম্বরেই শেষ হয়। দ্রুত পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ সম্পন্ন করে সেন্সরে জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন হেলাল খান। তার আগেই গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের [বিএনপি] এই কর্মী। তিনি ছিলেন দলের সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের নেতা। পরিকল্পনা ছিল, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের [৫ জানুয়ারি] আগে ছবিটি সারা দেশে মুক্তি দেবেন। হেলাল খান জেলে থাকায় গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১১ বছর পর আসছে আপসহীনমুক্তির কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এখন গাজী মাজহারুল আনোয়ার বেঁচে নেই। ছবিটি নিয়ে তাঁর অনেক স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতেই ছবিটি শিগগির মুক্তি দিতে চান হেলাল খান। তাঁর আগে অবশ্যই বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে একবার দেখা করতে চান তিনি। হেলাল খান বলেন, ‘ম্যাডাম অসুস্থ। এই মুহূর্তে এটা নিয়ে কথা বলাটা ঠিক হবে না। তিনি সুস্থ হলেই ছবিটি নিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করব। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই হবে।’</p> <p>হেলাল খান আরো বলেন, ‘মাঝখানে ১১ বছর পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে অনেক কিছু ঘটে গেছে। তাই ছবিটিতে বেশ কিছু পরিবর্তন-পরিমার্জন করতে হবে। কিছু দৃশ্য হয়তো নতুন করে শুটিং করব। কিছু দৃশ্য সম্পাদনা করে বাদ দেওয়া হবে। এ জন্যও কিছু দিন সময় লাগবে। আশা করছি, এই বছরই দর্শকদের ছবিটি দেখাতে পারব।’</p> <figure class="image"><img alt="5" height="300" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/08.July/21-08-2024/121/2_kaler-kantho--21-8-2024.jpg" width="500" /> <figcaption><sub><em>১১ বছর পর আসছে ‘আপসহীন’</em></sub></figcaption> </figure> <p><strong>ম্যাডামের সঙ্গে নাকি আমার চেহারার দারুণ মিল : নিপুণ আক্তার অভিনেত্রী</strong><br /> ‘আপসহীন’ ছবিতে বেগম খালেদা জিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিপুণ আক্তার। ব্যক্তিজীবনে এই অভিনেত্রী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমর্থক। ছবিটিতে যুক্ত হওয়ার নেপথ্যের ঘটনা জানিয়ে তিনি বলেন, “একদিন গাজী মাজহারুল আনোয়ার আঙ্কেল আমার বাসায় আসেন। ছবিটির কথা জানালেন। তখন শাহ আলম কিরণ ভাইয়ের ‘৭১-এর মা জননী’ ছবির শুটিং চলছে। আমাকে আঙ্কেল বললেন, ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জীবনী নিয়ে ‘আপসহীন’। আমাকে তাঁর চরিত্রেই রূপদান করতে হবে। জানতে চাইলেন, আমার আপত্তি আছে কি না। জানালাম, অভিনেত্রী হিসেবে ম্যাডামের চরিত্রে অবশ্যই অভিনয় করা উচিত। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তখন বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে রাজপথে সরব। আমি রাজি হওয়ায় আঙ্কেল খুব খুশি হলেন। জানালেন, আমার আগে জয়া আহসান ও নুসরাত ইমরোজ তিশার কথা উঠেছিল। তবে গাজী আঙ্কেলই হেলাল ভাইকে বলেছিলেন, নিপুণ হলে ম্যাডামের চেহারার সঙ্গে দারুণ মিলবে।’ শুটিংয়ের আগে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে অনেক পড়াশোনাও করেছেন নিপুণ। গাজী মাজহারুল আনোয়ারই তাঁকে সহযোগিতা করেছিলেন। নিপুণ বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আঙ্কেলের [গাজী মাজহারুল আনোয়ার] প্রতি। আজ তিনি বেঁচে নেই, তবে তাঁর সৃষ্টি আছে। আশা করছি, হেলাল ভাই দ্রুত ছবিটি মুক্তি দেবেন। আমিও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করব।’<br />  <br /> <strong>গাজী মাজহারুল আনোয়ার নির্মিত শেষ চলচ্চিত্র</strong><br /> ‘আপসহীন’ নির্মাণের আগে অনেক দিন ধরে চিত্রনাট্য নিয়ে কাজ করেছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। বেশ কয়েকবার বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গেও ছবিটি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। অভিনেতা ও ছবির প্রযোজক হেলাল খানের সঙ্গে দিন-রাত এক করে কাজ করেছিলেন—জানালেন প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ারের সন্তান সরফরাজ আনোয়ার উপল। তিনিও চান দ্রুত ছবিটি মুক্তি পাক।</p> <p>উপল বলেন, ‘আমরা পারিবারিকভাবেও উদ্যোগ নিয়েছি বাবার সব সৃষ্টি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। হেলাল আঙ্কেল এখন দেশে আছেন। আমি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করব। এটিই আমার বাবার নির্মিত শেষ চলচ্চিত্র। দর্শক দেখলে বাবার আত্মা শান্তি পাবে। এটা শুধু যে একটা চলচ্চিত্র তা কিন্তু নয়, একই সঙ্গে সফল রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার জীবনীও। দেখলে দর্শক জানতে পারবে দেশের প্রতি তাঁদের ভালোবাসা, ত্যাগ ও মহিমার কথা।’</p>