<p>ধোঁকা ও প্রতারণা মুমিনের কাজ নয়। এটি মুনাফিকের স্বভাব। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ মুনাফিকদের এই বদ-অভ্যাসটি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ ও মুমিনদের তারা প্রতারিত করে, বস্তত তারা নিজেদেরই নিজেরা প্রতারিত করছে, অথচ তারা তা বুঝে না। (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৯)</p> <p>তাই কোনো মুমিন কোনো অবস্থায়ই ধোঁকা ও প্রতারণায় লিপ্ত হতে পারে না। কারণ মহান আল্লাহ ধোঁকাবাজ ও প্রতারকদের পছন্দ করেন না। মানব জাতির সঙ্গে প্রথম প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিল ইবলিস শয়তান।</p> <p>শয়তান আদম ও হাওয়া (আ.)-কে প্ররোচনা, ধোঁকা ও প্রলোভন দেখিয়ে নিষিদ্ধ গাছের ফল খেতে উদ্বুদ্ধ করে। আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বলল, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের এ গাছ থেকে নিষেধ করেননি, তবে তা এ কারণে যে তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও কিংবা হয়ে যাও এখানে চিরকাল বসবাসকারী। সে তাদের কাছে কসম খেয়ে বলল, আমি অবশ্যই তোমাদের হিতাকাঙ্ক্ষী।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ২১-২১)</p> <p>অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিল। বলল, হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দেব অনন্তকাল জীবিত থাকার গাছের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা?’ (সুরা ত্বহা, আয়াত : ১২০)</p> <p>দুনিয়াতেও কিছু মানুষ শয়তানে প্ররোচনায় পড়ে মানুষকে ধোঁকা দেয়। কেউ কেউ এই নিম্ন শ্রেণির কাজের মাঝেই আনন্দ খুঁজে পায়। অথচ ইসলামের দৃষ্টিতে এটি খুবই জঘন্য কাজ। যারা ধোঁকা ও প্রতারণায় লিপ্ত হবে রাসুল (সা.) তাদের উম্মতের তালিকা থেকে বহিষ্কার করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে প্রতারণা করে, সে আমার দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম, হাদিস : ১০২)</p> <p>ধোঁকাবাজদের মূল অস্ত্র হলো, মিথ্যা। তারা সাধারণত এর মাধ্যমেই মানুষকে প্রতারিত করে। মানুষের হক নষ্ট করে। আল্লাহর রাসুল (সা.) এদের ব্যাপারে কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।</p> <p>মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যার মধ্যে চারটি স্বভাব আছে, সে প্রকৃত মুনাফিক। আর যার মধ্যে এ চারটি থেকে কোনো একটি স্বভাব আছে, সেটি ত্যাগ করা পর্যন্ত তার মধ্যে কপটতার একটি স্বভাব বিদ্যমান। ওই চার স্বভাব হলো, যখন তার কাছে আমানত রাখা হয়, তখন সে তা খেয়ানত করে; যখন সে কথা বলে মিথ্যা বলে; যখন সে অঙ্গীকার করে, প্রতারণা করে, আর যখন সে বিবাদে জড়ায়, গালাগাল করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৪, মুসলিম, হাদিস : ৫৮)</p> <p> </p>