<h3><strong>অনুধাবনমূলক প্রশ্ন</strong></h3> <p> </p> <p>১।        পারদ থার্মোমিটারে পারদের পরিবর্তে পানি ব্যবহার করলে কী কী অসুবিধা হতে পারে?</p> <p>            উত্তর : থার্মোমিটারে পারদের পরিবর্তে পানি ব্যবহার করলে নিম্নোক্ত অসুবিধা হতে পারে—</p> <p>            পানির তাপ প্রসারণ সহগ পারদের তুলনায় অনেক কম। তাই সমান পরিমাণ তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে পারদ অপেক্ষা পানিতে প্রসারণ সহগ তেমন একটি হবে না বললেই চলে। আর পানি নলের গায়ে লেগে থাকে কিন্তু পারদ লেগে থাকে না। এ কারণে পানির ক্ষেত্রে তাপমাত্রা বৃদ্ধি বুঝতে সমস্যা হবে।</p> <p>২।         বন্দুকের গুলি লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করলে গুলি ও লক্ষ্যবস্তু গরম হয় কেন?</p> <p>            উত্তর : গুলি যখন গতিশক্তি নিয়ে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করে, তখন লক্ষ্যবস্তু দ্বারা গুলি বাধা প্রাপ্ত হয়। ফলে গুলির গতিশক্তির কিছু অংশ তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয় বিধায় গুলি ও লক্ষ্যবস্তু গরম হয়।</p> <p>৩।        জলপ্রপাতের পানি ওপর থেকে নিচে পড়লে নিচের পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় কেন?</p> <p>            উত্তর : জলপ্রপাতের ওপরে পানির স্থিতিশক্তি নিচে থাকায় পানির স্থিতিশক্তি অপেক্ষাকৃত বেশি। ওপরের পানি যখন নিচে পড়ে, তখন পানির এই স্থিতিশক্তি গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হতে থাকে। ভূপৃষ্ঠ স্পর্শ করার মুহূর্তে পানির এই গতিশক্তির কিছু অংশ তাপশক্তি ও শব্দশক্তিতে রূপান্তরিত হয় বিধায় তাপশক্তি অর্জনের জন্যই নিচের পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।</p> <p>৪।        রূদ্ধতাপ প্রক্রিয়ায় গ্যাসকে সংনমিত এবং প্রসারিত করলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হ্রাস পায় কেন? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>            উত্তর : রূদ্ধতাপ প্রক্রিয়ায় গ্যাসকে দ্রুত সংকুচিত বা প্রসারিত করলে তাপের উদ্ভব বা শোষণ হয়। এতে গ্যাসের তথা সিস্টেমের তাপমাত্রা বেড়ে বা কমে যায়। যদি দ্রুত সংকোচন ও প্রসারণ করা না হতো, তবে উৎপন্ন তাপ পরিবেশে চলে যেত অথবা পরিবেশ থেকে তাপ সিস্টেমে প্রবেশ করত। কেননা কোনো সিস্টেমই আদর্শরূপে পরিবেশ থেকে তাপীয়ভাবে বিচ্ছিন্ন নয়, এ কারণে রূদ্ধতাপ প্রক্রিয়ায় গ্যাসকে দ্রুত সংকোচন ও প্রসারণ করা হয়।</p> <p>৫।  মোটরগাড়ির টায়ার ফাটলে ঠাণ্ডা বাতাস বের হয় কেন?</p> <p>            উত্তর : মোটরগাড়ির টায়ার ফাটলে এর ভেতরের বাতাস খুব দ্রুত প্রসারিত হয় এবং বাইরের পরিবেশের সঙ্গে তাপের আদান-প্রদান করতে পারে না বলে প্রক্রিয়াটি রূদ্ধতাপ প্রসারণ প্রক্রিয়া। রূদ্ধতাপ প্রসারণ প্রক্রিয়ায় সিস্টেমের অন্তঃস্থ শক্তি হ্রাস পায় বিধায় টায়ারের ভেতরের বাতাস ঠাণ্ডা হয়। এ কারণে মোটরগাড়ির টায়ার ফাটলে ঠাণ্ডা বাতাস বের হয়।</p> <p>৬।        কার্নোচক্র একটি প্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়া—ব্যাখ্যা করো।