ঢাকা, শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ মহররম ১৪৪৭

মাঠের সব নিয়ন্ত্রণ চান ডিসিরা

উবায়দুল্লাহ বাদল
উবায়দুল্লাহ বাদল
শেয়ার
মাঠের সব নিয়ন্ত্রণ চান ডিসিরা

আসন্ন জেলা প্রশাসক সম্মেলনে তিন শতাধিক প্রস্তাব বাস্তবায়নের সুপারিশ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব ও সুপারিশ পাঠানো হয় বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে।

আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনের ডিসি সম্মেলন শুরু হবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওই দিন তেজগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে যুক্ত থাকবেন। বিকেলে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অধিবেশনগুলো শুরু হবে।

মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। তাঁরাই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মাঠ নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।

একজন ডিসি জেলার অন্তত ৩০২টি কমিটির প্রধান। এর পরও মাঠের আরো ক্ষমতা চান তাঁরা।

ডিসিরা নতুন করে যে ক্ষমতা চাইছেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে জেলা পুলিশের এসিআর দেওয়া, কনস্টেবল নিয়োগ কমিটিতে তাঁদের প্রতিনিধি রাখা, ডিসির অধীনে বিশেষ ফোর্স গঠন, অপরাধ ডেটাবেইস ও এনআইডি ডেটাবেইস সার্ভারে ডিসি ও ইউএনওদের প্রবেশাধিকার, উপজেলা পরিষদের কর্মচারী নিয়োগ ও বদলির ক্ষমতা এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের বদলে উপজেলার সরকারি বাসা বরাদ্দের ক্ষমতা।

প্রতিবছর ডিসি সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে ডিসিদের সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় হয়ে থাকে।

এ বছর সংসদ ও স্পিকার না থাকায় অধিবেশন আয়োজনসূচিতে দুটিই এবার থাকছে না বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সরকারের নীতিনির্ধারক ও ডিসিদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনার জন্য প্রতিবছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ডিসিদের পাঠানো প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তাঁরা মাঠ প্রশাসনে আরো ক্ষমতা চান। সব কিছুতে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চান। উপজেলা পরিষদের কর্মচারীদের নিয়োগ ও বদলি ডিসিদের হাতে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন ফরিদপুরের ডিসি মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা।

কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পাশাপাশি কর্মচারীদের জবাবদিহি ও দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করা এবং বদলির মাধ্যমে কর্মচারীদের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। বর্তমানে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয় উপজেলা পরিষদ। গাড়িচালকদের বদলির ক্ষমতা আন্ত উপজেলায় ডিসি এবং আন্ত জেলায় বিভাগীয় কমিশনারদের।

পুলিশের এসিআর নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন একাধিক ডিসি। তাঁরা পুলিশ প্রবিধান ১৯৪৩-এর ৭৫/এ ধারা উল্লেখ করে বলেছেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিবছর জানুয়ারিতে জেলায় কর্মরত পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাজ নিয়ে তাঁর সাধারণ মূল্যায়ন বিভাগীয় কমিশনারের কাছে দেবেন। বিভাগীয় কমিশনার সেই প্রতিবেদনে নিজের মতামত যুক্ত করে তা পাঠাবেন সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের উপপুলিশ মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কাছে।

গাইবান্ধার ডিসি চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ বলেছেন, অনেক আগে থেকেই জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের প্রধান দায়িত্ব। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কার্যক্রমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে মূলত পুলিশ বাহিনীর ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তাদের সার্বিক আচার-আচরণ ও জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিফলিত হয়এমন বার্ষিক প্রতিবেদন বিধানসংবলিত পুলিশ প্রবিধানের ধারাটি কার্যকর নেই। এ কারণে প্রায়ই সরকার ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়।

সাতক্ষীরার ডিসি মোস্তাক আহমেদ প্রস্তাবে লিখেছেন, জেলা পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ডিসি। উপজেলা পর্যায়ে সভাপতি থাকেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ওপর ডিসি ও ইউএনওদের কোনো দাপ্তরিক নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে অনেক ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ে। এ কারণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তাদের কাজ নিয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়টি ডিসি ও ইউএনওদের নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন।

