<p>মহান আল্লাহ ভাষাকে নিজের দান ও অনুগ্রহ বলেছেন। এ জন্য মুসলমানরা কখনো কোনো ভাষাকে ছোট করে দেখেনি, বরং মুসলমানের মাতৃভাষা যা-ই হোক না কেন, সে মাতৃভাষাকে সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে। কেননা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে—‘আর আমি প্রত্যেক রাসুলকে স্বজাতির ভাষায়ই পাঠিয়েছি, যাতে সে তাদের কাছে বর্ণনা দেয়।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ৪)</p> <p><strong>মুসলমানের হাতে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি</strong></p> <p>বাংলার মুসলমানরাও সুপ্রাচীন কাল থেকে বাংলা ভাষার উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখেছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ লেখেন, ‘পাঠান আমলে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্য মুসলমান আমির ও সুলতানদের সহায়তায় গড়িয়া ওঠে এবং সমৃদ্ধশালী হয়। জালালুদ্দীন মুহাম্মদ শাহ (রাজা গণেশের পুত্র), ইউসুফ শাহ, হোসেন শাহ, নসরত শাহ, ফিরোজ শাহ, নিযাম শাহ সুর, পরাগল খাঁ, ছুটি খাঁ এবং মাগন ঠাকুরের নাম বাংলা কবিরা অমর করিয়া রাখিয়াছেন। ব্রিটিশ আমলেও বাংলা সাহিত্যে মুসলমানদের দান নগণ্য নয়, বরঞ্চ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাইতেছে।’ (রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের দলিলপত্র, পৃষ্ঠা ১৫)</p> <p><strong>বাংলা ভাষা ও আলেমদের অবস্থান</strong></p> <p>মুসলমানদের হাতে উর্দু ভাষার জন্ম এবং তা ইসলামী জ্ঞানচর্চার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হওয়ায় উর্দু ভাষার সঙ্গে আলেমদের ঘনিষ্ঠ সংশ্লিষ্টতা ছিল। তবে তাঁরা মাতৃভাষাকে উর্দুর ওপর প্রাধান্য দিতে কখনো ভুল করেননি। প্রত্যাখ্যাত সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ লিখেছেন, ‘মুসলিম বাংলার সৌভাগ্য যে উর্দুপ্রীতি যাদের বেশি থাকবার কথা, সেই আলেম সমাজই এই অপচেষ্টায় বাধা দিয়েছিল। মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী উর্দুবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দান করেছিলেন। বাংলার ওপর উর্দু চাপাবার সে চেষ্টা তখনকার মতো ব্যর্থ হয়।’ (একুশের মাওলানারা, পৃষ্ঠা ৬৬)</p> <p>রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন শুরু হলে সর্বশ্রদ্ধীয় ব্যক্তিত্ব মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.) ভাষা আন্দোলনের প্রতি জোরাল সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘মাতৃভাষা বাংলাকে ভাষার মর্যাদাদান আমাদের ন্যায্য অধিকার। আমাদের এ দাবি মানতেই হবে।...পাকিস্তানের এক ডানাকে দুর্বল করে ধ্বংস ডেকে আনা হবে আত্মহত্যার শামিল। মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদাদান আমাদের ন্যায্য অধিকার।’ (মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.) স্মারকগ্রন্থ, পৃষ্ঠা ১০৮)</p> <p><strong>ইসলামপন্থীদের হাতেই আন্দোলনের সূচনা</strong></p> <p>ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ও শিক্ষকের উদ্যোগে গঠিত তমদ্দুন মজলিস ছিল একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। সংগঠনটি ইসলামী ভাবধারা ও মূল্যবোধে পুষ্ট ছিল। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রামে তমদ্দুন মজলিসের ভূমিকা ঐতিহাসিক ও অনবদ্য। পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার মাত্র এক মাস পর ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ সংগঠনটি ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ শীর্ষক একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছিল। এটিই ছিল ভাষা আন্দোলনের প্রথম পুস্তিকা। ১৮ পৃষ্ঠার পুস্তকে অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল মনসুর আহমদ ও অধ্যাপক আবুল কাসেমের মতো ব্যক্তিদের মতামত ছাপা হয়েছিল। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে তমদ্দুন মজলিসের মুখপাত্র সাপ্তাহিক সৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে সংগঠনটি প্রথম সেমিনারের আয়োজন করেছিল। তমদ্দুন মজলিসের উদ্যোগেই ১ নভেম্বর ১৯৪৭ রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে ১৪ নভেম্বর ১৯৪৭ প্রথমবারের মতো মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয় তমদ্দুন মজলিস। (বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেপথ্য-কাহিনি, পৃষ্ঠা ৪৪-৬৬)</p> <p><strong>আলেমদের বহুমুখী অবদান</strong></p> <p>স্বাধীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে আলেমরা বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রদানের দাবিতে সর্বতোভাবে সক্রিয় হন।