</p> <p>            উত্তর : কোনো চক্র প্রত্যাবর্তী হতে যেসব বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার কার্নোর আদর্শ ইঞ্জিনে সেগুলো রয়েছে। যেমন—(ক) পিস্টন ও সিলিন্ডারের মধ্যে কোনো ঘর্ষণ নেই। (খ) কার্যকরী পদার্থ (গ্যাস) এর ওপর প্রযুক্ত প্রক্রিয়াগুলো খুব আস্তে আস্তে সংঘটিত হয়। (গ) পিস্টন ও সিলিন্ডার আদর্শ তাপ নিরোধক বা অন্তরক এবং আদর্শ তাপ পরিবাহী ব্যবহার করা হয়, যাতে উৎস ও তাপ গামলা অতি উচ্চতাপ গ্রহীতা যুক্ত হয়, যেন সমোষ্ণ প্রক্রিয়াগুলো স্থির তাপমাত্রায় সংঘটিত।</p> <p>৭।        রেফ্রিজারেটরের দরজা খোলা থাকলে ঘরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় কেন?</p> <p>            উত্তর : দরজা খোলা থাকায় ঘরের গরম বাতাস রেফ্রিজারেটরের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং শীতলীকরণ প্রকোষ্ঠের অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা বাতাসও ঘরময় প্রবাহিত হয়। রেফ্রিজারেটরের কম্প্রেসার চালু থাকায় তড়িৎ শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে এবং পরে তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে ঘরের মধ্যে থেকে যাবে। তখন ঘরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে।</p> <p>৮।       রেফ্রিজারেটর তাপ ইঞ্জিনের একটি বিপরীত যন্ত্র—ব্যাখ্যা করো।</p> <p>            উত্তর : তাপ ইঞ্জিন উচ্চ তাপমাত্রার তাপের উৎস থেকে তাপ গ্রহণ করে কার্য সম্পাদন করে এবং অপেক্ষাকৃত নিম্ন তাপমাত্রার তাপ গ্রাহকে বর্জন করে। পক্ষান্তরে রেফ্রিজারেটর নিম্ন তাপমাত্রার উৎস থেকে তাপ গ্রহণ করে এবং উচ্চ তাপমাত্রার আধারে বর্জন করে। সে কারণে রেফ্রিজারেটর তাপ ইঞ্জিনের একটি বিপরীত যন্ত্র।</p> <p> </p> <p>৯।        একই তাপমাত্রায় এবং ভিন্ন উপাদানবিশিষ্ট পরিবাহীর আপেক্ষিক রোধ ভিন্ন হয়—ব্যাখ্যা করো।</p> <p>            উত্তর : আপেক্ষিক রোধ হয় পরিবাহীর উপাদানের। একই তাপমাত্রায় একই উপাদানের তৈরি সব পরিবাহীর আপেক্ষিক রোধ একই; কিন্তু একই দৈর্ঘ্য ও একই প্রস্থচ্ছেদের ভিন্ন উপাদানের দুটি পরিবাহীর বিদ্যুৎ প্রবাহে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা ভিন্ন। এ কারণে তাদের আপেক্ষিক রোধও ভিন্ন হয়।</p> <p>১০।      তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে পরিবাহীর পরিবাহিতা হ্রাস পায়—ব্যাখ্যা করো।</p> <p>            উত্তর : তাপমাত্রা (উষ্ণতা) বৃদ্ধি পেলে পরিবাহীর রোধ বৃদ্ধি পায় এবং প্রবাহমাত্রা কমে যায় তথা পরিবাহিতা হ্রাস পায়। যেমন—তামা, অ্যালুমিনিয়াম, সিলভার ইত্যাদি। কারণ তাপমাত্রা (উষ্ণতা) বৃদ্ধি পেলে প্রবাহ সৃষ্টিকারী মুক্ত ইলেকট্রনগুলোর সঙ্গে ধাতব পরিবাহীর কেলাসস্থিত কম্পনরত অণুগুলোর সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা কমে যায়। ফলে পরিবাহীর প্রবাহমাত্রা কমে যায় তথা পরিবাহীর পরিবাহিতা হ্রাস পায় এবং রোধ বৃদ্ধি পায়।</p> <p>১১।      তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে অর্ধপরিবাহীর রোধ হ্রাস পায় তথা পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায় কেন?