প্রচণ্ড তাপদাহের পর দিনভর বৃষ্টিতে স্বস্তি নেমেছে চট্টগ্রামে। এতে করে গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম শহরের তাপমাত্রা কমে গেছে। তবে সকালে বৃষ্টির কারণে নগরীর বেশ কিছু নিচু এলাকায় পানি জমে গেছে। এতে অফিসমুখি যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
চট্টগ্রাম
বৃষ্টিতে গরম কমেছে জলজটে ভোগান্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই বৃষ্টিপাত আগামী শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ফলে প্রতিদিন এই পরিমাণ বৃষ্টি হবে। ফলে তাপমাত্রা আগামী কয়েকদিন সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
সকালে বৃষ্টিপাতের ফলে নগরীর নিচু এলাকা-ষোলশহর, চকবাজার, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ এলাকার অলিগলিতে পানি জমে যায়। এতে কিছু সময়ের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মূলত জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় নগরীর বিভিন্ন খাল পুনরুদ্ধার করে সেগুলো দুইপাড় বেঁধে খননকাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু খননকাজ সম্পন্ন না হওয়ায় অনেক খাল দিয়ে বৃষ্টির পানি স্বাভাবিক গতিতে নেমে যেতে পারছে না।
জানতে চাইলে, নগরীর চকবাজার এলাকার বাসিন্দা জাহেদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বেশি বৃষ্টি হয়নি এরইমধ্যে সকালে বাসা থেকে বের হয়ে দেখি সড়কে পানি জমে গেছে। রিকশা নেই, টেক্সি নেই। ফলে হেঁটে প্রধান সড়কে ওঠতেই বৃষ্টিতে ভিজে একাকার। এরপরও ভয়াবহ গরম থেকে বাঁচা গেল।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ সুমন সাহা বলছেন, এ সময়ে স্বাভাবিক সময়ের মতোই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই বৃষ্টিপাত আরও দুইদিন অব্যাহত থাকবে। তবে দিনের তুলনায় রাতের দিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এখন নগরবাসীর শঙ্কা বৃষ্টিপাত আরো বাড়লে জলজটে ভোগান্তির পরিমাণ আরো বাড়বে।
বন্দরনগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। সেই সময় ধরে নেওয়া প্রকল্পটি ২০২০ সালে শেষ হবে। এরপর সময় বাড়ানো হয়। সে অনুযায়ী, প্রকল্পটি চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন সেটি ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্দর নগরীতে মোট ৫৭টি খাল রয়েছে কিন্তু আমাদের প্রকল্পে ৩৬টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৭৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। অবশিষ্ট ২১টি খাল দিয়ে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহের ব্যবস্থা নেই। আবর্জনা, নিচু কালভার্ট-ব্রিজ ৫৯টি স্থানে বাধা তৈরি করেছে। এগুলো পরিষ্কার রাখা সম্ভব না হলে চট্টগ্রাম শহরকে পুরোপুরি জলাবদ্ধতামুক্ত করা সম্ভব হবে না মনে করছে বাস্তবায়নকারী সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষ।
সম্পর্কিত খবর