<p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"><span style="letter-spacing:.1pt">চিরুনি হচ্ছে একাধিক দাঁতযুক্ত একটি কঠিন বস্তু, যা চুল বা অন্য কোনো আঁশজাতীয় তন্তু সোজা করে বা পরিষ্কার করে আঁচড়ানোর উপকরণ। চিরুনি যত দিন মানুষের হাতে আসেনি, তত দিন জটাধারী মানুষের সংখ্যা বেশি ছিল, সন্দেহ নেই। চিরুনির অভাবে প্রাচীন মানুষের মাথায় পোকা জন্মে রোগ হতো এবং মৃত্যুও ঘটত। বর্তমানে সাজগোজের অতি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো চিরুনি। প্রস্তর যুগেই মানুষ চিরুনির ব্যবহার শিখেছিল। ওই সময় শক্ত উপাদান দিয়ে মানুষ যেসব দ্রব্য তৈরি করত, তার মধ্যে অন্যতম ছিল নিজের চুল পরিষ্কার রাখার এই চিরুনি। </span></span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p style="text-indent:.2in"><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঐতিহাসিকদের মতে, প্রথম চিরুনি তৈরি করেছিল মিসরীয়রা। খ্রিস্টপূর্ব ৫৫০০ অব্দে প্রাচীন মিসরের মানুষের মধ্যে চিরুনির ব্যবহার প্রচলন ছিল। সেই সময় বেশির ভাগ চিরুনি ছিল পাথরের তৈরি। পরে বিভিন্ন প্রাণীর হাড় থেকে মিসরীয়রা চিরুনি বানানো শিখে নেয়। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p style="text-indent:.2in"><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দে সুইডেনে চিরুনি তৈরি হয়েছিল বলে মত দিয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। পাথর ও বিভিন্ন প্রাণীর হাড়ের পাশাপাশি সুইডেনে টিন, রুপা ও তামা-দস্তার সমন্বয়ে গঠিত এক ধরনের ধাতু থেকে তৈরি করা হতো চিরুনি। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p style="text-indent:.2in"><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মধ্যযুগে এসে চিরুনি তৈরিতে একটি বড় ধরনের বিপ্লব সংঘটিত হয়। এ সময় চিরুনি তৈরিতে হরিণ ও অন্যান্য গবাদি পশুর শিং দিয়ে তৈরি বিশেষ এক ধরনের পদার্থ আবিষ্কৃত হয়। কচ্ছপের শক্ত খোলটিও এই বিশেষ পদার্থ তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। শিং ও কচ্ছপের খোল গলিয়ে ওই বিশেষ পদার্থ প্রস্তুত করে বিভিন্ন আকারের চিরুনি সে সময় তৈরি করা হতো। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p style="text-indent:.2in"><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অষ্টাদশ শতাব্দীতে কলকাতা ও ঢাকায় পশুর হাড় থেকে সামগ্রী তৈরির কারিগররা চিরুনি বানাত। কিন্তু তখনো চিরুনি শিল্প হিসেবে উঠে আসেনি। ১৮২৪ সালে ব্রিটিশ রসায়নবিদ লাইন সাহেব ইংল্যান্ডে রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে চিরুনি তৈরি করেন। সেই চিরুনি উনিশ শতকের মাঝামাঝি অবিভক্ত ভারতে আসে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p style="text-indent:.2in"><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উনিশ শতকের শেষ দিকে ইসাইয়াহ ও জন হায়াত নামের দুই ভাই প্রাকৃতিক উপাদানের বদলে কৃত্রিম উপাদান দিয়ে চিরুনি তৈরির উপায় আবিষ্কার করেন। তাঁদের উদ্ভাবিত সেলুলয়েড চিরুনির ইতিহাস বদলে দেয়। সেলুলয়েড চিরুনিকে করে তোলে সস্তা। সেই সঙ্গে নিয়ে আসে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p style="text-indent:.2in"><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বর্তমানে প্লাস্টিকের চিরুনি বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া চিরুনির আকার ও ধরন ভেদে নরমাল চিরুনি, বোর ব্রিস</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‌</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ল ব্রাশ, চওড়া দাঁতযুক্ত চিরুনি, কুইল ব্রাশ, পিন ব্রাশ, প্যাডল ব্রাশ প্রভৃতি নামে বাজারে চিরুনি পাওয়া যায়।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p style="text-indent:.2in"><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল</span></span></span></b></span></span></span></span></span></p> <p> </p>