</p> <p>            উত্তর : তাপমাত্রা (উষ্ণতা) বৃদ্ধি পেলে অর্ধপরিবাহীর রোধ বৃদ্ধি পায় এবং প্রবাহমাত্রা বেড়ে যায় তথা পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায়। যেমন—জার্মেনিয়াম, সিলিকন, কার্বন ইত্যাদি। কারণ তাপমাত্রা (উষ্ণতা) বৃদ্ধি পেলে প্রবাহ সৃষ্টিকারী মুক্ত ইলেকট্রনগুলোর সঙ্গে ধাতব পরিবাহীর কেলাসস্থিত কম্পনরত অণুগুলোর সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যাও বেড়ে যায়। ফলে অর্ধপরিবাহীর প্রবাহমাত্রা বেড়ে যায় তথা অর্ধপরিবাহীর পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায় এবং রোধ হ্রাস পায়।</p> <p>১২। পরিবাহীতে তড়িৎ বা বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে তাপ উৎপন্ন হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।</p> <p>            উত্তর : পরিবাহীতে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে তাপ উৎপত্তির কারণ ইলেকট্রন মতবাদের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা যায়। আমরা জানি, পরিবাহী তার পরমাণুর মুক্ত ইলেকট্রনের গতি দ্বারা বিদ্যুৎ পরিবহন করে। গতির ফলে ইলেকট্রনগুলো পরস্পরের সঙ্গে এবং পদার্থের পরমাণুর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই সংঘর্ষের কারণেই ইলেকট্রনের গতিশক্তির কিছু অংশ তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং পরিবাহী উত্তপ্ত হয়। এই কারণে পরিবাহিতে তড়িৎ বা বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে তাপ উৎপন্ন হয়।</p> <p>১৩।      কার্শফের প্রথম সূত্র চার্জের সংরক্ষণ নীতি মেনে চলে—ব্যাখ্যা করো।</p> <p>            উত্তর : কার্শফের প্রথম সূত্রের ক্ষেত্রে ভৌত রাশি চার্জ সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু বর্তনীর কোথাও চার্জ সঞ্চিত থাকে না। তাই কার্শফের প্রথম সূত্রটি চার্জ সংরক্ষণশীলতার নীতি মেনে চলে।</p> <p>১৪।      কার্শফের দ্বিতীয় সূত্র শক্তির সংরক্ষণশীলতার নীতি মেনে চলে—ব্যাখ্যা করো।</p> <p>            উত্তর : কার্শফের দ্বিতীয় সূত্রের ক্ষেত্রে ভৌত রাশি শক্তি সংরক্ষিত থাকে। তাই কার্শফের দ্বিতীয় সূত্র শক্তির সংরক্ষণশীলতার সূত্র মেনে চলে।</p> <p>১৫।      অ্যামিটার এক প্রকার গ্যালভানোমিটার—ব্যাখ্যা দাও।</p> <p>            উত্তর : অ্যামিটার হলো স্বল্প রোধের শান্টযুক্ত চলকুণ্ডলী গ্যালভানোমিটার। কারণ চলকুণ্ডলী গ্যালভানোমিটারের কুণ্ডলীর তলের সমকোণে একটি সূচক বা কাঁটা লাগানো থাকে, যা অ্যামিটার এককে দাগাঙ্কিত একটি স্কেলের ওপর দিয়ে ঘুরতে পারে এবং একটি স্বল্পমানের রোধ (শান্ট) গ্যালভানোমিটার কুণ্ডলীর সঙ্গে সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত করে অ্যামিটার তৈরি করা হয়।</p> <p> </p> <p>১৬।     অ্যামিটারকে তড়িৎ বর্তনীতে শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত করতে হয় কেন?</p> <p>            উত্তর : অ্যামিটারের সঙ্গে শান্ট রোধ যুক্ত থাকায় এর কার্যকর তুল্যরোধ খুব কম হয় বিধায় অ্যামিটারকে যখন বর্তনীতে শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত করা হয়, তখন বর্তনীর মূল প্রবাহের কোনো পরিবর্তন হয় না। এ কারণে অ্যামিটারকে শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত করতে হয়।</p>