</p> <p><strong>১. প্রতিবাদ ও বিবৃতি : </strong>রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের মাধ্যমে। কেননা তারা ঘোষণা করেছিল উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১৭ নভেম্বর ১৯৪৭ পূর্ববঙ্গের প্রধানমন্ত্রী বরাবর বিশিষ্ট ব্যক্তিদের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়। স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আলেম ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যেমন মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ, মওলানা আবদুল্লাহিল বাকী, মওলবী আবদুল করীম সাহিত্যবিশারদ, মওলবী আবুল কালাম শামসুদ্দিন, বার. এট. ল. মওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, আল্লামা ডা. মহিউদ্দীন, মওলবী আবুল মনসুর আহমদ ও মওলবী মোহাম্মদ মোদাব্বের। (ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, পৃষ্ঠা ২০৬-২০৮)</p> <p><strong>২. পদ প্রত্যাখ্যান : </strong>মওলানা আকরম খাঁ ছিলেন পাকিস্তান আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা নির্ধারণে তাঁকে প্রধান করে জাতীয় কমিটি ঘোষণা করলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ২১ জুন ১৯৪৭ দৈনিক আজাদে তিনি বিবৃতি দেন, ‘পূর্ব্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হইবে তাহা নির্ধারণের জন্য পাকিস্তান সরকার আমাকে সভাপতি করিয়া ১৫ জন সদস্যের এক কমিটি গঠন করিয়াছেন।...পূর্ব্ব পাকিস্তানের সরকারি ভাষা কী হইবে, তা নূতন করিয়া নির্ধারণের জন্য যদি কমিটি সত্যই গঠিত হইয়া থাকে তাহা হইলে উক্ত কমিটিতে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব-পর নহে। কারণ পূর্ব্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাঙ্গলা হইবে তা পূর্ব্ব পাকিস্তানের ব্যবস্থাপক পরিষদেই সিদ্ধান্ত হইয়া গিয়াছে। এমতবস্থায় ভাষা নির্ধারণের জন্য কমিটি গঠনের কোনো প্রয়োজনীয়তা নাই বলিয়া আমি মনে করি।’ (একুশের মাওলানারা, পৃষ্ঠা ৪২)</p> <p><strong>৩. মিছিল ও সমাবেশ : </strong>রাষ্ট্রভাষা সংগ্রামে দেশের আলেম সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী অনেক সংগঠন সক্রিয় অংশগ্রহণ করে। যেমন ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার ওসমানিয়া মাদরাসার প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রভাষার দাবিতে জমিয়তে তোলাবায়ে আরাবিয়া ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ছাত্র গণজমায়েত হয়। একইভাবে রক্তাক্ত ২১ ফেব্রুয়ারির পর সিলেটের ঐতিহাসিক গোবিন্দ পার্কে ছাত্র সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মওলানা ওলিউর রহমান। (মুক্তিযুদ্ধে অনন্য শহীদ, পৃষ্ঠা ১১)</p> <p><strong>৪. জেলখাটা :</strong> রাষ্ট্রভাষা সংগ্রামে অংশগ্রহণের দায়ে বহু আলেম জেল পর্যন্ত খেটেছেন। তাঁদের ভেতর মাওলানা ভাসানী অন্যতম। যে সভায় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় তিনি সে সভায় সভাপতিত্ব করেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় এবং তিনি এক বছর চার মাস জেল খাটেন। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে ঢাকা আলিয়া থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের করলে মাওলানা মুহিউদ্দীন খান পুলিশি আক্রমণের শিকার হন। এ সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি দেড় মাস কারাবরণ করেন। (একুশের মাওলানারা, পৃষ্ঠা ১৬৬ ও ২৫২)</p> <p>মাওলানা শামছুল হুদা পাঁচবাগী (রহ.) জেলে বসেই ভাষা আন্দোলনের ইশতেহার প্রকাশ করেন ‘তোমাদের কপালে ছাই, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।’ ভাষাশহীদ আব্দুল জব্বার ছিলেন তাঁর শিষ্য ও রাজনৈতিক কর্মী। (ভাষাশহীদ আব্দুল জব্বার, পৃষ্ঠা ৬৮)    </p> <p><strong>৫. ইসলামী সংগঠনের ভূমিকা : </strong>ভাষা আন্দোলন শুরু হলে পূর্ব বাংলার বেশির ভাগ ইসলামী সংগঠন বাংলা ভাষার পক্ষে অবস্থান নেয়। রাজনৈতিক সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি বাঙালির ভাষার অধিকারকে সমর্থন করেন। জমিয়ত ও নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি ছিলেন মাওলানা আতহার আলী (রহ.)