গত ২৫ ডিসেম্বর রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে জনপ্রশাসনের সংস্কারকে ভিন্ন খাতে পরিচালিত করে দেশকে অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে যৌথভাবে যৌথ প্রতিবাদসভা করেন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা। সেখানেও তাঁরা পুলিশের এসিআর দেওয়ার দাবি জানান।

জানা গেছে, সামরিক শাসনকালে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ডিসিদের প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়টি অকার্যকর হয়ে যায়। এটি চালু করা নিয়ে পুলিশের আপত্তি রয়েছে। জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ডিসি। প্রতি মাসে কমিটির সভা হয়। তবে সেখানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যান না জেলার এসপি। তাঁর বদলে নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করেন, জেলা প্রশাসন নির্বাহী বিভাগের অধীন, পুলিশও তেমন। একটি নির্বাহী বিভাগ কেন আরেকটি নির্বাহী বিভাগের কাছে জবাবদিহি করবে। এই জবাবদিহি হওয়া উচিত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি অথবা বিচার বিভাগের কাছে।

পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগ কমিটিতে ডিসির প্রতিনিধি রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন অন্তত দুজন ডিসি। মাগুরার ডিসি অহিদুল ইসলাম বলেছেন, নিয়োগটি স্থানীয়ভাবে হয়ে থাকে। তাই সেই নিয়োগে ডিসির প্রতিনিধি থাকলে নিয়োগপ্রক্রিয়া অধিকতর স্বচ্ছ, ফলপ্রসূ ও গ্রহণযোগ্য হবে। এ ছাড়া পিআরবি ও ১৯৪৩ সালের পরিদর্শক ও এর নিচের পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যের সক্ষমতা ও পারফরম্যান্স দেখার দায়িত্ব জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের এখতিয়ারভুক্ত। একই ব্যাখ্যা তুলে ধরে প্রস্তাব করেছেন মানিকগঞ্জের ডিসি ড. মনোয়ার হোসেন মোল্লা।

ডিসির অধীনে বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি বিশেষ ডিটেক্টিভ ফোর্স গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন মাগুরার ডিসি অহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ধরনের ফোর্স থাকলে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান, মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে সুরক্ষা পাওয়া যাবে। এ ধরনের তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণে বিদ্যমান বিভিন্ন বাহিনীর সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে  প্রস্তুতি নিতে সময়ক্ষেপণ হয়।

তিনি অপরাধ ডেটাবেইস ও এনআইডি ডেটাবেইস সার্ভারে ডিসি ও ইউএনওদের প্রবেশাধিকারের প্রস্তাব করেছেন। কারণ হিসেবে বলেছেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলাসংক্রান্ত কমিটির সভাপতি ডিসি ও ইউএনওরা। তাঁদের এ ক্ষমতা দেওয়া হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

ইউএনওদের বাসভবন ও শারীরিক নিরাপত্তায় অঙ্গীভুত আনসারের বদলে সার্বক্ষণিক ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য নিয়োগের প্রস্তাব করেছেন মাগুরার ডিসি।

উপজেলার সরকারি বাসা বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা কমিটি পুনর্গঠন করার প্রস্তাব করেছেন পিরোজপুরের ডিসি মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান। তিনি বলেছেন, বর্তমানে সরকারি বাসা বরাদ্দ কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান ও সদস্যসচিব উপজেলা প্রকৌশলী। উপজেলায় বিদ্যমান সরকারি বাসা-বাড়ি ও ভবনাদি ব্যবস্থাপনা টেকসইভাবে কার্যকর করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিলে কার্যক্রম বেগবান হবে।

এ ছাড়া জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কিছু প্রস্তাবও দিয়েছেন অনেক ডিসি। পুলিশের হাতে চায়নিজ রাইফেল, সাব-মেশিনগান (এসএমজি), ৯ এমএম পিস্তলের মতো প্রাণঘাতী অস্ত্র না রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন সিলেটের ডিসি মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। তিনি বলেন, জনবিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রাণঘাতী অস্ত্র ও ছররা গুলি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, ছররা গুলিও মানবদেহে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কর্তব্যরত অবস্থায় বাধ্যতামূলকভাবে তাদের বডি ক্যামেরা ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রস্তাব দিয়েছেন সিলেটের ডিসি। এ ছাড়া সার্কিট হাউস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও ডিসির বাসভবনকে কেপিআই (কী পয়েন্ট ইনস্টলেশন) ঘোষণা করা এবং সে অনুযায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বগুড়ায় সিটি করপোরেশন করা ও উড়োজাহাজের বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালুর সুপারিশ করেছেন সেখানকার ডিসি হোসনা আফরোজা।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ আজ

