<p>বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান শাহজীবাজার রাবার বাগানের তিন শতাধিক শ্রমিকের দুঃসময় চলছে। তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।</p> <p>রাবার শ্রমিকদের মাসিক বেতন ২০০৯ সালে বেড়ে হয়েছে চার হাজার ৩৫০ টাকা। গত বৃহস্পতিবার শ্রম মন্ত্রণালয় পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা ঘোষণা করলেও ইস্পাত, চিনি, রাসায়নিক ও রাবার শ্রমিকদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়নি।</p> <p>শাহজীবাজারের রাবার শ্রমিক লুৎফুর রহমান বলেন, ‘গাইবান্ধা থেকে ১৯৯০ সালে ৬০০ টাকা বেতনে যুবক বয়সে রাবার বাগানে শ্রমিকের চাকরি নিয়েছিলাম। আশা ছিল একদিন ভালো বেতন পেয়ে সংসার চালাব। কিন্তু ২৮ বছর হয়ে গেল এখনো আশানুরূপ বেতন বাড়েনি। যে বেতন পাই তা দিয়ে থাকা-খাওয়ার খরচ বাদে তেমন কিছু থাকে না। বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান ও মা-বাবার জন্য টাকা পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে।’</p> <p>একই অবস্থা প্রায় ৩৫০ শ্রমিকের। এ কারণে রাবার শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বিষয়ে কোনো কথা বলছে না। কোনো শ্রমিক এ নিয়ে কথা বলতে গেলে বদলি ও বরখাস্ত করার হুমকি দেওয়া হয়। শ্রমিকদের অভিযোগ, বাগানের কাঁচা রাবার বিক্রি করে চার হাজার কোটি টাকা ব্যাংকে সঞ্চয় করে রাখা হয়েছিল। এ টাকার লভ্যাংশ হিসেবে ২০১১-২০১২ অর্থবছরে প্রত্যেক শ্রমিক ৩৬ হাজার টাকা করে পায়। কিন্তু এর পর থেকে আর কোনো লভ্যাংশ দেওয়া হচ্ছে না। এর কোনো জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নেই।</p> <p>শাহজীবাজার রাবার বাগান শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির সভাপতি আলামিন জানান, বর্তমান সরকার মজুরি বোর্ড করে ইস্পাত, চিনি, বস্ত্র, রাসায়নিক ও রাবার শ্রমিকদের বেসিক বেতন আট হাজার ৭০০ টাকা করার ঘোষণা দেয়। কিন্তু বিএফআইডিসি এর বাস্তবায়ন করছে না। এতে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মজুরি বোর্ডের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য শ্রমিকরা বিভিন্ন সময় মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি পালন করেছে। তিনি বলেন, স্বল্প বেতনে চাকরি করে শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দুঃসময় কাটাচ্ছে।</p> <p>শাহজীবাজার রাবার বাগানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মতুর্জ আলী বলেন, রাবার গাছের বয়সের পাশাপাশি শ্রমিকদেরও বয়স বেড়েছে। এখন রাবার শিল্পের দুঃসময় চলছে। প্রতিবছর বাগানে অর্ধেক টাকা লোকসান দিতে হয়। তবে নতুন মজুরি বাস্তবায়ন করলে শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট দূর হবে।</p>