<p>কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার শ্রীকাইলে নতুন একটি গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে রাষ্ট্রীয় তেল গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। গত মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বাপেক্স জানিয়েছে, এ গ্যাসক্ষেত্র থেকে দৈনিক ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে। মঙ্গলবার রাত থেকেই কূপ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু করা হয়েছে। পরবর্তী ৩৬ ঘণ্টা এ পরীক্ষামূলক উত্তোলন চলবে।</p> <p>এ ক্ষেত্রের গ্যাস উত্তোলনের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে তিন হাজার ৬৫ মিটার গভীর কূপ খনন করা হয়। এর কাছাকাছি শ্রীকাইলে একটি প্রসেস প্ল্যান্ট রয়েছে। এ কারণে শুধু ১০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করে এখান থেকে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।</p> <p>খননবিদ মোছাদ্দেক হক বলেন, ‘অনুসন্ধান কূপ শ্রীকাইল ইস্ট-১ প্রকল্পটিতে ২০১৯ সালের অক্টোবরে কাজ শুরু করে গত জানুয়ারিতে শেষ করেছি। তিন কিলোমিটার গভীরে খনন করেছি। সরকারের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কারণে দ্রুত অনেক কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে। কিছু কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। খুব অল্প সময়ে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।’</p> <p>প্রায় দুই বছর পর দেশে নতুন কোনো গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গেল। এখন গ্যাস উত্তোলন উপযোগী করতে ক্ষেত্রে গ্যাসের পরিমাণ, গ্যাসের সঙ্গে পানির পরিমাণ এবং গ্যাসের চাপ পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলছে।</p> <p>আগামী কয়েক দিন এ পরীক্ষা চালিয়ে উত্তোলনের কাজ হাতে নেওয়া হবে। নতুন এ ক্ষেত্রে বর্তমানে গ্যাসের চাপ দুই হাজার পিএসআর, যা অন্যান্য ক্ষেত্রের তুলনায় বেশি বলে জানানো হয়েছে।</p> <p>শ্রীকাইল পূর্ব-১ গ্যাসক্ষেত্রের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুহাম্মদ কবীর জানান, মঙ্গলবার রাতে কূপের পাইপের মুখে আগুন দিয়ে এর চাপ পরীক্ষা করা হয়। ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত চাপ পরীক্ষা করা হবে। </p> <p>বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক (ভূতত্ত্ব) মো. আলমগীর হোসেন জানান, ‘মাটির নিচে প্রায় তিন হাজার ৮০ মিটার গভীরে গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। গ্যাসের রিজার্ভ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। কূপ থেকে দৈনিক ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’</p> <p>প্রসঙ্গত, মুরাদনগরে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র বাখরাবাদ, বাঙ্গরা ও শ্রীকাইল (মুকলিশপুর) থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। মুরাদনগরের  ‘আমাদের গ্যাস আমাদের অধিকার’ আন্দোলনের মুখপাত্র অ্যাডভোকেট এইচ টি আহম্মেদ ফয়সাল বলেন, মুরাদনগরের মানুষ গ্যাস চায়। লক্ষাধিক লোকের স্বাক্ষরসহ এসংক্রান্ত দাবিনামা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা করা আছে। আমরা নিজেদের এলাকায় গ্যাস পাওয়ার এখনো কোনো সুফল পাচ্ছি না। আমাদের দাবি, অবিলম্বে মুরাদনগরের প্রতিটি ঘরে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হোক।’ </p> <p>নবীনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘মুজিববর্ষে এটা আমাদের জন্য প্রকৃতির অনন্য সেরা উপহার। আমরা খুব খুশি। আশা করছি, এ কূপ থেকে উত্তোলিত গ্যাসের সুবিধা নবীনগরের মানুষ পাবে। এখান থেকে নবীনগরে গ্যাস দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করছি।’</p>