সৃজনশীল প্রশ্ন
চিত্র দেখে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

(ক) ‘পৌরনীতি হলো জ্ঞানের সেই মূল্যবান শাখা, যা নাগরিকতার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এবং স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবতার সঙ্গে জড়িত সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে।’—উক্তিটি কার?
(খ) পরিবার কাকে বলে?
(গ) ওপরের ছকে ‘?’ চিহ্ন দ্বারা কোন সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
(ঘ) তুমি কী মনে করো ওই সংগঠনের জন্য জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব অপরিহার্য? তোমার উত্তরের স্পক্ষে যুক্তি দাও।
উত্তর :
(ক) ‘পৌরনীতি হলো জ্ঞানের সেই মূল্যবান শাখা, যা নাগরিকতার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এবং স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবতার সঙ্গে জড়িত সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে।
’ উক্তিটি ই এম হোয়াইটের।
(খ) সমাজ স্বীকৃত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্বামী-স্ত্রীর একত্রে বসবাস করাকে পরিবার বলে।
বৈবাহিক সম্পর্কের ভিত্তিতে এক বা একাধিক পুরুষ ও মহিলা, তাদের সন্তানাদি, মা-বাবা এবং অন্যান্য পরিজন নিয়ে যে সংগঠন গড়ে ওঠে তাকে পরিবার বলে। ম্যাকাইভারের মতে, ‘সন্তান জন্মদান ও লালনপালনের জন্য সংগঠিত ক্ষুদ্র বর্গকে পরিবার বলে।
মূলত পরিবার হলো স্নেহ, মায়া, মমতা, ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গঠিত ক্ষুদ্র সামাজিক প্রতিষ্ঠান।
(গ) উদ্দীপকে ‘?’ চিহ্ন দ্বারা রাষ্ট্র নামের সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে।
রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের মানুষ কোনো না কোনো রাষ্ট্রে বসবাস করে।
অধ্যাপক গার্নার বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট ভূখণ্ডে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী সুসংগঠিত সরকারের প্রতি স্বভাবজাতভাবে আনুগত্যশীল, বহিঃশত্রুর নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত, স্বাধীন জনসমষ্টিকে রাষ্ট্র বলে।’
ওপরের ছকের মাঝখানে একটি খালি ঘরকে কেন্দ্র করে চারপাশে চারটি ঘরে জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সার্বভৌমত্ব ও সরকার—এই চারটি শব্দ লেখা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে রাষ্ট্রের উপাদান। অর্থাৎ এই চারটি উপাদান উপস্থিত থাকলে তাকে রাষ্ট্র বলা যায়। তাই ওপরের ছকের খালি ঘরে রাষ্ট্র শব্দটি যুক্তিযুক্ত।
রাষ্ট্র গঠনের একটি অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে জনসমষ্টি। কোনো ভূখণ্ডে একটি জনগোষ্ঠী স্থায়ীভাবে বসবাস করলেই রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে। তবে রাষ্ট্র গঠনের জন্য কী পরিমাণ জনসংখ্যা প্রয়োজন তার কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই। রাষ্ট্র গঠনের জন্য একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডও থাকতে হবে। ভূখণ্ড বলতে একটি রাষ্ট্রের স্থলভাগ, জলভাগ ও আকাশসীমাকে বোঝায়। রাষ্ট্রের ভূখণ্ড ছোটও হতে পারে, আবার বড়ও হতে পারে। রাষ্ট্রের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে সরকার। রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্যাবলি সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ নিয়ে সরকার গঠিত হয়। রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে সার্বভৌমত্ব। এটি রাষ্ট্রের চরম, পরম ও সর্বোচ্চ ক্ষমতা। সার্বভৌম ক্ষমতাবলে একটি রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের খবরদারি এবং প্রভাব থেকে মুক্ত থাকে। সুতরাং লক্ষ করা যাচ্ছে যে ওপরের ছকে উল্লিখিত চারটি উপাদান নিয়ে একটি রাষ্ট্র গঠিত হয়।
(ঘ) আমি মনে করি, ওই সংগঠন বা রাষ্ট্রের জন্য জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব—এই চারটি উপাদানই অপরিহার্য।
মানুষের জীবন যাপন প্রণালি একটি নির্দিষ্ট নিয়মে পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রের প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, মানব সমাজের শৃঙ্খলা, সুখ, সমৃদ্ধি, ন্যায়বিচার প্রভৃতি নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রের চেয়ে ভালো আর কোনো সংগঠন নেই। আর এ রাষ্ট্র গঠনের জন্য ওপরে উল্লিখিত চারটি উপাদানই অপরিহার্য।
রাষ্ট্র গঠনের জন্য জনসমষ্টি অবশ্যই থাকতে হবে। কেননা জনসমষ্টি না থাকলে রাষ্ট্র অর্থহীন। জনমানবহীন বিরান ভূমিতে রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। কারণ মানুষের জন্যই রাষ্ট্র। আবার জনসমষ্টি থাকলেও তাদের যদি একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ড না থাকে, তাহলেও রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়। কেননা নির্দিষ্ট ভূখণ্ড ছাড়া রাষ্ট্র চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। নির্দিষ্ট ভূখণ্ড না থাকলে তারা যাযাবর জীবন যাপন করে। যাযাবররা কখনো রাষ্ট্র গঠন করতে পারে না। তবে রাষ্ট্র গঠনের জন্য নির্দিষ্ট ভূখণ্ডটি কত বড় হবে তার কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই। রাষ্ট্র গঠনের আরো একটি অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে সরকার। সরকার ছাড়াও রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। কেননা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে জনসমষ্টি থাকা সত্ত্বেও জনসমষ্টিকে একটি নিয়মের মধ্যে পরিচালনার জন্য যদি কোনো প্রতিষ্ঠান না থাকে, তাহলে তারা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়বে। রাষ্ট্র গঠনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে সার্বভৌমত্ব। ওপরে উল্লিখিত তিনটি উপাদান থাকা সত্ত্বেও তাকে রাষ্ট্র বলা যায় না, যদি তার সার্বভৌমত্ব না থাকে। কারণ সার্বভৌম ক্ষমতা না থাকলে তার কোনো স্বাধীনতা থাকে না। আর স্বাধীনতা না থাকলে তাকে রাষ্ট্র বলা যায় না।
ওপরের আলোচনার আলোকে বলা যায় যে জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব—এই চারটি উপাদানের যেকোনো একটি অনুপস্থিত থাকলে তাকে রাষ্ট্র বলা যায় না। সুতরাং রাষ্ট্র গঠনের জন্য এই চারটি উপাদানই অপরিহার্য বা আবশ্যক।
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
১। সিভিটাস শব্দের অর্থ কী?
