<p>বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক বিনিয়োগ রয়েছে এবং আরো অনেক বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের পাশাপাশি অনেক শিল্পনগরী গড়ে উঠছে। এগুলোতে ক্রমেই বেশি করে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়াও বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিবেশের সুযোগ নিতে আগ্রহী। তিন দিনের সফরে গত শনিবার ঢাকায় আসা দক্ষিণ কোরীয় প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়োনের নেতৃত্বে আসা একটি প্রতিনিধিদল দেশটির এই আগ্রহের কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকেও এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিনিয়োগ, সংস্কৃতি ও কূটনীতির ক্ষেত্রে দুটি সমঝোতা স্মারকসহ (এমওইউ) তিনটি চুক্তি সই হয়। প্রধানমন্ত্রী লি ২০২০ সালে বাংলাদেশকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বৈদেশিক উন্নয়ন সহযোগিতা (ওডিএ) প্রদানে দেশটির সম্মতির কথা জানান। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশি সব পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা প্রদানে বাংলাদেশের প্রস্তাবটি বিবেচনা করা হবে বলেও জানান দক্ষিণ কোরীয় প্রধানমন্ত্রী।</p> <p>দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়ার উন্নত দেশগুলোর একটি। বিভিন্ন দেশে তাদের বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে। বাংলাদেশেও আরএমজি, টেক্সটাইল, লেদারসহ বিভিন্ন খাতে তাদের প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে। আরো বিনিয়োগের ব্যাপারে দেশটি যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাকে অবশ্যই আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে। কোনো দেশে বিদেশি বিনিয়োগের প্রধান শর্তগুলোর অন্যতম বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ অবকাঠামোর উন্নয়ন। বাংলাদেশে গত এক দশকে এসব ক্ষেত্রে বিপুল অগ্রগতি হয়েছে। আর এর ফলেই সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। অনেক দেশ এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করছে। উন্নয়নের এই গতি অব্যাহত থাকলে দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশে বিনিয়োগের যে খরা চলছিল তার অবসান হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক কম্পানি বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিশ্ববাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ আরো বেশি করে আকৃষ্ট করা গেলে দেশে যেমন ব্যাপক হারে কর্মসংস্থান হবে, তেমনি বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে।</p> <p>আমরা আশা করি, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়োনের এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরো গতিশীল ও কার্যকর হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায়ও বাংলাদেশের পাশে থাকার এবং সম্ভাব্য সব সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। তাঁরা আমাদের বিদ্যুৎ, জ্বালানি, তথ্য-প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা আশা করি, অদূর ভবিষ্যতে এই খাতগুলোসহ আরো অনেক খাতেই আমরা দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারব।</p>