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে আজ বৃহস্পতিবার। দুপুর ২টা থেকে যেকোনো মোবাইলে এসএমএস, শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফল জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এই ফল প্রকাশের মাধ্যমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৯ লাখ শিক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান হবে।

এ বছর আগের মতো ফলাফল প্রকাশের কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না।

তবে আন্ত শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে দুপুর ২টায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের কাছে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার গতকাল বলেছেন, এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তরে আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না। দুই মাসের কম সময়ের মধ্যেই সব বোর্ডের ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। সব বোর্ড নিজেদের মতো করে ফল প্রকাশ করবে।

 

যেভাবে জানা যাবে ফল : যেকোনো মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানতে মোবাইলের এসএমএস অপশনে গিয়ে ঝঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে পরীক্ষার বছর লিখে তা ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।

দাখিলের ফল পেতে উধশযরষ লিখে স্পেস দিয়ে গধফ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে ঝঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে ঞবপ লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৫ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।

শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইট  http://www.educationboardresults.gov.bd -এর মাধ্যমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল জানা যাবে। আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জানিয়েছে, ওয়েবসাইটে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, পরীক্ষার নাম, বছর ইনপুট দিয়ে ও শিক্ষা বোর্ড সিলেক্ট করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে ফল জানা যাবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী। দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয় দুই লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন।

ফল প্রকাশের পর তা পুনর্নিরীক্ষণের সময়ও জানিয়েছে আন্ত শিক্ষা বোর্ড। ১১ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আবেদন পদ্ধতি শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট এবং টেলিটক বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে আজ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

 

মন্তব্য
ভারতীয় জেনারেলের দাবি

চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের জোট ভারতের নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের জোট ভারতের নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে

ভারতের প্রতিরক্ষা সর্বাধিনায়ক (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান বলেছেন, চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নিজেদের স্বার্থে একে অন্যের প্রতি ঝুঁকছে। এই ঘনিষ্ঠতা ভারতের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। গত মঙ্গলবার ভারতের চিন্তক প্রতিষ্ঠান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অনিল চৌহান এ কথাগুলো বলেন।

জেনারেল চৌহান বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংকট বহিরাগত শক্তিদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিচ্ছে।

ঋণ-কূটনীতির সাহায্যে প্রভাব বিস্তারের মধ্য দিয়ে তারা ভারতের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। পাশাপাশি ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন এবং সেই সঙ্গে তাদের আদর্শচ্যুতি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।

জেনারেল চৌহান বলেন, এই প্রবণতা ভারতের জন্য বড় এক সমস্যা। সম্প্রতি চীনের কর্মকর্তারা সে দেশে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন।

তিনটি দেশই নিজেদের স্বার্থে একে অন্যের কাছাকাছি আসছে। এই নৈকট্য ভারতের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে তাঁর ধারণা।

চীন ও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা বহু পুরনো। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদল, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগ এবং তাঁর ভারতে আশ্রয়লাভ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

এই পরিস্থিতিতে চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের কাছাকাছি আসা জেনারেল চৌহানকে সন্দিহান করে তুলেছে। তিনি মনে করছেন, এই তিন দেশের ঘনিষ্ঠতা ভারতের চিন্তা বাড়াতে পারে। স্থিতিশীলতার পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে।

অনুষ্ঠানে সিডিএস জেনারেল চৌহানকে পাকিস্তান-ভারত সাম্প্রতিক সংঘাতের সময় চীনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ওই সংঘাতে পাকিস্তানকে চীন কতটা ও কিভাবে সমর্থন দিয়েছে, সহায়তা করেছে, তা বলা খুবই কঠিন।

ওই সংঘাতের সময় উত্তর সীমান্তে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি।

জেনারেল চৌহান বলেন, তবে ঘটনা হলো পাকিস্তান তাদের প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বেশির ভাগটাই চীন থেকে নেয়। সে কারণে পাকিস্তানে চীনের উপস্থিতি থাকার কথা। বিশেষ করে সংঘাত ও সংঘর্ষের সময়। সেটা কতটা ছিল এবং সমর্থন বা সহায়তার চরিত্র কেমন ছিল, তা বলা সহজ নয়।

