<p>বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেছেন, ‘দেশ থেকে ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে গেলেও ফ্যাসিবাদের মূল এখনো রয়ে গেছে। যদি এটিকে চূড়ান্তভাবে নির্মূল করতে না পারি তাহলে আমাদের লক্ষ্য অর্জন হবে না। কারণ ফ্যাসিবাদকে সুযোগ দেওয়া মানে শত শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা।’</p> <p>শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত ‘গণমাধ্যম ও ফ্যাসিবাদ উত্তর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক মতবিনিময়সভায় তিনি এসব কথা বলেন।</p> <p>কাদের গণি চৌধুরী বলেন, ‘কারা ফ্যাসিবাদের দালাল তা আমরা জানি। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে প্রশংসা করত, অথচ কোনো প্রশ্ন করত না। তেল মেরে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিত। মনে হতো, প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন যেন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘আমরা জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ভুলে যাইনি। তারা আন্দোলনে কিভাবে নিরীহ শিক্ষার্থীদের পাখির মতো হত্যা করেছে, আমরা তা ভুলে যাইনি। যারা ফ্যাসিবাদের দালাল তাদের সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না।’</p> <p>কাদের গণি আরো বলেন, ‘আমাদের নিজেদের নিয়ে কথা বলতে হবে। আমরা সংবাদমাধ্যম হতে পেরেছি কিন্তু গণমাধ্যম হতে পারেনি। এখন বগলদাবা সাংবাদিক, সম্পাদকের অভাব নেই। তারা আমাদের সাংবাদিকদের মান-মর্যাদা নষ্ট করছে। বিভিন্ন সুবিধার জন্য তারাই ফ্যাসিবাদিদের থেকে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। একজন সৎ সাংবাদিক কখনো ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আপস করেন না। কখনো খামের জন্য অপেক্ষা করেন না।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘আমরা (সাংবাদিকরা) কি সমাজের অতন্দ্র প্রহরী হতে পেরেছি? এত বছর তো আমরা সাংবাদিক নয়, চাটুকারিতাই করেছি। তাই তো ফ্যাসিবাদের দোসর হয়ে কাউকে কাউকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। আমাদের ভুলগুলো বলতে হবে। আজ সময় এসেছে, সৎ সাংবাদিকতা ফিরিয়ে আনার, ফ্যাসিবাদ যেখানে আসবে, সেখানেই প্রতিবাদ করার। সাংবাদিকতাকে লাথি মেরে আমরা দলদাস হয়ে গেছি। হলুদ সাংবাদিকতা, তথ্য সন্ত্রাস সঠিক সাংবাদিকতাকে ম্লান করে দিচ্ছে।’</p> <p>সাগর-রুনি হত্যার বিচার যেসব বিশ্বাসঘাতকতাদের কারণে এখনো হচ্ছে না তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা ও প্রতিথযশা সাংবাদিক শফিক রেহমান নির্যাতনের শিকার নিয়ে ওই সময়ের কোনো মিডিয়া তেমন কোনো ভূমিকার রাখেনি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।</p> <p>সভায় সিনিয়র সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্য জাহেদুল করিম কচি বলেন, মহান বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা পেয়েছে। বিগত সরকার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধাচরণ করেছে। যেসব সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের পুনর্বাসন করার দাবি জানান তিনি। </p> <p>চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমানের সঞ্চালনায় মতবিনিময়সভায় আরো বক্তব্য দেন দৈনিক কালের কণ্ঠ’র ব্যুরোপ্রধান মুস্তফা নঈম, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সিনিয়র সাংবাদিক মাঈনুদ্দীন কাদেরী শওকত, একাত্তর টিভির ব্যুরোপ্রধান সাইফুল ইসলাম শিল্পী, দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম সেলিম, দৈনিক দিনকালের ব্যুরোপ্রধান হাসান মুকুল, সিনিয়র সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মাহবুব রশিদ, কামরুল হুদা, ওয়াহিদ জামান, এসএ টিভির ব্যুরোপ্রধান সোহাগ কুমার বিশ্বাস, দৈনিক সংগ্রামের ব্যুরোপ্রধান নুরুল আলম মিন্টু, বাসসের বিশেষ প্রতিনিধি মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, সাংবাদিক শাহ নেওয়াজ রিটন, যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক মজুমদার নাজিম উদ্দীন প্রমুখ।</p> <p>সভা শেষে সদ্য প্রয়াত বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।</p>