<p>মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে এই মর্মে দোয়া করেন, ‘আমার জন্য আমার স্বজনদের থেকে একজনকে উজির বানিয়ে দিন।’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ২৯)</p> <p> </p> <p>তাফসির : মুসা (আ.) ফেরাউনের কাছে দাওয়াত নিয়ে যাওয়ার আগে মহান আল্লাহর কাছে পাঁচটি দোয়া করেছেন। আগের কয়েকটি আয়াতে তিনটি দোয়া বর্ণনা করা হয়েছিল। আলোচ্য আয়াতে চতুর্থ দোয়া বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি মহান আল্লাহর কাছে এই মর্মে দোয়া করেছেন যে হে আল্লাহ, আমার পরিবারবর্গ থেকে আমার জন্য একজন উজির করুন। আরবি অভিধান মতে, উজির শব্দের অর্থ বোঝা বহনকারী। রাষ্ট্রের উজির তাঁর বাদশাহর দায়িত্ব সহকারী হিসেবে বহন করেন। তাই তাঁকে উজির বলা হয়।</p> <p>উজির উচ্চপদস্থ মন্ত্রী বা উপদেষ্টার পদ। আব্বাসীয় খলিফারা মন্ত্রীদের উজির উপাধি দিয়েছিলেন। আগে তাঁদের কাতিব (সচিব) ডাকা হতো।</p> <p>আধুনিক যুগে আরব বিশ্ব, ইরান, তুরস্ক, পূর্ব আফ্রিকা, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানে সরকারের মন্ত্রীদের বোঝাতে এই শব্দ ব্যবহার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বোঝাতে উজিরে আজম শব্দ ব্যবহৃত হয়।</p> <p>এই দোয়া থেকে মুসা (আ.)-এর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার জন্য একজন উজির চেয়ে নিয়েছেন। এই থেকে বোঝা যায়, গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেলে নিজের সহকারী বা উজির রাখা ভালো। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা যখন কোনো ব্যক্তির হাতে রাষ্ট্রের শাসনক্ষমতা অর্পণ করেন এবং তার কল্যাণ চান, তখন তার সাহায্যের জন্য একজন সৎ উজির দান করেন। রাষ্ট্রপ্রধান কোনো জরুরি কাজ ভুলে গেলে তিনি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি যে কাজ করতে চান, উজির তাতে সাহায্য করেন।’ (নাসাঈ, হাদিস : ৪২০৪)</p> <p>উজির একজন ঘনিষ্ঠ সহচরের মতো। তিনিও এক ধরনের বন্ধু, সহচর ও সঙ্গী। রাসুল (সা.) বলেছেন, সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর উপমা হলো কস্তুরী বহনকারী (আতর বিক্রেতা) ও কামারের হাঁপরের মতো। মৃগ কস্তুরী বহনকারী হয়তো তোমাকে কিছু দান করবে কিংবা তার কাছ থেকে তুমি কিছু খরিদ করবে কিংবা তার কাছ থেকে তুমি লাভ করবে সুবাস। আর কামারের হাঁপর হয়তো তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে কিংবা তুমি তার কাছ থেকে পাবে দুর্গন্ধ। (বুখারি, হাদিস : ৫১৩৬)</p> <p>কাজেই গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদনে সঙ্গী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, একজন বিশ্বস্ত সহচর থাকার বিকল্প নেই।</p> <p> </p> <p>গ্রন্থনা : মুফতি কাসেম শরীফ।</p>