। তিনি দলীয় সম্মেলনে রাষ্ট্রভাষার পক্ষে সমর্থন ঘোষণা করেই ক্ষ্যান্ত হননি, বরং তাকে দলীয় সংবিধানে স্থান দিয়ে অখণ্ড পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা হিসেবে বাংলার মর্যাদা সমুন্নত করেন। তাঁর ভূমিকা তুলে ধরে লেখা হয়, ‘তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সংবিধানের ধারায় লিখলেন, উর্দুর সাথে বাংলাকেও পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে হবে। তারপর বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও সম্মেলনে সুস্পষ্ট তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার যৌক্তিক প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত জোরাল ভাষায় তুলে ধরেন।’ (বাংলাদেশের স্বাধীনতা : আলেমদের ফলানো ফসল যেভাবে ঘরে তোলা হলো, পৃষ্ঠা ২৬)</p> <p><strong>৬. পত্রপত্রিকার ভূমিকা : </strong>ভাষা আন্দোলনের সময় আলেম ও ইসলামপন্থীদের সম্পাদিত পত্রিকাগুলোর  ভূমিকাও ছিল অবিস্মরণীয়। এ ক্ষেত্রে মওলানা আকরম খাঁর সম্পাদিত দৈনিক আমাদের ভূমিক ঐতিহাসিক। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে আন্দোলন দানা বাঁধতে শুরু করলে ১৯৪৮ সালে দৈনিক আজাদে কয়েক শ সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া তমদ্দুন মজলিসের সাপ্তাহিক সৈনিক, খতিবে আজম মাওলানা ছিদ্দীক আহমদ (রহ.)-এর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রকাশিত দৈনিক নাজাত, সাপ্তাহিক নেজামে ইসলাম, আল-হেলাল ইত্যাদি পত্রিকাও মাতৃভাষার পক্ষে জোরাল ভূমিকা পালন করে। (একুশের মাওলানারা : ভাসানী, আতহার আলী ও খতিবে আজম সংক্রান্ত আলোচনা)</p> <p><strong>৭. আইনসভায় ভূমিকা : </strong>মিছিল, সমাবেশ ও রাজনৈতিক প্রতিবাদের মতো আইনসভায়ও আলেমরা বাংলা ভাষার পক্ষে জোরাল ভূমিকা পালন করেন। ১৯৩৭-১৯৪৭ পর্যন্ত ১১ বছর মওলানা ভাসানী আসাম আইনসভার সদস্য ছিলেন। তিনি সেখানে বাংলায় বক্তৃতা করেন এবং স্পিকারকে বাংলায় উত্তর দিতে বাধ্য করেন। এটাই ছিল বাংলা ভাষার প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ ছাত্র-জনতার ওপর নগ্ন হামলা হলে ২২ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদে সর্বপ্রথম এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান এবং স্পিকারের সঙ্গে দীর্ঘ বিতর্কে লিপ্ত হন। এ ছাড়া তিনি পাকিস্তান গণপরিষদে সর্বপ্রথম বাংলা ভাষায় বক্তব্য দেন। ঢাকায় বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার দাবিও তিনিই গণপরিষদে উত্থাপন করেন। (একুশের মাওলানারা, পৃষ্ঠা ১৪৯, ১৭৭, ১৮৪ ও ১৯১)</p> <p><strong>৮. শহীদদের জানাজা পড়া : </strong>২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভেঙে প্রতিবাদ করার যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তাতে জোরাল সমর্থন দেন। তিনিই ছিলেন সেই সভার সভাপতি। এ ছাড়া তিনি রাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ২২ ফেব্রুয়ারি শহীদদের গায়েবানা জানাজা পড়ান এবং মোনাজাতে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। (জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫, পৃষ্ঠা ১০৬; ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, পৃষ্ঠা ৪২৩)</p> <p><strong>উর্দুপ্রেমীরা আলেম নন</strong></p> <p>বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন করার সময় সমাজের একদল মানুষ এর বিরোধিতা করেছিল। বস্তুত তারা ছিল ‘কথিত শরিফ’ তথা উচ্চবিত্ত ও জমিদার বংশের লোক। তারা আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে উর্দু চর্চা করত এবং তাদের পারিবারিক ভাষাও ছিল উর্দু। যেমন পশ্চিমবঙ্গের সোহরাওয়ার্দী পরিবার, রংপুরের সাবের পরিবার, টাঙ্গাইলের গজনবি ও পন্নি পরিবার, টাঙ্গাইল ও বগুড়ার চৌধুরী পরিবার, ঢাকার খাজা নবাব পরিবার। এদের কেউ কেউ শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে উর্দু ভাষার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। (বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেপথ্য-কাহিনি, পৃষ্ঠা ১৮-১৯)</p> <p>বরং তারা বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বও করেনি। ড. এনামুল হক বলেন, ‘অল্পসংখ্যক সৈয়দ, সেখ ও মোগল ছাড়া বাঙ্গালার বিপুল মুসলমান জনসাধারণ খাঁটি বাঙ্গালী এবং বাঙ্গলা ভাষাকেই প্রাচীনকাল হইতে মাতৃভাষারূপে গ্রহণ করিয়াছিলেন।’ (প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান, পৃষ্ঠা ১০)</p> <p>আল্লাহ আলেমদের সংগ্রামকে কবুল করেন। আমিন।</p>