<p>ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। তবে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ‘সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে’ বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে, রবিববার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সে হিসেবে এখন পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে।</p> <p>রাষ্ট্রীয় টিভি ইরনা বলছে, ‘প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টারে বেঁচে থাকার বা জীবিত থাকার কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’ ইরানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ‘দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।’  ওই কর্মকর্তা আরো বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট রাইসির হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনায় সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে... দুর্ভাগ্যবশত, সকল যাত্রী নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।’</p> <p>এদিকে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারের দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রেড ক্রিসেন্ট। সোমবার (২০ মে) এক বিবৃতিতে ইরানি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তাদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার দল দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারের সম্ভাব্য দুর্ঘটনাস্থলে ৭৩টি উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে বলে ইরানি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে। সংস্থাটি আরো বলেছে, উদ্ধারকারীরা তুর্কি ড্রোনের মাধ্যমে চিহ্নিত এলাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে রাইসির হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ডিটেক্টর কুকুরসহ ৭৩ টি দল এই উদ্ধার প্রচেষ্টায় জড়িত রয়েছে। তবে বৃষ্টি এবং কুয়াশার জেরে দৃশ্যমানতা হ্রাসের কারণে আবহাওয়ার পরিস্থিতি সেখানে বেশ প্রতিকূল রয়ে গেছে।</p> <p>ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রধান পিরহোসেইন কোলিভান্দ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন উদ্ধারকারীরা অল্প সময়ের মধ্যে ওই জায়গায় পৌঁছে যাবেন। তবে পরিস্থিতি ‘ভালো নয়’। হেলিকপ্টারটি যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল, সেখান থেকে ওই জায়গাটি প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে। ওই ধ্বংসাবশেষে প্রাণের কোনো চিহ্ন নেই।</p> <p>এদিকে রাশিয়া ইরানে একটি উদ্ধারকারী দল পাঠাচ্ছে বলে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। আরআইএ নভোস্তি জানিয়েছে, রাশিয়ার এই দলটিতে ৪৭ জন বিশেষজ্ঞ উদ্ধারকারী, বেশ কয়েকটি যানবাহন যা উঁচু-নিচু ও অসমতল ভূমিতে চলতে পারে এবং একটি হেলিকপ্টার রয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি আরো বলেছে, উদ্ধারকারী এই সরঞ্জামগুলো এখন লোড করা হচ্ছে এবং পরে ইরানের তাবরিজ শহরে সেটি পাঠানো হবে। দুর্ঘটনার আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট এই শহরেই গিয়েছিলেন।</p> <p>ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভকে উদ্ধৃত করে সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘হেলিকপ্টার এবং উদ্ধারকারী দলটির সবাই উচ্চ উচ্চতায় সবচেয়ে কঠিন কাজ করতে প্রস্তুত। কুয়াশাসহ আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনুসন্ধান এবং উদ্ধার অভিযান পুনরায় শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বিশেষজ্ঞরা সেই উদ্ধার প্রচেষ্টায় যোগ দেবেন।’ এ ছাড়া পশ্চিমাঞ্চলীয় পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা অঞ্চলের এই অনুসন্ধান প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য আরও বেশ কয়েকটি দেশ তাদের উদ্ধারকারী দলও পাঠাচ্ছে। সোমবার ভোররাতে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে ধ্বংসাবশেষ শনাক্তের পর ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্য উদ্ধারকারী দলগুলো রাতভর তুষারঝড় এবং কঠিন ভূখণ্ডের সঙ্গে লড়াই করে।</p> <p>স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসি আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে কিজ কালাসি এবং খোদাফারিন বাঁধ দুটি উদ্বোধন করেন। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে ফিরে তিনি ইরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।</p> <p>সূত্র: বিবিসি</p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>