ক. নগর খ. নগর রাষ্ট্র
গ. রাষ্ট্র ঘ. সমাজ
২। পৃথিবীতে মোট কতটি রাষ্ট্র রয়েছে?
ক. ২০৬টি খ. ২০৭টি
গ. ৪০৭টি ঘ. ৪০৮টি
৩। ‘জ্যা জ্যাক রুশো’ কে?
ক. ফরাসি দার্শনিক
খ. ইটালিয়ান দার্শনিক
গ. মার্কিন দার্শনিক
ঘ. ব্রিটিশ দার্শনিক
৪। নাগরিকতা অর্জনের কয়টি পদ্ধতি রয়েছে?
ক. ১টি খ. ২টি
গ. ৩টি ঘ. ৪টি
৫। অধিকার কত প্রকার?
ক. ২ প্রকার খ. ৩ প্রকার
গ. ৪ প্রকার ঘ. ৫ প্রকার
৬। সুনাগরিকের প্রধান গুণ কয়টি?
ক. ১টি খ. ২টি
গ. ৩টি ঘ. ৪টি
৭। আইনকে প্রধানত কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
ক. ১ ভাগে খ. ২ ভাগে
গ. ৩ ভাগে ঘ. ৪ ভাগে
৮। ‘ল অব দ্য কনস্টিটিউশন’ কার আইন?
ক. অধ্যাপক ডেইজির
খ. ব্যাক স্টোনের
গ. কার্ল মার্কসের
ঘ. হেরোডোটাসের
৯। অর্থনীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্রকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
ক. ১ ভাগে খ. ২ ভাগে
গ. ৩ ভাগে ঘ. ৪ ভাগে
১০। কোন দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার পদ্ধতি বিদ্যমান রয়েছে?
ক. ভারতে খ. বাংলাদেশে
গ. চীনে ঘ. নেপালে
১১। রাষ্ট্রের চালিকাশক্তিকে কী বলা হয়?
ক. ধর্ম খ. প্রথা
গ. সংবিধান ঘ. আইন
১২। ‘ম্যাগনাকার্টা’ কোন সালে প্রণীত হয়?
ক. ১০১০ সালে
খ. ১০১৫ সালে
গ. ১১১৫ সালে
ঘ. ১২১৫ সালে
১৩। বাংলাদেশের সংবিধান কোন সালে প্রণীত হয়?
ক. ১৯৭১ সালে খ. ১৯৭২ সালে
গ. ১৯৭৫ সালে ঘ. ১৯৮০ সালে
১৪। সংশোধনীর ভিত্তিতে সংবিধানকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?
ক. ২ ভাগে খ. ৩ ভাগে
গ. ৪ ভাগে ঘ. ৫ ভাগে
১৫। বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সভাপতি কে ছিলেন?
ক. ড. কামাল হোসেন
খ. ড. মোতাহের হোসেন
গ. আলী আকবর খান
ঘ. সৈয়দা মুর্শিদা হক
১৬। বাংলাদেশ সংসদের মেয়াদ কত বছর?
ক. ৩ বছর খ. ৪ বছর
গ. ৫ বছর ঘ. ৬ বছর
১৭। বাংলাদেশে প্রথম সরকার গঠিত হয় কত সালে?
ক. ১৯৭১ সালে
খ. ১৯৭২ সালে
গ. ১৯৭৩ সালে
ঘ. ১৯৭৪ সালে
১৮। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান কে?
ক. সচিব খ. মন্ত্রী
গ. প্রধানমন্ত্রী ঘ. রাষ্ট্রপতি
১৯। বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোর কেন্দ্রবিন্দু কোনটি?
ক. জেলা খ. মন্ত্রণালয়
গ. সচিবালয় ঘ. উপজেলা
২০। বাংলাদেশে মোট কতটি প্রশাসনিক উপজেলা রয়েছে?
ক. ৪৮৭টি খ. ৪৮৮টি
গ. ৫০০টি ঘ. ৬০০টি
উত্তরগুলো মিলিয়ে নাও
১. খ ২. ক ৩. ক ৪. খ ৫. ক ৬. গ
৭. গ ৮. ক ৯. খ ১০. ক ১১. গ ১২. ঘ ১৩. খ ১৪. ক ১৫. ক ১৬. গ ১৭. ক ১৮. ঘ ১৯. গ ২০. ক