<p>ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ যা প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষকে আক্রান্ত করে। ডেঙ্গু ছড়ানোর প্রধান কারণ হলো এডিস প্রজাতির মশা, বিশেষ করে এডিস ইজিপ্টি এবং এডিস এলবোপিকটাস প্রজাতির স্ত্রী মশা। এই রোগ সাধারণত উপক্রান্তীয় এবং ক্রান্তীয় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়, বিশেষত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকায়।</p> <p>ডেঙ্গু ভাইরাস চারটি প্রধান ধরনের হয়ে থাকে: DEN-1, DEN-2, DEN-3, এবং DEN-4। এই ভাইরাসগুলি একবার মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে ডেঙ্গু জ্বর, ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে। তবে, প্রশ্ন হলো, কেন শুধুমাত্র স্ত্রী মশাই এই ভাইরাস ছড়ানোর জন্য দায়ী?</p> <p>মশার জীবনে রক্ত খাওয়ার প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষ মশা সাধারণত ফুলের রস বা অন্য কোনো মিষ্টি রস খায়।এরা মানুষের রক্ত খায় না। এগুলো স্ত্রী মশাদেরও প্রধান খাবার। কিন্তু স্ত্রী মশারা জীবদ্দশায় প্রচুর ডিম পাড়ে। এজন্য বাড়তি পুষ্টির দরকার হয়। মানুষের রক্তে থাকা প্রোটিন এবং লিপিড ডিম উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন হয়। ডিম উৎপাদনের আগে, স্ত্রী মশাকে অবশ্যই রক্ত খেতে হয় যাতে তারা ডিম উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পায়।</p> <p>যখন স্ত্রী মশা ডেঙ্গু ভাইরাসে সংক্রমিত একজন মানুষের রক্ত খায়, তখন সেই ভাইরাস মশার শরীরে প্রবেশ করে। মশার শরীরে এই ভাইরাস একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বেড়ে ওঠে এবং মশার লালাতে জমা হয়। সেই মশা যখন সুস্থ মানুষকে কামড়ায়, তখন ভাইরা মশার লালা থেকে সেই ব্যক্তির রক্তে প্রবেশ করে। এভাবেই ডেঙ্গু ভাইরাস একজন মানুষ স্ত্রী মশার মাধ্যমে আরেকজন মানুষের মধ্যে ছড়ায়।</p> <p>পুরুষ মশা মানুষের রক্ত খায় না, তাই তারা ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করতে বা ছড়াতে অক্ষম। তাই পুরুষ মশা ডেঙ্গু সংক্রমণে সরাসরি কোনো ভূমিকা রাখে না। পুরুষ মশার প্রধান কাজ হলো স্ত্রী মশার সঙ্গে মিলিত হয়ে প্রজনন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। </p> <p>সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট<br />  </p>