অপারেশন সিন্দূর নাম দিয়ে পাকিস্তানে হামলার প্রসঙ্গে ভারতের উপসেনাপ্রধান লে. জেনারেল রাহুল আর সিং অবশ্য গত শুক্রবার বলেছিলেন, সংঘাতের সময় পাকিস্তানকে চীন শুধু সাহায্যই করেনি, সংক্ষিপ্ত ওই যুদ্ধকে তারা তাদের অস্ত্রের পরীক্ষাগার করে তুলেছিল।

ওই কর্মকর্তার দাবি, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ওই যুদ্ধে যেসব অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেগুলোর ৮১ শতাংশই চীনের তৈরি। সেসব অস্ত্র প্রকৃত যুদ্ধের সময় কতটা কার্যকর, সে পরীক্ষাও চীন করে ফেলেছে। ওই সংঘাতকে চীন তার অস্ত্রসম্ভারের পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করেছে। সূত্র : ডেকান হেরাল্ড

 

 

মন্তব্য
গণ-অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন

বিচার আইসিসিতে পাঠানোর অনুরোধ অ্যামনেস্টিরf

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
বিচার আইসিসিতে পাঠানোর অনুরোধ অ্যামনেস্টিরf

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনা আইসিসিতে পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটেনভিত্তিক এই মানবাধিকার সংগঠন।

গতকাল বুধবার সংগঠনটির সাউথ এশিয়া বিষয়ক ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসংক্রান্ত একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনার বিচার রোম সনদের ১৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

গতকাল বুধবার ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারীদের ওপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি গুলির নির্দেশের একটি ফোনকল নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত সব অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

এর আগে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের একটি তথ্য-উপাত্তভিত্তিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে আন্দোলন চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত ধাতব পেলেটযুক্ত অস্ত্রের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।

এ ছাড়া হাজার হাজার মানুষ গুরুতর ও স্থায়ীভাবে আহত হয়েছেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের ব্যবস্থা করা এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে একটি ন্যায্য বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সব অপরাধীকে জবাবদিহির আওতায় আনা।

 

 

মন্তব্য

সরকারের উদ্যোগেই জুলাই ঘোষণাপত্র, ইতিবাচক বিএনপি

    দায়িত্বে আছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা দু-এক দিনের মধ্যে মতামত জানাবে বিএনপি
হাসান শিপলু
হাসান শিপলু
শেয়ার
সরকারের উদ্যোগেই জুলাই ঘোষণাপত্র, ইতিবাচক বিএনপি

ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে আবার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে প্রধান কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চাপের মুখে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।

এর আগে কয়েক দফা ঘোষণাপত্র দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি।

তবে এবারের উদ্যোগকে বিএনপি বেশ ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও মনে করছেন, এ বিষয়ে দ্রুত একটি ঐকমত্য হওয়া প্রয়োজন।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া সম্প্রতি তাদের দলের একজন শীর্ষ নেতার কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত দুই দিন দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা হয়।

ঘোষণাপত্রটি কার্যকরের সময়কালসহ কয়েকটি বিষয়ে বিএনপির দ্বিমত আছে।

ঘোষণাপত্রে ১৯৭২ সালের সংবিধান উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় সংশোধন, পুনর্লিখন বা প্রয়োজনে বাতিল করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করার কথা বলা আছে। এ বিষয়ে বিএনপির আপত্তি রয়েছে। দলটি পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধনের পক্ষে থাকলেও সংবিধান বাতিল করে তা পুনর্লিখনের বিপক্ষে।

সরকারসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে ঘোষণাপত্রের খসড়া প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিএনপির একজন শীর্ষ নেতার কথা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, এ নিয়ে অগ্রগতি হচ্ছে। খসড়া ঘোষণাপত্র তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এ যৌথ প্রচেষ্টার জন্য আরো মতামত দরকার, যাতে এটি ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হয় এবং জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।

সরকারের পক্ষ থেকে একটি খসড়া ঘোষণাপত্র পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, সরকারের খসড়া ঘোষণাপত্রের ওপর ভিত্তি করে গত ফেব্রুয়ারিতে আমরা মতামত দিয়েছিলাম। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আর যোগাযোগ করা হয়নি। এখন আবার একটি খসড়া দেওয়া হয়েছে। আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে মতামত জানাব।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর গণ-অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হঠাৎ করে এই ঘোষণাপত্রের বিষয়টি সামনে আনে। তখন এর প্রভাব কী হতে পারে, তা বুঝতে চাইছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ঘোষণাপত্রের পক্ষে-বিপক্ষে তর্কবিতর্কের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিতে এক ধরনের উত্তাপ তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে সরকার থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সরকার সর্বদলীয় বৈঠক করে, কিন্তু তাতে ঐকমত্য হয়নি। ওই সময় বিএনপি এত দিন পর ঘোষণাপত্রের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই ইস্যুতে সরকারের কার্যক্রম ধীরগতিতে চলতে থাকে।

সম্প্রতি এনসিপি জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আবার সরব হয়ে ওঠে। গত ৪ জুলাই দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঠাকুরগাঁওয়ে এক পথসভায় এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জুলাই-আগস্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি এও বলেন, এই ঘোষণাপত্রের সাংবিধানিক ভিত্তি থাকবে। অন্যথায় তাঁদের পক্ষ থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে বলে সরকারকে সতর্ক করেন নাহিদ। 

সরকারসংশ্লিষ্ট একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলেন, ঘোষণাপত্রের মূল অংশীজন হলো বিএনপি ও এনসিপি। তাদের মধ্যে ঐকমত্য হলে দ্রুত ঘোষণাপত্র দেওয়া যাবে।

ঘোষণাপত্রে উল্লেখযোগ্য যা আছে : খসড়া ঘোষণাপত্রে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিষয় তুলে ধরা হয়। কোন পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়, সে বিষয়টিও উঠে আসে। 

এতে ১৯৭২ সালের সংবিধানের কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপপ্রয়োগের কথাও বলা হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থতা এবং গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকারিতা ক্ষুণ্ন করার কথাও তুলে ধরা হয়। 

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকার সাংবিধানিকভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে মত প্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করার ফলে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লব সংগঠিত হয় এবং পরবর্তী সময়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র, মত প্রকাশ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাা পুনঃপ্রবর্তনের পথ সুগম হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন নীতিনির্ধারক কালের কণ্ঠকে বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর সিপাহি-জনতার বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আবার ওয়ান-ইলেভেনের ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। মূলত তখন থেকে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতা, আধিপত্য ও কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদের পথ সুগম হয়। এই বিষয়গুলো যুক্ত করার ফলে ঘোষণাপত্র বেশ সমৃদ্ধ হয়েছে।

খসড়ায় স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের বিরুদ্ধে জনতার অবিরাম সংগ্রাম এবং এর মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থান এবং পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ সৃষ্টির বিষয়টিও উঠে আসে।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ধারাবাহিক তিনটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।

তবে বিএনপি নেতাদের কয়েকজন ২০০৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনকেও এর সঙ্গে যুক্ত করার পরামর্শ দেন দলীয় ফোরামে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে বলা হয়, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বলে প্রদত্ত সুপ্রিম কোর্টের মতামত অনুসারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকার অনুমোদিত হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা : গত মঙ্গলবার এবং গতকাল বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে খসড়া ঘোষণাপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করে কিছুটা সংযোজন-বিয়োজন করে বিএনপি তাদের মতামত দিয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিএনপি এ বিষয়ে তাদের মতামত সরকারকে জানাবে।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

 

আরো যেসব বিষয়ে আলোচনা : মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক আরোপ, নারী আসন, নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিসহ সংস্কারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি। একই সঙ্গে এই শুল্কনীতি পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

জানা গেছে, বৈঠকে সংস্কার ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের প্রতিবেদন তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন আহমদ। এরপর সংস্কারের বিভিন্ন ইস্যুতে মতামত দেন বিএনপি নেতারা। ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এর মধ্যে সংসদে নারীদের আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার ব্যাপারে রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়েছে। তবে তাঁরা কিভাবে নির্বাচিত হবেন, সে ব্যাপারে এখনো ঐকমত্য হয়নি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, তাঁরা প্রচলিত পদ্ধতিতে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নির্বাচিত করার পক্ষে অবস্থান নেবেন। পাশাপাশি কোনোভাবেই পিআর পদ্ধতি মানবেন না তাঁরা।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